লাবণ্যপ্রভা
পর্ব-৩
৪.
তুনিড় ভাই মালয়েশিয়া থেকে ফিরেছিল ১৪ মাস পর। আর সাথে করে আমার জন্য যে সারপ্রাইজ নিয়ে এসেছিল তার নাম ছিল প্রগতি ফ্রান্সিস।মালয়েশিয়া যাওয়ার সপ্তাহ খানেক পর থেকে তুনিড় ভাই কেমন বদলে যেতে শুরু করল।
আমার সাথে সারাদিনে ফোনে কথা হতো একবার। তাও একটু কথা বলে ফোন রাখার জন্য অস্থির হয়ে যেত। আমি ভেবেছি হয়তো ব্যস্ত তাই। এভাবেই চলছিল মাস দুয়েক। একদিন আমি বললাম,
-তুনিড় ভাই তুমি বদলে গেছ?? সারাদিনে একবার কথা বলি তাও তুমি ফোন রাখার জন্য ব্যস্ত হয়ে যাও।
তুনিড় ভাই রেগে গিয়ে চিৎকার করে বলেছিল,
-এখানে তো আর ঘোড়ার ঘাস কাটতে আসিনি। আমি পড়তে এসেছি। আর শুধু পড়া না। এখানে আমাকে খেয়ে পরে বেঁচেও থাকতে হবে। আর তার জন্য আমাকে কাজও করতে হবে।আমি সেদিন কথাটা এমনিতেই বলেছিলাম। কিন্তু তুনিড় ভাই যে তার উত্তরে এতো শক্ত কথা শুনিয়ে দেবে সেটা আমি ভাবিনি। তারপর আর আমি তুনিড় ভাইকে ফোন করতাম না। আশ্চর্য ব্যাপার সেও আমাকে আর ফোন দিতো না। দুদিন তিনদিন পর দায়সারা একবার ফোন দিতো।
তুনিড় ভাই বদলে গিয়েছিল সেটা বুঝতাম কিন্তু ঠিক বিশ্বাস করতে পারতাম না।
বিশ্বাস করতে পারতাম না বললে ভুল হবে বিশ্বাস করতে চাইতাম না।তুনিড় ভাইয়ের আচরণ দিন দিন পাল্টাতে শুরু করল। আর তার সাথে বাড়তে লাগল আমার ডিপ্রেশন। তুনিড় ভাই কি আমাকে ছেড়ে যাবে! তাহলে আমার কি গতি হবে! আমি যে তাকে বিশ্বাস করে সব সপে দিয়েছিলাম!
এই কথাগুলো শেয়ার করার মতো কেউ ছিলো না। বরাবরই নাক উঁচু স্বভাবের কারনে আমার মেয়ে বন্ধু কম ছিলো। তবুও দুই একজন ক্লাসমেট যারা ছিলো তাদের কাছে ব্যাপার টা শেয়ার করার পর তারা বলেছিল,
-দেখ পুরুষ মানুষ চোখের আড়াল হলে মনের আড়াল। এটা মুরুব্বি দের কথা। দেখ ওখানে গিয়ে কাকে না কাকে জুটিয়ে ফেলেছিল।আবার কেউ কেউ বলছিল, ওসব পড়াশোনার চাপ বুঝিস তুই! সারাদিন এই ক্লাস ওই ক্লাস, রিসার্চ, তারপর যদি সে পার্টটাইম জব করে তাহলে রেস্ট নেবার টাইম ই তো পায় না। প্রেম করার টাইম কোথায় পাবে!!