সৎ মা
Writer : Mahabuba Metu
Part:2#সৎ_মা
লেখা: #মাহাবুবা_মিতু
পর্ব: ২বাবা কিছুই বলছেন না। আমি কয়েক বারাই চেষ্টা করেছি বাবাকে সত্য বলতে কিন্ত মার খাওয়ার ভয়ে বলিনি।
আমি দাদীকে সব সত্য বলি। দাদী পরে বাবাকে বুঝিয়ে বলেন। কারন দাদীও চায় নতুন মা ফিরে আসুক। তিনি যেভাবে সংসারটা গুছিয়ে রেখেছেন তা চোখে পরার মতো।
বাবা বুঝতে পারে তার এরকম ব্যাবহার করা উচিত হয় নি। পর দিন বাবা আমাকে আর তন্ময় চাচ্চুকে পাঠায় নতুন মাকে ফিরিয়ে আনতে। তখন যোগাযোগ মাধ্যমগুলো এত সহজলভ্য ছিলো না। তাই আমরা গিয়ে নতুন মাকে ফিরিয়ে আনলাম। মা অবশ্য আসতে চাননি, কিন্তু তার মাও তাকে রাখতে চাননি। নতুন মায়ের কথার কোন দামই নেই দুই বাড়ির কোনটাতেই। মা একপ্রকার বাধ্য হয়েই ফিরেছিলেন।নতুন মাকে নিয়ে যখন ফিরলাম তখন বাবা বাড়িতে ছিলো না। বাবা বাড়ি ফিরলো রাতে। রাতে আমরা সবাই একসাথে খেয়েছিলাম। সেদিনই মনে মনে সিদ্ধান্ত নেই নতুন মাকে মা বলে ডাকবো। নিজের কাধে যে সৎ-সন্তানের দোষ নিতে পারে সে আর যাই হোক সৎ মা হতে পারেন না। এর পর নতুন মাকে আমি মা বলে ডাকতে শুরু করলাম।
এরপর ভালোই চলছিলো আমাদের দিনগুলো। মা সারাদিন ব্যাস্ত থাকতেন আমাদের সেবায়। কিছুদিন পর আমার আরেকটা ভাই আসলো পৃথিবীতে। আমি ওর নাম রাখলাম সীমান্ত। দিগন্ত আর সীমান্ত, দুই ভাই আমরা...
সেদিন যে আমি কত্ত খুশি ছিলাম বলবার মতো না। স্কুলে সবাইকে বলেছিলাম আমার ভাইয়ের কথা। বাসার সবাই তেমন খুশি ছিলো না কারন ফুফু নতুন মাকে আগেই বলেছিলো কোন সন্তান যেন জন্ম না দেন। ফুফু একথা বাবাকে বলেছিলো, বাবা হেসে উড়িয়ে দিয়ে বলেছিলো - আমার ছেলেমেয়ে কে মানুষ করার চিন্তা আমিই করতে পারবো, তোর এ নিয়ে না ভাবলেও চলবে। মা এ কথা শুনে খুব কেঁদেছিলো সেদিন। বাবা মাকে বলেছিলো
: তুমি কিছু মনে করো না। আমার একমাত্র বোন, বেশী আদরের তো তাই একটু এমন...যেদিন থেকে শুনেছে নতুন কেও আসবে দুনিয়াতে ফুফু সেদি থেকেই আমাদের বাড়ি আসা বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে অবশ্য ভালোই হয়েছে। দাদীর আর বাবার কান ভারী করার কেও রইলো না। তাদের ভাবনা ছিলো নতুন বাচ্চার প্রতি সব এটেনশন চলে যাবে আমার প্রতি অবহেলা হবে এই ভেবে। ফুফু কোনদিনই সীমান্তকে কোলে নিতো না, আদরও করতো না। তার সকল দায় তিনি ওকে সোনার একটা চেইন উপহার দিয়ে শেষ করেছিলেন। ভাবখানা এমন যেন মা সীমান্তকে হাতে নিয়ে তার ভাইয়কে বিয়ে করেছেন।