।। পরম ঈশ্বর বিষ্ণু ।।

25 8 7
                                    

।। পরম ঈশ্বর বিষ্ণু ।।
-------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
বেদের মধ্যেই আমাদের সৃষ্টি কথা আছে যেমন তেমনি ভাবে আমাদের শেষ এঁর কথা আছে । একই ভাবে ভগবান এর কথা আছে, একই ভাবে সমান্তরাল মহা বিশ্বের কথা আছে। আবার কোথাও ৬৪ ডাইমেনশনের কথাও আছে যেমন, ঠিক একই ভাবে  আমাদের ন'টি গ্রহের কথা আছে । কোথাও আবার সেই অনন্তের রূপের বর্ণনা আছে। বিগ ব্যাং থিওরি থেকে সমান্তরাল মহা বিশ্ব এই তত্ত্ব আমরা বেদের মধ্যেও পাই। নাম আলাদা হতে পারে তত্ত্ব একি।
হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী আমাদের ব্রহ্মা আমাদের বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড এর সৃষ্টি কর্তা (ব্রহ্মা কে বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের গভর্নর বলা যেতে পারে)। শাস্ত্র মতে বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের বয়স হল  ৩১১.০৪ ট্রিলিয়ন বছর মানুষ জীবন। এখন চলছে ১৫৫.৫২১৯৭২৯৪৪ ট্রিলিয়ন বছর মানুষ জীবন।
ব্রহ্মার এক দিন আমাদের মানুষের ৪.৩২ বিলিয়ন বছর জীবন। ব্রহ্মার প্রত্যেক দিনকে ' কল্প' বলে। ঠিক একই ভাবে রাত ৪.৩২ বিলিয়ন মানুষ জীবন। ব্রহ্মা দিনের সময় বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের তৈরির কাজ করে। ব্রহ্মা আয়ু ১০০ বছর মানে ৩১১.০৪ ট্রিলিয়ান মানুষ জীবন। একে ' মহা কল্প' বলে। আর এই মহা কল্প হল বিষ্ণুর এক নিশ্বাস। বিষ্ণু হল সেই অনন্ত (supreme god or ultimate god)।

**( ব্রহ্মা দিন, রাত ও বছরের হিসাব বিস্তারিত জানতে হলে গুগল এ সার্চ করে নিন এখানে সংক্ষেপে দেওয়া আছে বুজতে অসুবিধা হলে ইন্টারনেটে দেখে নিন )

