Soulmate
Part:7
Writer : Mahabuba Metuদুজনেই চোখাচোখি হয়ে গেলো। মেরিন ওকে দেখে ভীষণ ভয় পেলো। মন হলো যেন ওর শত্রু কেও এসেছে ওর সব সুখ এখনি শেষ হয়ে যাবে। মেরিন এমন একটা ভাব করলো যেন তমালকে চিনেই না। গিয়ে রেদওয়ানের হাতটা ধরলো মেরিন। বুঝালো যে তোমার অপেক্ষায় নেই আমি। তমালটা যেতে যেতে তাকিয়েই রইলো।
রেদওয়ান বললো, ওঠো মেরিন
: কি ব্যাপার বলোতো হঠাৎ আমার বউ আজ ওপেন প্লেসে হাত কেমন করে যেন ধরলো।
: মেরিন অন্যমনস্ক।
:কি ব্যাপার মেরিন তুমি এত ঘামছো কেনো।
: এমনিই, কিছু হয়নি আমার।
: শরীর ঠিক আছে তো।
: হুম ঠিক আছে।
: ওকে..কলেজে গিয়ে পর পর ৩ টা ক্লাস করালো মেরিন। একটু সময় পেয়ে ফোণ করলো নাহিন কে।
(তমালের চাচাত ভাই)
ফোণটা বন্ধ।
এবার ফোন করলো জেরিন কে।
: হুম বল আপা কেমন আছিস।
: আমি কি বলি তুই শোন......
: জেরিন চুপ
: আমার কেনো এতো ভয় করছিলো জারু
: ভালোবাসা হারাবার ভয়রে আপা। তুই এসব ভাবিস না। তমাল এসেছে আরো অনেক আগেই। তোর কোনো ক্ষতি ও করবে না, করলে ৮ মাস যথেষ্ট সময়।
: মানে...! তুই ও জানতি এসব।
: হুম জানতাম, তবে জানাইনি ইচ্ছে করেই তোর ভালোর জন্য।
: আমার ভালো.... হু..
ভালো তো খোদাও চায় নারে জারু
: এ কেমন কথা বললি আপা। তুই কি সুখি না...?
আর ভাইয়া তোকে অসম্ভব ভালোবাসে এটা তুই অস্বীকার করতে পারবিনা।
: হুম অনেক বাসে, আমায় নতুন জীবণ দিয়েছে ও। তাছাড়া তমাল আমার লাইফের ব্ল্যাক লিস্টের একজন। ওকে আমি ততোটাই ঘৃণা করি যতটা ভালোবাসি রেদওয়ান কে।
: এতেই সবার ভালো
: শরীরটা ভালো নারে জারু। কেমন উইক লাগছে।
: সাবধানে থাকিস আপা। সমস্যা হলে কল দিস।
: ঠিক আছে।মেরিন কিছুটা অসুস্থ। রেদওয়ান ওকে নিয়ে ডা. এর কাছে গেলো। ডা. বললো প্রেসারটা লো হয়ে গিয়েছিলো হঠাৎ। তেমন কোনো সমস্যা নেই।
বাসায় ফিরার সময় মেরিনে প্রিয় জায়গা TSC তে
গেলো দুজনে। তবে ভালো লাগেনা মেরিনের। তাই বেশিক্ষণ বসে না দুজন।: জানো আমিতো ভাবছি কোনো গুডনিউজ পাবো
: আর চোখে তাকিয়ে মেরিন পেটে একটা গুতো দেয়। দুজনেই হাসে।বাসায় ফিরে রাতের খাবার খেয়ে টিভির ঘরে বসে টিভি দেখছে। এমন সময় একটা মেসেজ আসে। মেরিন তেমন কেয়ার করেনা। হঠৎ কেমন যেন ভয় পায়। ফোণটাকে চেক করে। দেখে যে না gp অফিস থেকে মেসেজ আসছে।
এর পর থেকে প্রায়ই দেখা হতো তমালের সাথে। মেরিন দেখেও দেখেনা। মনে মনে ভাবে এত মানুষ মরে তুই মরতে পারোসনা।
কলেজ চলা সময়ে ফোন আসে মেরিনের। ২ বার, খেয়াল করেনি মেরিন,
৩য় বার ফোন দিতেই
: কেমন আছো মেরিনা...
: নিশ্চুপ মেরিনের বুঝতে আর বাকি থাকলো না কে ফোন করেছে। এত ভয় পাচ্ছিলো মেয়েটা।
ফোণ কেটে দেয় ও।মেরিন ইদানিং অানমনা, বেখেয়ালী হয়ে গেছে, কি যেন ভাবে সারাদিন। রেদওয়ান তা লক্ষ করে।
: তুমি কি কোনো টেনশন এ আছো। আমায় বলতে পারো। আমি তোমার স্বামীই শুধু নই একজন ভালো বন্ধুও হতে চাই।
: আরে তেমন কিছু নাহ।
মেরিন ও বুঝতে পারছে যা হচ্ছে তা ঠিক না। রেদওয়ানকে বললে খারাপ ভাববে আমায়।রেদওয়ান বাইরে যেতেই মেরিন ফোণ করলো নাহিনকে।
: হ্যালো আপা বলেন
: কেমন আছিস ভাই।
: ভালো আছি আপা, আপনি কেমন আছেন।
: আমিও ভালো আছিরে ভাই তবে কতদিন ভালো থাকবো তা জানি না।
: কেন আপা কি হয়েছে
: শোন নাহিন তুই তো সবই জানিস আমার আর তমালের ব্যাপারে। বিয়ে হয়েছে আমার ওকি শুনে নি। আর কোন সাহসে ফোন দেয় আমাকে। ও যখন আমায় ছেড়ে টাকার জন্য অন্য কাওকে বিয়ে করেছিলো আমিতো একবারও ওকে ফোন করিনি, এমনকি চেষ্টাও করিনি। ভেবছি ভালো থাক ও। তো ও এখন কেনো আমায় ফোণ করে। তুই প্লিজ ওকে বলবি আমায় যেনো ফোন না করে।
: নাহিন নিশ্চুপ
: কিরে কথা বলছিস না কেনো।
: আপা তুমি যা জান আমরাও তাই জানতাম। তবে...
: তবে কি
: তমাল ভাইয়া এখনও আনম্যারিড।
: হোয়াট!
: হুম, উনার ক্যান্সার হয়েছে আপা, লাস্ট স্টেজ চলছে।
: মানে!
: জ্বী আপা। সব ট্রিটমেন্ট শেষ। তাই দেশে ফিরেছে আপনাকে নাকি জানিয়েওছিল তা। আপনি কোনো উত্তর দেন নি।
: চোখদুটো দিয়ে পানি পরছে মেরিনের। যতই হোক প্রথম প্রেম। নাহিন আমি রাখছিরে তোর দুলাভাই এসেছে।
: ঠিক আছে আপা।
ফোণটা রেখে অঝোরে কাঁদছে মেরিন।চলবে.....