অাগে কখনও আমার সাথে এমন হয়নি। স্পষ্টই বুঝতে পারছি আমি কোনো একটা রোগে আক্রান্ত। এটা আমাকে কোনো কষ্ট দিচ্ছে না, অলসতাও হচ্ছে না। শুধু মনে হচ্ছে আমি নিজের মাঝে নেই। এই অভিজ্ঞতায় আমি নতুন। তাই বর্ণনাও করতে পারছি না কেমন?
রোগটি বোধ হয় মেয়ে। দেখিনি তাকে,জানি না কেমন? সামাজিক-যোগাযোগ মাধ্যম, সেখানেই পরিচয়। আগে কখনও আমি কারোও সাথে বেশি কথা বলায় অভ্যস্ত ছিলাম না। এখন বলছি। আমার বহু দিনলিপি আছে। কিন্তু সেখানে ততোটা লেখাও নেই যে একটি কবিতা তৈরি হবে। দু-তিন দিন লিখেছি, এর বেশি আগ্রহ ধরে রাখতে পারতাম না। এখন লিখছি, এবং লিখে চলেছি। যদিও জানি এখানটায় কারোও আগ্রহ নেই। তবুও লিখছি অদেখা সমাপ্তির লক্ষে।
আমি কাউকে আজও ভালোবাসি নি। তাই জানি না এটা কি?
সে আমাকে বলেছে, সে ওকে পছন্দ করে, আমার এক বন্ধুকে। তাই নিজেকে প্রায়শই সতর্ক করি,-সে তোমার বন্ধুকে ভালোবাসে। তাহলে তোমার এমন অনুভূতি হচ্ছে কেন? তুমি কি বন্ধুত্ব পরিহার করে থাকতে পারবে? নিজেকে বল, তুমি তাদেরকে গড়ে দিলে গর্বিত হবে। কিন্তু যদি নিজেকে জুড়ে দাও তাহলে ক্ষণিকের পুলক তুমি পাবে। কিন্তু প্রশান্তির শ্বাসটুকু হারাতে হবে-।
এভাবেই চলতে থাকে। সে কিছু কথা বলে, আমি অনেকটুকুই বলে যাই। সে জানতে চায়, আর আমার আগ্রহ বাড়ে।একদিন দেখা করতে চাইলাম। ওর সাথে যে আমি কথা বলি এটা আমার বন্ধু জানে না। তাই আমার শংকা হচ্ছিল,যদি কোনো কিছু হয়ে যায়। তবুও মনকে শান্তনা দিলাম,আমি আমার বন্ধুকে বুঝিয়ে বলতে পারবো ব্যাপারটা। আর আমি তো স্বেচ্ছায় আসি নিই।
-------
সময়মতো ওর সাথে দেখা হল। অাগের কথাগুলোই পুনরায় বলতে বলতে হাটতে থাকলাম। একটু বেশিই সকালে বের হয়ে পরেছি। ভোরের শীতল হাওয়া এখনও ম্লান হয়নি। কিন্তু সদ্য জেগে উঠা সূর্য যেন তার রোদ দিয়ে প্রকৃতিটা মধুময় করে তুলেছে। হালকা শীত, মৃদু রোদ, ঝাঁপসা অালো অার কুয়াসা ভেজা নির্জন পথ।
মনে হচ্ছে অস্তিত্ব যেন বিলুপ্তপ্রায়। এই পরিবেশে ওর গলার স্বর অার গায়ের গন্ধ যেন অামাকে সম্মোহন করছে। তাকিয়ে অাছি, দেখছি ওর চঞ্চলচোখের মিষ্টি চাহনি। কথা বলতে পারছি না, যেন অামি অবচেতন কোনো এক দেহে বন্দি। ওর ঠোঁটের দিকে চেয়ে আছি। ভরসা আর বিশ্বাসের এক সংমিশ্রণ লেগে আছে অর হাসিতে। পা ফেলার সাথে তাল মিলিয়ে অর হালকা-লম্বা চুলগুলো দুলছিল, আর চুলের বাতাসে যেন আমি হারিয়ে যাচ্ছি অর মাঝে। নিজেকে কেমন যেন অনিয়ন্ত্রিত মনে হচ্ছিল। -সৃষ্টিকর্তার কাছে এইটাই প্রার্থনা করছি,যেন আমি কোনো ভুল করে না বসি, কারোও বিশ্বাস যেন ভেঙ্গে না দিই।-আমার কি করা উচিৎ বুঝে উঠার আগেই সামনে বন্ধু চলে আসলো। আমি মনে হয় সংকিত চোখেই তার দিকে তাকিয়েছিলাম।
তাই হয়তো কোনোরকম সম্ভাষণ ছাড়াই প্রশ্ন করে বসলো,
-তুই এখানে কি করছিস? -আর তুই অর সাথে?
