আশ্রয়

772 36 2
                                    

অরুন বাবু তার স্ত্রী আর কন্যা কে নিয়ে একাই থাকেন । পেশায় তিনি এক অফিস কর্মচারী । কলকাতায় কলেজ স্ট্রিটএ এক ফ্ল্যাটের গ্রাউন্ড ফ্লোরে তার এপার্টমেন্ট । কলেজে আরুন বাবু আর পার্থ বাবু একসাথেই পরতেন। একজন এর ইংরাজি আরাকজন ইকনমিক্স । তখন থেকে একসাথে ঘোরা, আড্ডা , থিয়েটার দ্যাখা এসব। কলেজ পার করে দুজন আলাদা পেশায় চলে আশার পর দ্যাখা সাক্ষাৎ যদিও কমে গেছে কিন্তু বন্ধুতে ছেদ পরেনি। প্রায় মাঝে মাঝেই ফোনে একে অপরের খবর নেন তারা। কিছুদিন আগেই পার্থ বাবুর নেমন্তন্নও ছিল আরুন বাবুর কলেজ স্ট্রীট এর নতুন বাড়িতে। পার্থ বাবু এখনও অবধি বিয়ে না করায় একাই এসেছিলেন সেদিন।

তখন রাত একটা ,অরুন বাবুর স্ত্রী তার মেয়ে পাখি কে ঘুম পারিয়ে নিজের ঘরে শুতে যাচ্ছিলেন। অরুন বাবু ইতিমধ্যেই ঘুমিয়ে পরেছেন! হঠাৎ ই বাড়ির কলিং বেলটা বেজে উঠল। অরুন বাবুর ঘুম ভেঙ্গে গেল। বিরক্তির সুরে তিনি বললেন 'এত রাতে আবার কে এলো রে বাবা।' এখন অনেক রাত তাই স্বাভাবিক ভাবেই তাকেই বিছানা থেকে উঠে দরজা খুলতে যেতে হবে। বিরক্তিকর।বিছানা থেকে নেমে তিনি দরজার সামনে গেলেন। কিন্তু দরজা খুলেই তিনি যে এমন এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে পড়বেন তা তিনি আগে কখনো কল্পনাও করতে পারেননি ।

''আমাকে বাচান দাদা। ওরা আমায় মেরে ফেলবে, বাচান দয়া করে। ওরা পশু ওরা ঐ মহিলাটাকেও খুন করেছে, এবার আমাকেও করবে"

আরুন বাবু লোকটার চেহারা দ্যাখা মাত্র বুঝতে পারলেন এটা আর তার বন্ধু পার্থ বাবু ছাড়া আর কেও নন। একি অবস্থা তার। গোঁটা গা রক্তে ভেজা, যেন কোন পরাজিত সৈনিক যুদ্ধ ক্ষেত্র থেকে কোনমতে প্রাণ বাঁচিয়ে ফিরেছে। আরও একটু ভালো মত করে দেখতেই তিনি বুঝতে পারলেন যে তার বাঁ হাতে গুলি লেগেছে, আর সেখান থেকেই ক্রমাগত রক্ত ঝরছে।

'কিরে? একি হাল তোর? কে খুন করবে তোকে? হাতে গুলি লাগলো কি করে? আর দাদা দাদাই বা বলছিস কেন আমায়?" সাথে সাথে এতগুলো প্রশ্নের দ্বারা বিমল বাবু আরুন বাবু কে ঝাঁজরা করে দিল।

'আমায় বাচান দয়া করে' এই বলেই সেই মুহূর্তে পার্থ বাবু অজ্ঞান হয়ে পরলেন!

সাইকোপ্যাথিWhere stories live. Discover now