শুভ্রা বারান্দায় দাঁড়িয়ে বিকেল দেখছিল। আর ৬ দিন পর এই দেশ থেকে অনেক দূরে বরফে ঘেরা এক অচেনা শহরে ওর জীবন শুরু হবে। সেখানে এই বারান্দা আর আকাশ থাকবে না, ওর মা থাকবে না, বাবা থাকবে না, বন্ধু বান্ধব, আত্মীয় কেউ না। ও একা। ভাবতেই অদ্ভূত লাগছে। কষ্ট যে লাগছে না তা না, তবে এক্সাইটেড ও লাগছে। ও এই শহরে প্রচন্ড ক্লান্ত ছিলো। হয়ত এখন ই সময় নতুন কোমন জীবনের! শুধু যদি মন চাইলেই দেশে আসা যেত, বাবা মা কে দেখে আবার চলে যাওয়া! ইশশ..
বারান্দায় দাঁড়িয়ে এসব ভাবতে ভাবতেই নিচে একটা বিশাল গাড়ি দাঁড়াতে দেখলো। একটা কালো মার্সিডিজ। শুভ্রা বেশ অবাক হলো। যদিও ওদের এই এলাকা টা বেশ সম্ভ্রান্ত, কিন্তু এখানে মার্সিডিজ তো আগে দেখে নি! মার্সিডিজ থেকে নামলো কালো সানগ্লাস পড়া একটা ছেলে। লম্বা, ফরসা। জামা কাপড় এ আভিজাত্যের ছাপ স্পষ্ট। ছেলেটার হাতে একটা প্যাকেট। সে ওদের বিল্ডিং এই উঠছে। শুভ্রার কেন যেন মনে হচ্ছে ছেলেটা ওদের বাসায় ই আসছে। ভাবতে না ভাবতেই ইন্টারকম বেজে উঠলো। ওর মা ঘুমাচ্ছে। বাসায় আর কেউ নেই।শুভ্রা তাড়াতাড়ি ইন্টারকম ধরলো। শাদীদ নামক একজন ছেলে এসেছে ওর কাছে, দেখা করতে চায়। সামিন পাঠিয়েছে। শুভ্রা অবাক হলেও সামলে নিলো।
ড্রয়িং রুমে গিয়ে দাঁড়াতেই বেল বাজলো। শুভ্রার পরনে লাল একটা স্কার্ট আর কালো একটা টপস। বাসায় পড়ার কাপড়। শুভ্রা দরজা খোলার সময় একটু ইতস্তত করলো। তারপর কি আর হবে ভেবে খুলে দিলো।
"আপনি কি শুভ্রা?" ছেলেটা বললো।
"হ্যা। এন্ড আপনি? "
"আমি সামিনের ভাই। ইয়াংগার ব্রাদার!" বলে ছেলে টা সানগ্লাস খুললো।
শুভ্রা হাসলো "ভেতরে আসুন।"
ছেলেটা জুতা খুলে ভেতরে ঢুকেই দেয়ালে টাংগানো পেইন্টিং টার দিকে তাকালো।
"বাহ! আপনার আকা?"
"হুম।"
"চমতকার! আমি প্রচুর পেইন্টিং কালেক্ট করি। আমার হবি বলতে পারেন। আপনি কি পেইন্টিং সেল করেন?"
"শখের আর্টিস্ট তো। তেমন সেল করা হয় না। মাঝেমাঝে এক্সিবিশনে দিলে সেল করা হয়!"
"ওহ আই সি!"
"আপনি দাঁড়িয়ে কেন বসুন!"
"ইয়েস। বসছি! আপনাদের বাসা টা খুব সুন্দর সাজানো। একজন আর্টিস্ট এর বাসা বোঝা যায়!"
"হাহা, আর্টিস্ট রা তো ভীষণ এলোমেলো হয়! গোছানোর কাজ টা আম্মু ই করে। আমি শুধু অগোছালো করি!"
শাদীদ হাসলো। একটু থেমে বললো "এই প্যাকেট টা আপনার! সামিন দিয়ে গেছে। আজকে ওর ফ্লাইট জানেন বোধহয়! ওকে এয়ারপোর্ট এ ড্রপ করেই আসছি। আমি আসলে উপরে আসতে চাই নি। কিন্তু সামিন বার বার বলে দিলো যেন আপনার হাতেই দেই, তাই উপরে আসতে হলো!"
"এসেছেন খুব ভাল হলো। ইটস রিয়েলি নাইস টু মিট ইউ! উইল ইউ প্লিজ ওয়েট। ইউ লুক থার্স্টি!"
"নো ইটস ওকে। আমি শুড গেট গোয়িং!"
"না না প্লিজ একটু বসুন!"
YOU ARE READING
আমার তোমাকে কখনো পাওয়ার কথা ছিল না!
Romanceগল্প উপন্যাসে সবসময় দেখা যায়, যাকে ভাললাগে, সে ও ভালবাসা ফেরত দেয়।অথচ জীবন তো এমন নয়। যাকে ভালবাসা হয়, তাকে কি আদৌ পাওয়া যায়? নাকি সে থেকে যায় ধরাছোঁয়া এর আড়ালেই! শুভ্রার কারন ছাড়া ভালোলাগায় নিজের জীবনের কদর্য সত্য কে ভোলার আকুতি আর সামিনের নিজেকে...