পালিয়ে বেড়াই

1.8K 76 38
                                    

পার্থ বাবু চোখ খুললেন। প্রায় চার ঘণ্টা পর জ্ঞান ফিরল তার। তিনি এক ফ্ল্যাট এর মেঝেতে পরে ছিলেন এতক্ষণ ধরে। চোখ খলার পরই তিনি বুঝতে তে পারলেন যে তার মাথার পেছন দিকটা ব্যাথায় ফেটে পরছে,সাথে এটাও বুঝতে বাকি রইলনা যে তাকে কোনও কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে মাথায় । লক্ষ করলেন তার জামা কাপড় ভেজা। বাইরে থেকে বৃষ্টির শব্দ বাকি অন্য শব্দ গুলো কে কানে তার ঢুকতে দিচ্ছে না। জানলার দিকে তাকালেন তিনি, বুঝলেন যে মোটামুটি তিনি চার তালায় তো আছেনই। অথচ ঘরের ভেতর টা তাঁর কাছে বেশ অপরিচিত। ঘড়ে খালি একটা জিরো পাওয়ার এর বাল্ব জ্বলতে থাকায় ভেতরের পরিবেশ টা বুঝে উঠতে পারছেন না তিনি। ইতিমধ্যেই তাঁর বুক কাঁপতে শুরু করে দিয়েছে। তিনি আগের ঘটনা মনে করার চেষ্টা করলেন। নাহ! কিছুতেই মনে পরছেনা! যাইহোক আগে ঘরের লাইট জ্বলানো দরকার। তিনি উঠে দাঁড়ালেন। তার মাথা ফেটে গেছে। ঊফফ কী অসহ্য যন্ত্রণা! লাইট জ্বালানোর আশা নিয়ে তিনি অন্ধকারের মধ্যেই সুইচ বোর্ড এর উদ্দেশ্যে লক্ষভ্রষ্টদের মত এদিক ওদিক হাতড়াতে শুরু করলেন। হটাতই তার পায়ের নীচে তরল পিচ্ছিল কিছু একটা পড়ায় তিনি নিজের ভারসাম্য আর রাখতে পারলেন না। উল্টে পরলেন ঠিক কিছু একটার ওপরে। একমিনিট এটা তো একটা মানুষ এর শরীর মনে হচ্ছে! লোকটা কি অজ্ঞান ?নাকি মারা গেছে? নাহ! এটা একটা মহিলার দেহ! গোঁটা গা ভেজা! সম্ভবত রক্ত! নিজেকে সামলে নিয়ে তিনি মহিলাটিকে জাগানোর চেষ্টা করলেন! বৃথা চেষ্টা! হঠাৎই পার্থ বাবুর নিজের বুক পকেট এ থাকা মোবাইল এর কথা মনে পোড়ে গেল।'ওঁটাতেও তো টর্চ রয়েছে। যাক ভালো সময়য়েই মনে পরেছে।' পার্থ বাবু মনে মনে ভাব্লেন। নিজের পকেট থেকে মোবাইলটা বের করলেন টর্চ জালিয়ে তিনি যা দেখলেন তা পার্থ বাবুর কাছে নরকের সবচেয়ে ভয়াবহ জিনিস এর ভয়াবহ মনে হল! তাঁর সামনে যে দেহ টা পরেছিল সেটা কে নির্মম ভাবে খুন করা হয়েছে। মাথা তে বারবার কিছু দিয়ে আঘাত করার ফলে মাথা পুরপুরি থেঁতো হয়ে গেছে আর গোঁটা শরীর জুড়ে একাধিক চাকুর দাগ স্পষ্ট। কি ভয়াবহ! এটা কোনও মানুষের কাজ ভেবেই তার শরীর শিউরে উঠল। সত্যি যে বা যারা তাকে খুন করেছে তার সাথে পশুর কোনও তফাৎ নেই। তিনি আবার পুরো ঘটনা মনে করার চেষ্টা করলেন, কিন্তু কিছুই তার মনে পরছেনা। হঠাৎ দরজা খলার একটা আওয়াজ এল। পার্থ বাবু ভয়ে দমরে গেলে। তার গা হাত পা কাঁপতে শুরু করলো। কে এলো? এটা সেই খুনিটা না তো? এবার কি তবে তার পালা? তাকে কি তাকেও নির্মম ভাবে শেষ অবধি মরতে হবে? না তিনি এত তারাতারি মরতে চাননা। পার্থ বাবু টর্চ এর আলোতে উঠে দারালেন আর লুকনোর জাইয়গা খুঁজতে আরম্ভ করলেন। শেষ অব্ধি তিনি আর জায়গা না পেয়ে খাটের তলে লুকলেন আর মোবাইল এর আলো বন্ধ করে দিলেন।

সাইকোপ্যাথিWhere stories live. Discover now