অদ্রি আর অভ্র দুজন ফ্রেশ হয়ে এসে খেতে বসতে বসতে সাড়ে তিনটা বেজে গেল। আজকের মেন্যুতে ভাত, রূপচাঁদা মাছ ভাজা, রুই মাছের তরকারি, ডাল আর পেঁপে ভর্তা।
মিষ্টি আর ঝালের সংমিশ্রণের এই ভর্তাটা খেতে বেশ ভালোই লাগছে অদ্রির। আগে কখনও খায়নি। দুজনে পেট ভরে খেয়ে নেয়ার পর নানী আস্তে আস্তে হেটে এসে বলল,
-'তুমরা একটু রেস্ট লও। আজগোয়া কত দূরেত্তে আইছো।'
অদ্রি দ্রুত উঠে দাঁড়িয়ে নানীর কাছ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে বলে,
-'আহা, নানী এত কষ্ট করে হেটে আসলেন কেন? আমরাই তো যেতাম আপনার কাছে।'
-'না না, আমার পরাণ আইছে আমি হেনো বইয়া থাহি কেমনে?'
নানীকে নিয়ে ধিরে ধিরে ডাইনিং টেবিলে বসায় অদ্রি। কেন জানি এই দৃশ্যটা দেখে অভ্রর খুব ভালো লাগে। একটা আলাদা প্রশান্তি অনুভব করে মনে মনে।
-'ও পরীর মা, হেরারে সেমাই খাইতে দিছো?'
-'হ, খালাম্মা দিতাছি।'
অভ্র বলে উঠলো,
-'কাকী আবার সেমাই রানলা কখন?'
-'এইতো সকালেই রান্না করছিলাম।'
অদ্রি বলে উঠলো,
-'আচ্ছা নানু ভাইকে দেখছি না যে?'
নানী উত্তরে বলে,
-'তুমার নানু ভাইতো একটু বাজারে গেছে। অহনি আয়া পড়বো।'
অভ্র কাকীর উদ্দেশ্যে জিজ্ঞেস করলো,
-'ও কাকী, সকালে নানু ভাইরে ঔষধ দিছিলা?'
-'হ, দিছি তো বাজান।'
অদ্রির হঠাৎ মনে প্রশ্ন জাগে আর তা মুখে বলে দেয়,
-'আচ্ছা, তুই উনাকে কাকী ডাকিস কেন?'
অভ্র হাসলো,
-'ওহ আচ্ছা, উনি আসলে আপন কাকী না আমার। এখানেই থাকে আমার নানা নানীর সাথে। আমকে ছোট কাল থেকেই খুব আদর করতো। তো ছোট বেলায় আমাকে মামী বলা শিখালেও মুখ ফসকে কাকী বলে ফেলতাম। তাই এখন কাকীই ডাকি।'
-'ওহ আচ্ছা।'
নানী বলে উঠলো,
-'আমার এই ভাইডা আমার জান পরাণ। সেই ছুডু বেলা হের বাপ মায়ের লগে আইতো। দৌড়ায় আমার কোলে উঠতো আগে।'
YOU ARE READING
মেঘের পাহাড়
Romanceএকটি অপ্রত্যাশিত ব্যক্তি যখন কাছের মানুষে পরিণত হয়, তখন মনে হয় এই পৃথিবীতে কত কিছুই না সম্ভব। কিন্তু তাদের কেউই এটা চায়নি। দুইজনেরই আলাদা আলাদা পছন্দের মানুষ থাকা স্বত্ত্বেও একে অপরের সাথে জড়িয়ে গেলো। এক পর্যায়ে নিজেদেরকে একে অপরের কাছে বোঝা মনে হত।...