ধীরে সময় এগোতে থাকল আর সাথে উশমিল স্বাভাবিক হতে লাগল।ইউনিভার্সিটিতে যাওয়া শুরু করেছে সে এবং টিউশানসগুলো অ্যাটেন্ট করতে শুরু করেছে।রোজ রোজ আর উশমিলের বাড়ি না যাওয়া হলেও প্রায় প্রতিদিনই কিংবা এক-দুইদিন অন্তর অন্তর উশমিল নিজেই অরুনাভোকে ডেকে নেয়,কখনও গঙ্গার ঘাটে,ঢাকুরিয়া লেকে,শপিং কমপ্লেক্সে,বাড়িতে বা মাঝেসাঝে এমনি কলকাতার রাস্তায় হাটঁতে।অরুনাভো বুঝতে পারে যে উশভিল দুর্বল হয়ে পড়েছে তার প্রতি।সবকিছুই খুঁটিনাঁটি তার অরুনাভোকে বলতে হয় এখন।উশমিল সরাসরি প্রকাশ না করতে চাইলেও একটা নামহীন সম্পর্ক চলতে থাকে দুজনের মাঝে।এইভাবে একটা বছর কেটে যায়।কিন্তু তাদের সম্পর্কে কোনো ছেদ পরেনা।সব একই গতিতে চলতে থাকে।
একদিন সন্ধ্যেবেলায় উশমিল আর অরুনাভো রাস্তায় দাঁড়িয়ে আইসক্রিম খাচ্ছিল।হঠাৎ উশমিল বলে উঠল,"আচ্ছা তোমার বাড়ির কেউ আমার কথা জানে?" অরুনাভো একটু অবাক হয়ে উত্তর দেয়,
"মা জানে,কেন বলোতো?"
"না আসলে তুমি আমার ফ্যামিলির এত ক্লোজ ভাবছিলাম আমিতো তোমার পরিবারের কাউকেই চিনিইনা ব্যাস শুনেছি.. তাই আরকি।তা তোমার মাকে কী বলেছো আমার ব্যাপারে?"
অরুনাভো কেঁসে ওঠে। একটু স্বাভাবিক হয়ে বলে,"বলেছি এরকম পার্কে তোমার সাথে দেখা হয়েছিল তারপর আর যা যা হয়েছে তাই"
"তিনি শুনে কী বল্লেন?" অরুনাভো মনে মনে ভাবে যা বলে তা শুনলে আর কথা বলবেনা উশমিল।তাই বিষয়টা বদলানোর চেষ্ঠা করে।
"কী আর বলবে.. ছাড়ো ওসব. দেরি হয়ে যাচ্ছে তোমাকে বাড়ি ফিরতে হবেতো"
"সে তো হবেই।কাল সন্ধ্যেবেলায় কোনো কাজ আছে তোমার? "
"না,কাল কোথায় যাবে আবার?"
"তোমার বাড়ি তোমার মায়ের সাথে দেখা করতে"
"মানে? হঠাৎ এমন ইচ্ছে হওয়ার কারণ?"
"বারে...তুমি আমার মাকে চেনো বন্ধু পাতিয়ে ফেলেছো আমি তোমার পরিবারকে জানবোনা? চিনবোনা?"
"না তা কী বলেছি?..." অরুনাভোকে শেষ করতে না দিয়েই উশমিল বলল," ব্যাস তাহলে চুপ।কাল সন্ধ্যেবেলায় আমি কাকিমার সাথে দেখা করতে যাচ্ছি এটা ফাইনাল"বলে উশমিল চলে গেল।এইদিকে ঘোর চিন্তায় পড়ল অরুনাভো।মেয়েটা হঠাৎই এমন বেঁকে বসল কেন?মা তো রোজ আমাকে ওকে ছেড়ে দিয়ে অন্য কাউকে বিয়ে করে নিতে বলে।মাতো ভাবে যে ও আমাকে ঘোরাচ্ছে।কাল যে কী হবে ভগবান জানে।বাড়ি এসে সে মাকে জানায় যে উশমিল আসতে চাইছে।শান্তদেবী এতটুকু কিছু বললেনা এই বিষয়ে শুধু বললেন ঠিক আছে।সম্ভবত সে মনে মনে পণ করে রাখলেন যে তিনি তার ছেলের মনের কথা ওই মেয়েকে কাল জানাবেনই জানাবেন তাতে যা হয় হোক।ছেলের ব্যাপারে উশমিলের বিষয়টি তিনি তার স্বামীর থেকে লোকাননি।এই কথাটিও লোকালেন না এবং স্বামীকে আদেশ দিলেন সে যেন সেই সময় বাড়ি থাকেন।
YOU ARE READING
অচেনা মেয়েটি
Short Storyকোয়েনার সাথে রোজকার ঝগড়া নিয়ে ক্লান্ত অরুনাভো একদিন অফিস যাওয়ার পথে একটি মেয়েকে দেখে প্রেমে পরে যায়।কোয়েনার সাথে ছয় বছরের সম্পর্কটা ভেঙে ফেলে সে।এরপর একদিন মেয়েটিকে সে একটা রেস্তোঁয়াতেও দেখে।কিন্তু মেয়েটিকে সে চেনেনা জানেনা কী করবে অরুনাভো?অবশেষে কী...