ঘরে ঢুকতেই জানালা দিয়ে দমকা হাওয়া এসে ওর মুখের উপর আছড়ে পড়লো।
রুমটা অন্ধকার, তবে মোমের আলোয় ঘরটাকে হলদেটে লাগছে।
চারপাশে মোম দিয়ে সাজানো হয়েছে তার বাসর ঘর। কিন্তু এই ঘর সাজানোর মানে কি? এসব সাজিয়ে গুছিয়ে লাভ কি যেখানে ও এই বিয়েতেই নারাজ ছিল?রুমের জানালা দিয়ে চাঁদটা খুব ভালোভাবে উঁকি দিচ্ছে। জানালার সাদা পাতলা পর্দাগুলো বাতাসে উড়ছে। মনে হয় ঝড় আসবে। আশে পাশে বাতাসের শোঁ শোঁ শব্দ ।
কিছুদূর এগুতেই ঘরের এক কোণে রাখা একটা গদি সোফায় অদ্রিকে পায়ের উপর পা তুলে বসে থাকতে দেখলো। একটা বাটিতে করে আইসক্রিম খাচ্ছে।
অভ্র পাঞ্জাবীর বোতামগুলো খুলতে খুলতে অদ্রির দিকে গেলো। হতাশ ভঙ্গিতে সে জিজ্ঞেস করলো,
-'কাজটা তুই ঠিক করলি কিনা একবার ভেবে বল।'-'শোন আমি যা করেছি তা নিয়ে মাথা ঘামাইস না। ৯০ দিন পর আমরা নিজেদের রাস্তায় নিজেরা হাটবো।'
-'কিন্তু আমি কিছুই বুঝলাম না। তুই বিয়েই বা কেন করলি? তোর সাথে আমার ভেগে গিয়ে ঢাকায় যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন তুই বিয়ে করে বসে আছিস?'
আইসক্রিম খাওয়া বাদ দিয়ে সে সোফার পাশের ছোট্ট টেবিলটায় আইসক্রিমের বাটিটা রেখে দিলো। অভ্রর থেকে ৪ ইঞ্চি দূরে এসে দাঁড়িয়ে বলল,
-'আমি যাই করেছি না কেন, জিদের বশে করেছি। এখন এটা নিয়ে কোনো ডিসকাশন করতে আমি ইচ্ছুক নই। তোর ঘুম পাইলে ঘুমিয়ে পড়। আমি এসব জঞ্জাল খুলে যে কোনো জায়গায় শুয়ে পড়বো।'
-'প্লীজ আমার জানা দরকার।'
-'সময় হলে জানতে পারবি।'
বলেই সে আইসক্রিমের বাটিটা হাতে নিয়ে আবার আগের জায়গায় বসে খেতে লাগলো।
অভ্র রাগের মাথায় পায়ের সামনে পড়ে থাকা একটা অটোমানে লাথি মারতে যায়, কিন্তু সে ভুলে খাটের কোণায় লাথি মেরে বসে। ব্যাথায় চোখ মুখ বুজে 'উহহ' শব্দ বের হয়ে এলো।
অদ্রি মুখ ঢেকে হেসে ফেলল ওর কাণ্ড দেখে। অভ্র আবার চেঁচিয়ে বলল,
YOU ARE READING
মেঘের পাহাড়
Romanceএকটি অপ্রত্যাশিত ব্যক্তি যখন কাছের মানুষে পরিণত হয়, তখন মনে হয় এই পৃথিবীতে কত কিছুই না সম্ভব। কিন্তু তাদের কেউই এটা চায়নি। দুইজনেরই আলাদা আলাদা পছন্দের মানুষ থাকা স্বত্ত্বেও একে অপরের সাথে জড়িয়ে গেলো। এক পর্যায়ে নিজেদেরকে একে অপরের কাছে বোঝা মনে হত।...