Part:1

2.1K 30 5
                                    

Soulmate
part :1

আজ মেরিনের ছোট বোনের হলুদ। বিয়ে হচ্ছে   অনেক বড় ঘরে। ছেলে সুদর্শন,  শিক্ষিত। ভালবাসর বিয়ে ওদের। জেরিন অনেক সুন্দরি। ছেলে আর ও একই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছে। ইমন অবশ্য ওর ৩ ব্যাচ  সিনিয়র। দুই পরিবারের সম্মতিতেই বিয়ে হচ্ছে।জেরিন বড্ড জেদি আর অনেক চতুর। নাকে দরি দিয়ে ঘুরাইছে ওরে ১.৫ বছর,তারপর প্রেম। বড় বোনের চেয়ে বন্ধু ছিলো বেশি ওরা দুজন। দুজনের বয়সের ফারাক ৩ বছর। জেরিনের গ্রাজুয়েশন শেষ।  চাকরী নিবে। আর ইমন চাকরি করে ব্যাংকে।

বিয়ের যাবতীয় কেনাকাটা, প্লানিং সব দুবোন মিলেই করেছে।  ফটোগ্রাফার, স্টেজ ডেকোরেশন, পার্লার সিলেকশন সব। হলুদ হবে বাড়ির ছাদে।
সব ভালোয় ভালোয় শেষ হলেই হয়।

তুমুল আনন্দ আর ব্যাস্ততায় শেষ হলো বিয়ে। কিযে ঝড় গেল কয়দিন।  মেরিন ৩ দিনের ছুটি নিয়েছে । কাল শেষ ছুটি। পরশু থেকে আবার রুটিন লাইফ শুরু।

মেরিনে কথাতো বলাই হয় নাই। মেরিন, রসায়নে অনার্স,  মাস্টার্স  করে কলেজের অধ্যাপক হিসেবে জয়েন করেছে। মেরিন,  জেরিনের বড় হলেও মেরিন এখনো অবিবাহিত।

কম কথা শুনতে হয় নি ওর ফ্যামেলিকে বড় মেয়ের ছোট  আগে ছোট মেয়ের বিয়ে এ কারনে। কিন্তু কি আর করা। বিয়ের নাম শুনলেই কেমন ঘেন্না করে মেরিনের। মেরিন  কিন্তু মর্ডান নয়। যে লিভ ইন বা টুগেদারে বিশ্বাসী, আর আট দশটা মেয়ের মত ও ও স্বপ্ন দেখতো বিয়ে করার। ছোট্ট একটা সংসার হবে, একটা বেবি আরো কতো কি। কিন্ত যে ধাক্কা মেরিন খেয়েছে,  তার ক্ষত কত দিনে সারবে কে জান। তবে এটুকু জানে বিয়ে ওর দ্বারা অসম্ভব। 

