প্রথম ভাগ

35 1 0
                                    

১.
ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে ইন্টার দিয়ে ঢাকায় এলাম। তখনও রেজাল্ট হয়নি। কুড়িলে একটা মেসে থাকি।

রান্না করে খাওয়া খুব কষ্ট। একদিন এলাকার এক বড়ভাই এসে বললেন, চল তোর খাওয়ার কষ্ট দূর করে দেই। রাস্তার ওপারে আমার বড়লোক ফুফার বাসা। ফুফাতো ভাইকে পড়াবি পেটেভাতে, রাজী?

আমি কইলাম, রাজী মানে, কত্তজোরে। সাথে আপনার ফুফাতো বোন থাকলে তারেও পড়াবো, কোন সমস্যা নেই বড়ভাই! শুনে ভাই আমার দিকে কটমটিয়ে ঘেঁতায়ে তাকালো! আমি বললাম, রাগের কি আছে ভাই, পেটেভাতে... বেতন দিতে হবে নাতো।

উনি আমারে তার ফুফুর বাসায় নিয়ে গেলেন। উনার ফুফা-ফুফুর সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে বললেন, আজ থেকে সে অপুকে পড়াবে। অপুকে ডেকেও বলে দিলেন, ইনি তোমার টিউটর। সন্ধ্যায় এসে পড়ায়ে যাবেন, তিনবেলা এসে খাবেন।

আমি মন খারাপ করে বললাম, শুধু অপুকে পড়িয়েই তিনবেলা খাবো ভাই? একটু বেশী হয়ে যাচ্ছেনা? আর কেউ নেই? ফুফাতো বোন... একসাথে পড়ায়ে যেতাম।

বড়ভাই এবার আমার প্রতি সদয় হয়ে বললেন, তুমি কষ্ট করে বাসায় এসে পড়াতে হবেনা। অপুকে বললেন, তুমি প্রতিদিন মেসে যেয়ে ইউসুফের কাছে পড়ে এসো।

আমি বেজার হয়ে কইলাম, তিনবেলা খাবার কি আমি বাসায় এসে খাবো ভাই, নাকি তাও মেসে পাঠায়ে দেবে?

বড়ভাই একটু চুপ করে থেকে চড়া গলায় তার ফুফাতো বোনকে ডাকলেন। ফুফাতো বোন আসলো। বড়ভাই'র ফুফাতো বোন মানেতো আমারও বোন। কেমন যেন অপ্রস্তুত অপ্রস্তুত লাগছিলো।

বড়ভাই আমাকে দেখিয়ে ফুফাতো বোনকে বললেন, উনি অপুকে পড়াবেন। তিনবেলা খেতে আসবেন। সম্পর্কে তোমার মামা!

আমি টাব্বুস খায়া বড়ভাইকে বলতে যাবো, ভাই আপনার বোনতো আমারও বোন, ভাগ্নি হইলো কেমনে?! তিনি আমারে থামিয়ে দিয়ে ফুফাতো বোনকে বললেন, তোমার শ্রদ্বেয় মামা, ঠিক আছে তানিয়া?

২.
কথা ফাইনাল। অপু মেসে যেয়ে একবেলা পড়বে। আমি তাদের বাসায় যেয়ে তিনবেলা খাবো। অপু-তানিয়া আমাকে মামা ডাকবে। আমি তাদের বাবাকে ভাই আর মাকে আপা ডাকবো।

গল্পঃ তানিয়া (Bansuri M Yousuf) Onde histórias criam vida. Descubra agora