ক
নুসাইবার সারা রাত প্রচন্ড জ্বরে কাটল। এই জ্বরের মধ্যে ড্রয়িংরুমের বমি পরিষ্কার করল। ওর মনে হচ্ছে এই বমি যেন সাক্ষাত মুন্সীর চিহ্ন বহন করছে। যতক্ষণ না ধুয়ে মুছে বমির চিহ্ন শেষ করছে ততক্ষণ মুন্সীর চিহ্ন ঘর থেকে যাচ্ছে না। জ্বর আর পরিশ্রমে ক্লান্ত হয়ে শেষরাতের দিকে প্যারাসিটিমল আর ঘুমের ঔষুধ খেয়ে ঘুম দিল। ঘুম ভাংগল বেরা বারটায়। ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখে অসংখ্য মিসকল। অফিস থেকে কিছু মিসকল, কয়েকটা ম্যানেজারের ফোন থেকে আর কয়েকটা ম্যানেজারের যে ছেলেটা সকালে ওর সাথে অফিসে যায় তার মোবাইল থেকে। আর একটকা ফোন নাম্বার অচেনা। দরজায় প্রচন্ড জোরে নকের শব্দ। শরীরটা কোন রকমে টানতে টানতে দরজার কাছে নিয়ে গেল। পিপহোল দিয়ে বাইরে তাকাতেই দেখতে পেল ম্যানেজারের ছেলেটা। দরজা খুলতেই ছেলেটা বলল ম্যাডাম সব ঠিক আছে? নুসাইবা একবার ভাবল মুন্সীর কথা বলবে কিনা। তবে পরক্ষণেই ভাবল মুন্সীর কথা কি বলবে আসলে? মুন্সী যা করেছে সেটা কি আসলে বলা যায় অন্য কাউকে? নুসাইবা বলল জ্বর আসছে তাই আজকে একটু বেলা করে উঠছি। অফিসে যাব না আজকে। ছেলেটা বলে ওকে ম্যাডাম, আমরা আবার ভয়ে ছিলাম। আপনার কিছু দরকার হলে বলবেন। যদি ডাক্তার লাগে বলবেন। ছেলেটার সাথে আর কিছু কথা বলে দরজা লাগিয়ে দিল।
দরজা লাগিয়ে ভিতরে আসতে না আসতেই আবার ফোন বেজে উঠল। অচেনা ফোন নাম্বারটা। রিসিভ করতেই ঐপাশ থেকে পরিচিত গলা কেমন আছেন ম্যাডাম? আজকে অফিসে যাবেন না? কালকে বেশি করে ফেললাম নাকি? এই বলেই খিক খিক করে একটা হাসি। নুসাইবার মনে হয় যেন আবার জ্বর এসে যাবে এই গলার স্বর শুনলে। নুসাইবা বলে আপনি? মুন্সি বলে কেন ম্যাডাম আর কে ফোন করার কথা ছিল? আরশাদ সাহেব? একটু তাড়াতাড়ি করেন তো, উনার সাথে আমার একটা কথা বলার ব্যবস্থা করে দেন। নুসাইবা বলে বিশ্বাস করেন আমার সাথে আরশাদের কোন কথা হয় না কিছুদিন। মুন্সী বলে আরে সেইটা বিশ্বাস করছি বলেই তো গতকাল অল্পতে চলে আসছি নাহলে এমন মজা কি সহজে ছাড়া যায় বলেন ম্যাডাম। আপনি ছাড়তে পারতেন এমন একটা সুযোগ। মুন্সীর কথা নুসাইবার শরীরে একটা ঘিন্না ছড়ায়। মুন্সী বলে ম্যানেজারের ছেলেটা আপনাকে কি বলল ম্যাডাম? নুসাইবা চমকে যায়, বলে আপনি কিভাবে জানলেন। মুন্সি বলে জানতে হয় ম্যাডাম। এটাই আমার বিজনেস। এইটা না জানলে কি কালকে রাতে আপনার বাসা পর্যন্ত আসতে পারতাম। আপনার বিল্ডিং এর গেট কেউ পার হলেই আমার কাছে খবর চলে আসে। এইটুকু যদি করতে না পারতাম তাহলে ম্যানেজারের মত রাঘব বোয়ালের হাতের তলা দিয়ে আপনার কাছে আসার সাহস পেতাম? বলেন? ম্যানেজারের ছেলেটা আমার কথা বলছেন ম্যাডাম। নুসাইবা মৃদু স্বরে বলে না। মুন্সী খিক খিক করে হেসে উঠে। বলে আপনি বুদ্ধিমান আমি জানতাম। আমাদের এইসব কথা কি সবাই কে বলা যায় বলেন। আর ম্যানেজার যে রাগী লোক দেখা গেল আপনার মাথায় একটা গুলি ঠুকে দিল। আর সব এমন ভাবে সাজাবে যে পরের দিন পত্রিকায় রিপোর্ট আসবে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিডির আত্মহত্যা। আমি আবার সহজে এইসব খুন খারাপিতে যাই না। আর আপনার মত একটা সরেস মহিলা কে মেরে ফেললে আনন্দ কই বলেন। আপনি বেচে থাকলে তো আমার লাভ কি বলেন? গতকাল রাতের কথা চিন্তা করেন। আপনি কিছু না কইরাই যে আনন্দ দিছেন সেইটা তো অন্য কেউ কাপড় খুললেও দিতে পারত না। মুন্সীর কথার ইংগিতে নুসাইবার গা ঘিন ঘিন করে। মুন্সী বলে যাই হোক মনে রাইখেন কিন্তু। ম্যানেজাররে বললে পরে ম্যানেজার কি করবে কেউ জানে না। আপনি খালি আমারে আরশাদ সাহেবের সাথে কথা বলার ব্যবস্থা করে দেন। নাইলে উনার ফাইলপত্র যোগাড় করে দেন। বাকিটা আমি দেখব। মনে রাখবেন আমারে বেশিদিন অপেক্ষায় রাখলে কিন্তু আমার আবার আপনার সাথে দেখা করতে হবে এই বলে হাসতে থাকে। অবশ্য সেটা খারাপ না। আপনার সাথে এক একটা অভিজ্ঞতা এক কোটি টাকার থেকে দামী। এই বলে আবার হাসতে থাকে। নুসাইবার গা গুলিয়ে উঠে। মুন্সী বলে যা করার তাড়াতাড়ি করেন ম্যাডাম। এই বলে ফোন রেখে দেয়।
YOU ARE READING
অঘটনঘটন পটিয়সী (প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য)
Fantasyএক প্রেমিক এবং এক প্রেমিকা। তাদের প্রেমের বাধা প্রেমিকার পরিবার এবং তাদের সামাজিক অবস্থান। বাংলা সিনেমার হিরোদের মত অসাধ্য সাধনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ তাই প্রেমিক। যে করেই হোক প্রেমিকার বোন, ফুফু এবং মায়ের মন জয় করতে হবে প্রেমিক কে।