-"যার জন্য অপেক্ষা করছিস, সে কি আসবে?" তানু ঘাড়টাকে হালকা বাঁকিয়ে বললো।শুভ্রা হাসলো প্রতিবারের মতই। এরপর বললো,
-"আমার নিমন্ত্রণে তার আসতেই হবে এমনটা তো না। আমার মনে হয়েছে বললে সে আসবে তাই বলেছি।"
শুভ্রার কথায় যেন তানুর মাথায় দাউদাউ করে আগুন ধরে গেল। চটাস করে সে বলে উঠলো,
-"যার জন্য এত ভালো ভালো প্রস্তাব প্রত্যাখান করছিস সে তোর কতই বা কদর করে? আমি তোর ছোট হয়ে বিয়ে থা করে বসে আছি! এদিকে তুই দিনদিন আইবুড়ো হচ্ছিস আর সে দিব্যি গায়ে হাওয়া লাগিয়ে টই টই করে ঘুরে বেড়াচ্ছে!"
তানুর কথায় যেন শুভ্রার দু'কান গরম হয়ে গেল। এমনিতেই একশো দুই ডিগ্রী তাপমাত্রার জ্বর নিয়ে এই আর্ট এক্সিবিশনটা করছে। যত সম্ভব মাথা ঠান্ডা রেখে শুভ্রা বললো,
-"উফ তানু! আস্তে কথা বল। মানুষ শুনবে। তোর যদি এটা ছাড়া অন্য কিছু নিয়ে আলোচনা করতে ইচ্ছা হয় তাহলে করতে পারিস। তবে এটা না!"
-"বেশ! কথাই বলবোনা আমি আর। ঘাট হয়েছে আমার যে তোকে উপদেশ দিতে গেছি।"কথাটা শেষ করেই তানু আবারো বইয়ে মনযোগ দিলো। যদিও আড়চোখে শুভ্রাকে তখন ও দেখেই যাচ্ছে সে। শুভ্রা ঢেড় জানে যে তানু তাকেই দেখছে। সে ওটার তোয়াক্কা না করে এন্ট্রেন্সের দিকে আবারো দৃষ্টিপাত করলো। মৃদুল কি এবারেও আসবেনা? একবার এলে কি হয়? তার মনে হচ্ছে অক্সিজেন ফুরিয়ে গেছে এই জায়গায়। জ্বর বা কোনো এক অজানা কারণে তার চোখ থেকে একফোঁটা জল চিকচিক করে গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়লো। তার সবুজ বর্ণের চোখজোড়া আর গাড় হয়ে গেল। যথাসম্ভব দ্রুত সে হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে ওটাকে মুছে হাসতে চেষ্টা করলো এক ভদ্রমহিলাকে দেখে।
-"আসুন আসুন।"
-"আপনিই কি শুভ্রা সেন?"
-"জ্বী! আমিই শুভ্রা সেন।"
-"আপনার করা প্রতিটি চিত্রই তো বেশ শোভা পাচ্ছে এই এক্সিবিশনে।"
-"ধন্যবাদ!"
-"একটা সেলফি তুলতে পারি কি যদি অনুমতি দিন?"
-"এমা! আমার মতন তুচ্ছ একজনের সাথে ছবি তুলতে আবার অনুমতি? ফোনটা দিন তো। আমিই তুলে দিচ্ছি।"শুভ্রা তার স্নিগ্ধ হাসি হেসে বললো।