তৃতীয় ভাগ

6 0 0
                                    

৭.
আমি চা খেয়ে পড়ার টেবিলে অপেক্ষা করছি। যতটুক শুনছি, তানিয়া খুবই স্ট্রেইটফরোয়ার্ড, রাগী, রুচিশীল ও সুচিবাইসম্পন্ন স্মার্ট মেয়ে। তার অপছন্দের কোন কিছুই এই বাসায় টেকেনা। তাই একটু পরপর নিজের চুলগুলো ঠিক করে নিচ্ছি, যেভাবেই হোক টিকতে হবে। এরইমধ্যে দেখি একটা ছারপোকা শার্টের উপর হাঁটছে। দমকার পোকা আর সময় পেলোনা। ধরে দিলাম টিপ। হাত নাকে দিয়ে দেখলাম, সেই কি গন্ধ! সর্ব্বনাশ, এখন এই গন্ধকে কি করি! তানিয়া এলো বলে!

তখনই তানিয়ার জেঠাতো বোন-কাম-বান্ধবী স্বপ্না এসে বললো, মামা, তানিয়া আপু আসতে মনে হয় দেরি হবে, গিটারের ক্লাসে গেছে। আপনি চাইলে ঘুরাফেরা করে আসতে পারেন। আমি হাঁফ ছেড়ে মনে মনে কইলাম, যাক বাবা এই ফাঁকে হারামি গন্ধটাও দূর হবে, আমিও টিকে যাবো।

উঠোনে বের হলাম। অপু নেট টানিয়ে ব্যাডমিন্টন খেলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা প্লেয়ার তিনজন, একজনের শর্ট। তাদের রিকুয়েস্টে আমিও ব্যাট হাতে নেমে পড়লাম। একদিকে অপু আর তার ছোট মামা রাতুল ভাই, অন্যদিকে আমি আর অপুর জেঠাতো ভাই রিপন।

খেলা তুমুল জমে উঠেছে। রিপন ভাইকে বললাম, আপনি সামনের দিকে দাঁড়াইয়া থাকেন, আমি বাকিটা কভার করছি। অপু একবার খুব উঠিয়ে মারলো। ফেদার তখন শূন্যে। দোড় দিলাম ডাউন মারতে। তখনই স্বপ্না বাড়ির গেইট খুলে বললো, তানিয়া আপু এসে পড়ছে। ডাউন মারতে লাফ দেয়া অবস্থায় চোখ গেল গেইট দিয়ে ঢোকা মেয়েটির দিকে। এইদিকে রিপন ভাই ওমাগো কইয়া মাথা ধরে বসে পড়ছে। কি হইছে? যা হবার তাই হইছে, ফেদার থুইয়া বাড়ি যেয়ে লাগছে রিপন ভাইয়ের মাথার উপ্রে। তানিয়া মুচকি হেসে ভেতরে চলে গেল। এক নজর দেখেই বুঝলাম, মহল্লার পোলাপান ক্যান আমারে ম্যানহোলের ভয় দেখায়!

যাইহোক, অংক কষতে বসলাম টেবিলে। আগ বাড়িয়ে সে বললো, অন্য অংকে আমার সমস্যা নেই, আপনাকেও পড়াতে পারবো মামা। কেবল পরিসংখ্যান চ্যাপ্টারে একটু প্যাঁচ লাগে।

মনে মনে ভাবতেছি, এত স্মার্ট একটা মেয়ে, অথচ ক্ষ্যাতের মত কত সহজে আমারে মামা ডাকে। যাইহোক, তকদীরে যা আছে তদ্বীর করে তা অর্জন করতে হয়। চেষ্টা করতে দোষ নেই।

গল্পঃ তানিয়া (Bansuri M Yousuf) Where stories live. Discover now