মেরিন জেরিনের চেয়ে বেশি সুন্দর।  বড় হওয়া সত্ত্বেও ওকেই ছোট দেখা। অনেক সমন্ধ আসে ওর জন্য। কিন্তু বিয়ে করবে না ও। কারন একটাই, তমালকে ও ভালবাসতো। যে এখন বিয়ে করে ফেলেছে দির্ঘ ৭ বছর অপেক্ষায় রেখে। তমাল যেদিন অস্ট্রেলিয়া যায় আগের দিন ওদের আাসায় আসে। এসে ওকে একটা আংটি দিয়ে যায়। ভালবাসার চিহ্ন হিসেবে। আর ওর জন্য অপেক্ষা করার শপথ করিয়ে যায়। পরদিন ফ্লাইট। মেরিন ওর বাসায় যায়। ওকে গিফ্ট দেয়। রান্না করে খাওয়ায় মেরিন। কি নিবে না নিবে সব লিস্ট করে নিজ হাতে সব প্যাকিং করে ও। পরদিন ফ্লাইট তমালের বাবা মা, মেরিন, জেরিন আর তমালের চাচা গিয়েছিলেন এয়ারপোর্ট এ।  ওকে এগিয়ে দিতে। গাড়িতে বসে মেরিন ভাবছিল এই পথটা যদি শেষ না হতো। আগের রাত কেও ঘুমায় নি।  জেরিন, মেরিন, তমাল, তমালের বোন, তমালের চাচাত ভাইবেন। সবাই মিলে আড্ডা দিয়েছে। মেরিনের মন নেই আড্ডায় ছোট্ট থেকে একসাথে বড় হওয়া। দুজনকে দুজন কবে ভালবেসে ফেলেছে কওই ঠিক কবে বলতে পারবে না।
তমাল মেরিনের খালাতো ভাই। অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছে স্টুডেন্ট ভিসায়।   মেরিন তখন সবে ইন্টার ২য় বর্ষে।
যাবার সময় দুজন দুই দিকে। তমাল কেবল মেরিনাকেই দেখছে। (তমাল ওকে আদর করে মেরিনা বলে ডাকে) মেরিনা ওর দিকে তাকাতে পারছেনা। তাও দেখছে। কবে আবার দেখবে...
.............
একে একে ৭ বছর চলছে....
ও এখনও দেশে আসেনি।বিয়ে করেছে ওখানেই। বাংলাদেশি বংশাদ্ভুত এক অস্ট্রেলিয়ানকে। শুধুমাত্র সিটিজেনশীপ পেতে। কি অদ্ভুত সত্য কথা। তমাল ও মেরিন দুই পরিবারই জানতো যে ওরা একে অপরকে পছন্দ করে। কিন্তু তমালের মা বড্ড লোভী। টাকার পাহাড় করে ফেলে ৪ বছরের প্রবাস জীবণে। কিন্ত স্টাডি কম্পিলিট হওয়ায় আর থাকা সম্ভব না।কিন্ত তমালের টাকায় বাড়ির যা কাজ শুরু করেছে তার কম অর্ধেক এখনো বাকি। তাই তমালের মা তমালের চাচির সাথে পরামর্শ করেন যিনি অস্ট্রেলিয়াতেই থাকেন। তার বুদ্ধিতেই তমালের বিয়ের কথা হয়। তমাল মেরিনাকে কল দিয়ে সব জানায়,  শঙ্কিত দুজনই। কারন মেরিনা ওর খালাকে ভাল করে চিনেন। তমাল ওকে বলে চিন্তা কোরোনা আমি তোমাকেই ভাল বাসি আর তোমাকেই বিয়ে করব। তমাল সব জানায় ওর মাকে, ওর মা অবশ্য সবই জানে তবুও না জানার মিথ্যে অভিনয়। কিন্তু মন গলেনা ওর মায়ের,  ইমোশনালি ব্লাকমেইল করে তমালকে। মেরিনার বাড়ি গিয়ে ঝগড়া করে তমালের মা। বলে মেরিনা যেন তমালের সাথে সাথে যোগাযোগ না করে। মেরিনের মা মেরিনকে করা করে নিষেধ করে। সম্পর্কচ্ছেদ হয় দুই বোনের। তবুও এতদিনকার সম্পর্ক এত সহজে ভাঙ্গে।
তমাল যেদিন বিয়ে করে মেরিনা সেদিন মেরিন হসপিটালে ভর্তি। মেরিনা জানতে পারে তমালের চাচাতো ভাইর কাছ থেকে। ঘুমের ঔষধ খেয়েছে ও।
তিন দিন পর জ্ঞান ফিরে মেরিনের। তমাল ফোন করেছিল কিনা জানতে চায়, মেরিনের মা বলে ফোন নাকি চুরি হয়ে গেছে। কান্না করার শক্তিও ছিলনা মেরিনার।  এর পর কেটে গেছে কত্ত বছর।
বিয়ের জন্য কত পিরাপিরি। না করে মেরিন।কারন তার বয়স তো আর কমছে না বড়ছে। মা, বাবার পিড়ায় রাজি হয় ও, কেন বিয়ে করবেনা। তমালতো বিয়ে করেছে, বাচ্চাও হয়েছে তবে তুই কেন...
মেরিন ভাব ঠিকইতো।

SoulmateWhere stories live. Discover now