শেষ পর্ব

180 13 1
                                    

"খোকা শোন, আজ একটু তাড়াতাড়ি বাড়িতে ফিরিস।"

"কেন মা? "

"আজ বোধহয় ওরা এসে একবারে কাবিন করে যাবে।"

"কারা,  কার কথা বলছ মা? "

"চয়ন। ওরা একেবারে কাবিন করতে চায়। মেয়েটা খুব কাঁদছে। মেজ বলছিল, চয়নের মা খুব অসুস্থ, তাই আর কোনো অনুষ্ঠানে আপাতত যেতে চায়না ওরা। পরে সময় বুঝে করবে।"

আমার  নিঃশ্বাসটা বুঝি জমে গেল। হৃদ স্পন্দনটাও বোধহয় তার সাথেই পাল্লা দিয়ে নামতে লাগল। তাড়া যে কার আর কেন সেটা না বোঝার মতো বোকা আমি নই। কিন্তু দুঃখ হলো, চয়নদাকে বলা সত্বেও, বিয়ে করতে আসছে! আমি ওনাকে সত্যি সম্মান করতাম।

"মায়া কোথায় মা? "

"আছে ওর ঘরেই।"

"মা আমি যদি তোমাদের ইচ্ছার বাইরে কিছু করি, তুমি রাগ করবে? "

মা খানিকটা সময় চুপ করে থাকলেন। তারপর হুট করে কিছু না বলেই বের হয়ে গেলেন। আমি মায়ের উত্তর না পেয়ে কেমন যেন নিরাশ হয়ে গেলাম। আমার কেন যেন মনে হতো, মায়ার ব্যাপারে মারও একটা দুর্বলতা আছে। ধারনাটা একেবারে ভুল বলে প্রমান হলো।

বুক চিরে কেমন একটা দীর্ঘশ্বাস বের হয়ে এলো। মায়া আমার চাচাত বোন না হয়ে দূরের কেউ হলেই বোধহয় বেশী ভাল হতো। অন্তত পরিবারের খারাপ ছেলে মেয়ে হওয়ার বদনামীটা আমাদের কপালে জুটত না। আজ যদি আমি মায়াকে নিয়ে বের হয়ে যাই, এরপর এ বাড়িতে আর আমাদের ফেরা হবে না। কাকা আর বাবার মধ্যে বড় একটা বিরোধ দেখা দিবে। পাকাপোক্ত ভাবে কলহটা তখন আসন গেঢ়ে বসবে। কিন্তু আমি এখন করবতো করবো কি? নিজের বিবাহিতা স্ত্রীকে পর পুরুষের হাতে তুলে দেওয়ার মতো কাপুরুষ অন্তত আমি নই। আমি যেন নিজেই নিজেকে তখন খুঁজছি। 

উল্টো পাল্টা হাজার রকম চিন্তা আমার মাথাকে অস্থির করে ফেলল। মনে হল পাগল হতে পারলে বুঝি শান্তি পেতাম। মায়াকে হারিয়ে জীবন নরক হয়ে যাবে আমার।

দিনাকে দিয়ে মায়াকে ছাদে ডেকে আনালাম। ওর দিকে তাকিয়েই বুকটা ছ্যাৎ করে উঠল, একরাতেই মেয়েটার চোখে মুখ বসে গেছে। আমাকে দেখেই কান্নায় ভেঙে পড়ল।

মায়া Donde viven las historias. Descúbrelo ahora