পর্ব ১১

134 4 0
                                    

মিন্নিকে আজ দারুন লেগেছে, রেস্টুরেন্টে বারবারই সে জিজ্ঞেস করছিল কেন হঠাৎ রেস্টুরেন্টে দেখা করতে বললাম, উত্তরে শুধু বলেছিলাম দরকারি কিছু কথা আছে বলার। মিন্নি হ্যা বোধক মাথা নাড়ল শুধু।

ওদিকে মিন্নি ভেতরে ভেতরে নার্ভাস, সে জানে তাকে কেন আজ ডাকা হয়েছে। কিন্তু আশ্চর্য ব্যাপার হচ্ছে আদ্রিক আর কিছু না বলে খাবার অর্ডার করে এখন খাচ্ছে।

আদ্রিক: কি হলো বসে আছেন কেন? শুরু করুন। এখানে প্রতিটা মেনু কিন্তু খুবই ভালো খেতে।

মিন্নি: আপনি কি যেন বলবেন বলছিলেন...
আদ্রিক: ওহ হ্যা বলব। আগে খাওয়াটা শেষ করে নিই।

মিন্নি: .......... ওকে।

খাওয়া শেষে আদ্রিক তার কথা শুরু করল।
আদ্রিক: আজ আমার Lawyer কল করেছিল। ডিভোর্সের পেপার্স রেডি আর অন্যান্য ফর্মালিটিজ করা হয়ে গেছে, এখন শুধু আপনার সাইন দরকার। এখানে আসার আগে আমি সাইন করে ফেলেছি..

একথা বলেই আদ্রিক তার ল্যাপটপ ব্যাগ থেকে ডিভোর্স পেপার আর একটি কলম বের করে মিন্নির সামনে দিল।

মিন্নি ভাবে এ দিনটি তবে সত্যি এলো..
বন্দি পাখি আবার উড়বে খোলা আকাশে ডানা মেলে,...

এক ধরনের মিশ্র অনুভূতি তর মধ্যে জেগে উঠল, চোখের কোনে জমল একবিন্দু জল।
না এ জল কষ্ট বা দুঃখের নয়, বরং একটি আনওয়ানটেড সম্পর্ক থেকে মুক্তির।

মিন্নি কোন প্রকার কথা না বাড়িয়ে ডিভোর্স পেপারে সাইন করে দিল।
মিন্নি: আর কিছু কি করা লাগবে? মানে আর কোনো ফর্মালিটিজ??

আদ্রিক: উম একটা কাজ বাকি আছে...
একথা বলেই আদ্রিক তার ফোনে কি যেন করল... তার পরপরই মিন্নির ফোন বেজে উঠল "পিং" মিন্নি মেসেজ চেক করতেই আদ্রিক বলে উঠলো, " এটা আপনার হক। দেনমোহরানা।"
মিন্নি এবারেও নিশ্চুপ।

দুজনার মধ্যে আর কোনো কথা হলো না।

শুধু বাসায় ফিরে মিন্নি বলল, যেহেতু আমাদের ডিভোর্স হয়ে গেছে, তাই আমি আগামী দিনই চলে যেতে চাই, আর আমার মনে হয় এবার সবাইকে জানিয়ে দেয়া উচিত।
আদ্রিক মিন্নির কথায় সায় দিয়ে, ফ্রেশ হতে চলে যায়।

হাতমুখ ধুয়ে আদ্রিক রুম থেকে বেরিয়ে আসার পর মিন্নি ভাবে, এবার কি করবে, বাবা মায়ের কাছে যাবে নাকি অন্য কোথাও...
ওদিকে কিছুক্ষণের মাথায় আদ্রিকের মা বাবা রাগান্বিত স্বরে চিল্লাচিল্লির আওয়াজ আসে, মিন্নি বুঝতে কষ্ট হয় না তাদের রাগারাগির কারণ কি।

রাগারাগির আওয়াজ শুনতে শুনতে সে ঘুমিয়ে পরে।

পরদিন সকালে ভোর ঘুম থেকে উঠে মিন্নি লেগে যায় তার ব্যাগপত্র গোছাতে, তেমন বেশি কিছু নেই , কিছু শাড়ি, থ্রিপিস আর কিছু গহনা।
তাই তেমন বেগ পেতে হয়নি।

ঠিক সকাল ৯টায় মিন্নি সকালের চা-নাস্তা রেডি করে খাবার টেবিলে রেখে তার শাশুড়ি মা আর শশুর মশাইকে নাস্তা খেতে ডাকতে গেল। আসলে অভ্যাস বড্ড বাজে রকমের ব্যাধি। গত এক মাসে সব কিছু কেমন আপন হয়ে উঠেছে, শুধু বর টা বাদে।

একটু মন খারাপ হল মিন্নির।
আদ্রিক আর তার বাবা-মা ডাইনিং রুমে এসে ভ
বসতেই মিন্নি খাবার বেড়ে দেয়ে বলল, "মা কিছু কথা বলার ছিল। হয়তো আপনার ছেলে ইতিমধ্যে আপনাদের জানিয়েছে। আমি আজই বাবার বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।

আদ্রিকের মা কম্পিত ও লজ্জিত সুরে বললেন মা রে তোকে অনেক আশা নিয়ে এ বাড়িতে এনেছিলাম, কিন্তু তোর প্রাপ্য হক আর সম্মান দিতে পারি নি। ক্ষমা করিস মা, আর নিজের জীবনটাকে নতুনভাবে শুরু করিস।

মিন্নি জোর করে ঠোঁটের কোণে হাসি টেনে, তার শশুর শাশুড়িকে সালাম করে নিজের লাগেজ নিয়ে বেরিয়ে গেল। মাঝপথে আদ্রিক তাকে ডেকে থামালো।
............................
...........

মিন্মির বিয়ে  (Completed ✔️)Onde histórias criam vida. Descubra agora