আমি আকাশ দেখছি। দেখছি কিভাবে বিস্তৃত জলরাশি ঢেউয়ের সাথে দুলতে দুলতে একটু হাত বাড়িয়েই চৌদ্দ হাজার কিলোমিটার দূরত্বের আকাশটাকে চট করে ছুঁয়ে ফেলে। আসলে ধোঁকাটা আমি জানছি আর মানছি দুটোই, তারপরেও এই ধোঁকাটা আমার কাছে ভীষন উপভোগ্য। আমি ভাবতে ভালোবাসি ওই বহুদূরে কোথাও না কোথাও আকাশ এসে ধরাতে বিলীন হয়েছে, যেমন আমার জীবনে মায়া, ঠিক তেমনি।
মায়াকে চিনলেন নাতো? আমার বউ। আমার অনেক আদরের বউ। নিজের কথায় নিজেই খানিক হাসলাম।
আমি ভাবতে ভালোবাসি মায়া নামের মেয়েটা আমার জীবনে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে আছে.... যখনই সাগরের দিকে তাকাই, তখন মেঘের মিনারে আমি আমার মায়াকে দেখি। সদা হাস্যজ্জল, বাবুই পাখির মতো চঞ্চল, আর চাতক পাখির মত ভালোবাসার কাঙাল একটা মেয়ে। সর্বাঙ্গে যেন বুনোফুলের মায়া।
মায়া... দুই শব্দের এই নামটা কাজী বাড়িতে যেন কলিংবেলের ঘন্টি দেওয়ার মতো একটি শব্দ।শুনলেই কেমন যেন একটা চনমনে ভাব হয়। মনে হয় শীতের সকালে হাতে সদ্য ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপ। আর আমি তাতে বুদ হয়ে থাকি চব্বিশ ঘন্টা। মায়া আমার কাছে হিরোইনোর মতোই,মারাত্মক ভাবে টানে।
সেবার কোলকাতা গিয়েছিলাম বন্ধুূদের সাথে। দলবেঁধে সব দার্জিলিং যাচ্ছি। আমি, অর্ক,হাসান ভাই আর নিশাদ। হাসানকে ভাই ডাকি কারন এক সময় দুই ক্লাস সিনিয়র ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন সমস্যায় পড়ে শেষে আমাদের ব্যাচমেট। তো মায়া এসে বাঁধ সাধল। ওকেও সাথে নিতে হবে। কি সাংঘাতিক। আমি যতই বোঝাই, আমি বন্ধুদের সাথে যাচ্ছি। ও ততো চিনে জোঁকের মত আমায় আকড়ে ধরে বলে," ছোটনদা আমি কিন্তু তোর সাথে যাচ্ছি। "
আসলে আমি আর মায়া চাচাত ভাইবোন। আর এটাই সমস্যা। আমার অন্য ভাইবোনদের মতো আমি মায়াকে কেবল বোন বলে ভাবতে পারি না। ওকে দেখলে আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে উত্তেজনায়। বুকের বাতাসগুলো খাবি খেতে থাকে ফুসফুসের দেয়ালে দেয়ালে। সেই আমি কি করে ওকে নিষ্পাপ ভাবে বলি, চল আমার সাথে। আমিই যদি ওর মস্ত বড় বিপদের কারন হয়ে দাড়াই। না আমার এত সাহস নেই।তাই আর নেওয়া হল না।