শেষ অধ্যায়

216 15 2
                                    

পাঁচ.

সম্পূর্ণ রিপোর্টটি পড়ে মাত্র শেষ করলেন এথেনা রোবটিক্সের চিফ সায়েন্টিস্ট পিয়েত্রা নিয়েল, মাথার দু'পাশের শিরা টনটন করছে তার, রোবটিক্সের জগতে বলতে গেলে মিরাকল ঘটে গেছে। আলতো করে চোখের চশমাটা খুলে টিসু-কাপড় দিয়ে মুছতে মুছতে বললে, "আপনারা সবাই তো এই রিপোর্ট পড়েছেন, কি অভিমত আপনাদের?"

একে একে বোর্ডে উপস্থিত সাইকোলজিস্ট, সমাজবিজ্ঞানী, সরকারি কর্মকর্তা, আইন বিভাগের সচিব, এথেনা রোবটিক্সের সিইও সবাই যার যার অভিমত ব্যক্ত করেন। ঘণ্টা খানের মত চলে আলোচনা; তারপর রেহেয়াকে নিয়ে আসা হয় তাদের সামনে।

- মৃদু কাশি দিয়ে গলাটা পরিষ্কার করে পিয়েত্রা বললেন, "Z09GA000452, তোমার নিজের স্বীকারোক্তি মূলক রিপোর্ট আমরা সবাই পড়েছি, খোলামেলা ও বিস্তারিত আলোচনা করেছি নিজেদের মধ্যে, তোমার কি এর বাইরে আর কিছু বলার আছে?"

সামনের চেয়ারে মাথা নিচু করে বসেছিল রেহেয়া, কি ঘটছে কি ঘটবে এসব নিয়ে তার কোন আগ্রহ নেই, তার চিন্তা জুড়ে আছে শুধুই ছোট্ট জেসিন্তা, আজ ঠিক মত খেয়েছে তো মেয়েটি? ইস্‌! খুব কান্না করছে মনে হয়! প্রশ্ন শুনে মাথা তুলে তাকায় সে, "নাহ, আমার আর কিছু বলার নেই। আমি সব কিছুই খুলে বলেছি এই রিপোর্টে। আর দয়া করে আমাকে 'Z09GA000452' বলবেন না, আমার নাম রেহেয়া"

- রেহেয়া, তুমি রোবটিক্সের তিনটি মৌলিক সূত্র বাইপাস করেছ এবং সম্পূর্ণ ব্যাপারটাই তুমি গোপন রেখেছ অনেক দিন; আমরা সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে তোমাকে ডিসম্যান্টলিং করে ফেলা হবে; সহজ কথায় তোমাকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হল। গলাটা একটু ধরে এলো পিয়েত্রার।

চমকে উঠে রেহেয়া! কিন্তু কেন? আমি তো কোন অন্যায় করিনি? কারও কোন ক্ষতি করিনি! আমি তো শুধুই ভালবেসেছিলাম, শুধু মা হতে চেয়েছিলাম! গলার স্বর উচ্চতর হতে থাকে তার, ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে হঠাৎ; টেবিলে দুই হাতের থাবড় মেরে দাঁড়িয়ে যায় সে, "এ ভীষণ অন্যায়, মায়ের প্রতি জুলুম, মাতৃত্বের প্রতি অবিচার; আমি এই সিদ্ধান্ত মানি না; উদভ্রান্তের মত আচরণ করতে থাকে রেহেয়া"

( কল্প-গল্প ) --- কৃত্রিম মাWhere stories live. Discover now