-দেখ বন্ধু। আমি এখানে তোর ব্যাপারেই কথা বলতে আসছি।
-থাক আমি বুঝতে পারছি। তুই যে এমন করবি বুঝি নাই!
(-)হয়তো বিপাকে পরে ভুল করেই অ কথার মাঝে কথা টানল। এইটা সা**র পছন্দ না,তা আমি আগে থেকেই জানতাম। কিন্তু আমি যদি থামাতে যাই তাহলে আরোও প্যাচ বাজবে। তাই আমি চেষ্টা করলাম সুর মিলিয়ে অকে আলাদা করতে। কিন্তু সব চাওয়া পূরণ হয় না কখনও।
-তুমি একটা কথাও বলবে না। এতোদিন এর সাথে সম্পর্ক করেও বুঝনি যে আমি এটা পছন্দ করি না?
-কি বলছিস এইসব? অর কোনো দোষ নেই। জী+তো তোর ব্যাপারে বললো আমাকে,তাই আমি নিয়ে আসলাম এখানে!
-না তোরও কোনো দোষ নেই। আমি তোকে বিশ্বাস করেছি। এইটা আমারই ভুল ছিল। তো* **** *** যোগ্য **। আ* * **-(-)আমি আর কিছু শুনতে পারছি না। মাথার ভেতর যেন অনবরত জোয়ার-ভাঁটা চলছে। এখনই হয়তো আছড়ে পরবে,চোখ দিয়ে।
হঠাৎ শরীরে একটা ধাক্কা অনুভব করলাম। সম্বিৎ ফিরেই যে কথাটি শুনতে পেলাম,তা যেন আমার কাছে মনে হলো কোনো এক মরণাস্ত্র।
-তুই এখনি চলে যা এইখান থেকে। সামনে আসবি না আর কখনো। তোর এই কাজ মনে থাকবে আমার।
এই অস্ত্রটা যেন আরোও ধারালো হচ্ছিল জী** কান্নায়।
আমি দিগ্বিদিক হারিয়ে ফেলেছি। হারিয়েছি নিজের অনুভূতিকে, বন্ধুকে, আর তার বিশ্বাসকে।
সৃষ্টিকর্তার কাছে চাইতে হয়তো ভুল করেছিলাম। হয়তো ভুলে আমার প্রার্থণায় মন না ভাঙ্গার শর্তটি আসে নি বা বুঝাতে পারি নি।
তাই এই শাস্তি। কিছুক্ষণ আগেও যার জন্য আমি বাচতে চাইছিলাম, যে বন্ধুটির জন্য আমি নিজেকে হার মানতে বাধ্য করেছিলাম, বাধ্য করেছিলাম নিজের মনকে রুদ্ধ করতে; আজ তার একটিও রইলো না। শেষ নিঃশ্বাসটি মনে হয় একটু পরই বাতাসে মিলে যাবে!আমি এখন একটা ব্রীজের উপরে। এর চারপাশে পানি, ব্রীজের উপরে যেন পীচ করা মহাসড়ক।
পথ এখন দুইটা....তৃতীয়টা দগ্ধতার জীবন।
YOU ARE READING
একই অপেক্ষায়
Romanceপ্রত্যেকটা কাহিনীকেই ভিন্নভাবে বলা যায়। হয়তো ফিরিয়ে আনা যায় একটি কাহিনীকে অন্যটির ভেতর। সবগুলো দৃশ্যমান হয়ে উঠে না। আমাদের কল্পনা ও মিলনজাত চিন্তা আমাদেরকে ফিরিয়ে নিয়ে যায় আগের কোনো এক মূহুর্তে,প্রিয় কোনো একটিতে। ক্লান্ত মন আবারো আলো দেখে অপেক্ষার...