শাস্ত্রে আছে বিষ্ণু নাভি থেকে ব্রহ্মার সৃষ্টি হয় ।  শাস্ত্রে আছে বিষ্ণুর এক নিশ্বাসের সাথে হাজার হাজার বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড (universe) অস্তিত্বে আসে এবং প্রত্যেক বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের জন্য একটি ব্রহ্মা। বিষ্ণুর প্রশ্বাস এর সাথে সব বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড ভীতরে টেনে নেয় , সমস্ত ব্রহ্মার মৃত্যু হয়। এই চক্র চলতেই থাকে, এর শেষ নেই। শাস্ত্রে আছে সমস্ত ভগবান - মহা ঋষি সবাই বিষ্ণুর অবতার। বিষ্ণু থেকে যখন এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি হচ্ছে পুরোটাই বিষ্ণুর অবতার। মানুষ, পশু পাখি, গাছ পালা সব কিছু তে বিষ্ণু আছে । তাই বেদের মধ্যে বিষ্ণু বিরাজ মান। বেদ এর মানেই জ্ঞান আর জ্ঞান মানেই বিষ্ণু, যে যত জ্ঞানী হবে সে সেই অনন্তের কাছে পৌঁছাতে পারবে।
এর পিছনের বিজ্ঞান - বিগ ব্যাং থিওরি থেকে আমরা জানতে পারি এক বিন্দুতে মহা অ্যাটম শক্তিশালী হয় একটা সময় পর বিষ্ফোরন ঘটায় তার থেকে আমদের ব্রহ্মান্ডের সৃষ্টি হয়েছে । হিন্দু শাস্ত্রে ব্রহ্মা আমদের বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি করেছে , বিজ্ঞানের মহা অ্যাটম সেই বিন্দু শাস্ত্রে নাম ব্রহ্মা । আমাদের বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড প্রসারিত হচ্ছে (expand) , শাস্ত্রে ব্রহ্মা দিন যাকে কল্প বলে সেই সময়ই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড প্রসারণের কাজ করে।  সমান্তরাল মহা বিশ্ব থিওরি যার অর্থ আমাদের বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড এক মাত্র বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড নয়, আমদের বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড প্রসারণের জন্য অন্য বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের ক্রমশ কাছে আসছে ।  শাস্ত্রে আছে বিষ্ণু নিশ্বাস সাথে সাথে হাজার হাজার মহা বিশ্ব অস্থিত্বে আসে , যার সৃষ্টির কাজ করে ব্রহ্মা। এখান থেকে আমরা সমান্তরাল মহাবিশ্ব বা parallel universe এর তত্ত্ব পাই।
আটমের বিস্ফোরণের পর অস্তিত্বে আসে ইলেকট্রন, প্রোটন , হাইড্রোজেন গ্যাস, হিলিয়াম গ্যাস নেগেটিভ এনার্জি ও পজিটিভ এনার্জি যাঁদের মাধ্যমে আমাদের এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড  সৃষ্টি হয়েছে। বৈদিক শাস্ত্রে আমরা সূর্য্য দেবতা, বায়ু দেবতা, ইন্দ্র, রুদ্র  আরো অনেক দেবতা কথা জানতে পারি যাদের স্বর্গে দেবতা বলা হয় ,  যারা ব্রহ্মার পর এসেছে ।  মহাকাশ (স্বর্গ) প্রোটন, হাইড্রোজেন, হিলিয়াম, পজিটিভ ও নেগেটিভ এনার্জি বলছে এদের বেদ এ দেবতা বলা হয়েছে ।
হিন্দু বৈদিক শাস্ত্রে আমরা জানতে পারি  বিষ্ণুর রূপের কথা অবতারের কথা। পুরাণে বিষ্ণুর দশাবাতারের বর্ণনা রয়েছে। বিষ্ণুর এই দশ প্রধান আবাতারের মধ্যে নয় জনের জন্ম অতীতে হয়েছে এবং এক জনের জন্ম ভবিষ্যতে  কলিযুগের শেষলগ্নে হবে বলে হিন্দুরা বিশ্বাস করেন।
বিষ্ণু সহস্রনামে সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মার উক্তিতে বিষ্ণুকে "সহস্রকোটি যুগ ধারী" বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এর অর্থ, বিষ্ণুর অবতারগণ সকল যুগেই জন্মগ্রহণ করে থাকেন। অনুসারে, ধর্মের পালনএবং দুষ্টের দমন ও সাধু দের পরিত্রাণ এর জন্য বিষ্ণু অবতার গ্রহণ করেন। হিন্দুদের প্রায় সকল শাখাসম্প্রদায়ে, বিষ্ণুকে বিষ্ণু বা রাম, কৃষ্ণ প্রমুখ অবতারের রূপে পূজা করা হয়।
দশ অবতার গুল যথা ক্রমে :
১. মৎস্য - মাছরূপে সত্যযুগে অবতীর্ণ
২. কূর্ম - কচ্ছপের রূপে সত্যযুগে অবতীর্ণ
৩. বরাহ - বন্য শূকরের রূপে সত্যযুগে অবতীর্ণ
৪. নৃসিংহ - অর্ধনরসিংহরূপে সত্যযুগে অবতীর্ণ
৫. বামন - খর্বকায় বামনের রূপে ত্রেতাযুগে অবতীর্ণ
৬. পরশুরাম - পরশু অর্থাৎ কুঠারধারী রামের রূপে ত্রেতাযুগে অবতীর্ণ
৭. রাম - অযোধ্যার যুবরাজ ও রাজা রূপে ত্রেতাযুগে অবতীর্ণ
৮. কৃষ্ণ - দ্বাপরযুগে জ্যেষ্ঠভ্রাতা বলরাম সাথে অবতীর্ণ। ভাগবত পুরাণ অনুসারে দ্বাপরযুগে অনন্ত নাগের অবতার বলরাম রূপে কৃষ্ণের সঙ্গে অবতীর্ণ হন। অধিকাংশ বৈষ্ণব শাখাসম্প্রদায় বলরামকে বিষ্ণুর অবতার বলে মনে করেন। যে সকল সূত্রে বুদ্ধের কোনো উল্লেখ নেই সেখানে বলরামকেই বিষ্ণুর নবম অবতার রূপে দশাবতারের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
৯. বুদ্ধ - কলিযুগে বিষ্ণুর নবম অবতার হিসেবে অবতীর্ণ।
১০. কল্কি - এই ভবিষ্যৎ অবতার কলিযুগের শেষ পর্বে অবতীর্ণ হবেন বলে হিন্দুরা মনে করেন। ( আরো জানতে হলে ইন্টারনেট ব্যবহার করুন)

|| সৃষ্টি ||Where stories live. Discover now