লাবণ্যপ্রভা
পর্ব -৭
১১.
আমি লেখার আগে প্রচুর সময় নিলাম। নিজের মন শান্ত করার জন্য নিয়মিত নামাজ ও মেডিটেশন করতে শুরু করলাম। মানসিক ভাবে কিছুটা মনোবল পাওয়ার পর লিখতে শুরু করলাম।লিখতে গিয়ে প্রথমে একটু দ্বিধায় পড়ে গেলাম। কিভাবে কি শুরু করবো বুঝতে পারছিলাম না। তাই ফারজানা মাহবুবের শরনাপন্ন হলাম। উনি আমাকে বললেন,
-আপনি আপনার মতোই লিখতে থাকুন লাবণ্য। তবে নিজের দোষ গুন সবটাই লিখবেন।আমি লিখতে শুরু করলাম। লেখার সময় আমি ইচ্ছে করেই কিছু বাড়তি ঘটনা যোগ করলাম। তবে নিজের দোষ চেপে গেলাম না।
আমার খালা নিজের খরচে বই বের করার সিদ্ধান্ত নিলেন। নতুন লেখকদের লেখা স্বাভাবিক ভাবেই প্রকাশক ছাপাতে চাইলেন না। কিন্তু খালা আমাকে সাপোর্ট করলেন। টাকা দিয়ে বই বের করার ব্যবস্থা করলেন।
বই বিক্রি হওয়া নিয়ে কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত ছিলাম আমি। তাই বুদ্ধি করে লিখে দিয়েছি যে এটা একটা মেয়ের জীবনের সত্যি ঘটনা। কিন্তু নিজের কথা বলিনি। আর বইয়ের চরিত্রের নামগুলোর মধ্যে তুনিড় ই ছিলো সত্যি নাম বাকিগুলো আমি বদলে দিয়েছিলাম। আর শেষ টাতেও রেখে ছিলাম ট্রাজেডি একটুখানি।
জীবনের মোড় কখন যে বদলায় কেউ বলতে পারেনা। বই বের হওয়ার বছর পাঁচেক আগেও আমি ভাবিনি যে আমার জীবন টা কয়েক মোড়ে বদলে যাবে।
এই বইটা লিখতে আমার সময় লেগেছিল ১১ মাস। যখন লিখছিলাম তখন মাথায় শুধু একটা ব্যাপার ই ঘুরছিল যে আমার জীবনের কালো অধ্যায় টা পুরো পৃথিবীকে জানাতে হবে। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা চেয়েছিলেন এখান থেকেই আবার নতুন করে লাবণ্যপ্রভার জীবন শুরু হোক।
এই বই থেকে সাড়ে তিন বছরে রয়েলিটি পেয়েছিলাম প্রায় চৌদ্দ লক্ষ টাকা। যেহেতু কলকাতায় প্রকাশিত হয়েছিল তাই এটা ইংরেজি ভাষার পাশাপাশি হিন্দিতেও প্রকাশিত হয়েছিল।
চারদিক থেকে পজিটিভ ফিডব্যাক পাচ্ছিলাম। অনেক চিঠি, মেসেজ অহরহ আসতে থাকল আমার কাছে। এই বই পড়ার পর অনেক মেয়ে ভালো মন্দের তফাৎ বুঝতে পেরেছে।