পর্ব - ৩

193 15 0
                                    

৪.

নেশা গ্রস্হের মত সারাদিন কাজ করে যাচ্ছে রিশান, তার মাথায় একটাই চিন্তা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পিয়েলার ইন্দ্রিয়গুলোকে সক্রিয় করতে হবে। কলিং-বেলের শব্দে সংবিৎ ফিরে পায় রিশান, হঠাৎ করে সতর্ক হয়ে যায় সে, হাজারটা চিন্তা তার মাথায় আসতে থাকে, তার খোঁজে কে আসলো এই নির্জন প্রান্তরে?

দরজায় খুলেই সে দেখে একজন সুদর্শন যুবক মুখের মিটিমিটি হাসি নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে। রিশান জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তার দিকে তাকালে সে বলে, " স্যার, আপনি কি মিস্টার রিশান ক্লোস্টা?"

রিশান মাথা নেড়ে সম্মতি দিলে সে বলে, " স্যার, আপনার মাসিক অর্ডার ছিলো আমাদের কোম্পানিতে, আমি সেগুলো ডেলিভারি দিতে এসেছি " ।

চেপে থাকা নিঃশ্বাসটা ছেড়ে ডেলিভারি বয়কে স্টোররুমটা দেখিয়ে রিশান বললো , " এইখানে সব কিছু রেখে যান, আমি রিসিভ লগে সাইন করে দিচ্ছি" । আসলে রিশান কাজের চাপে ভুলেই গিয়েছিলো যে, এই কোম্পানিকে দায়িত্ব দিয়েছিলো তার প্রয়োজনীয় সবকিছু প্রতি মাসের প্রথম তারিখেই পৌঁছে দেওয়ার জন্য।

ছেলেটা একটা একটা করে বক্স ভ্যানগাড়ি থেকে নামিয়ে স্টোররুম পর্যন্ত নিয়ে আসছে আর ফাঁকে ফাঁকে রিশনের সাথে কথা বলছে ।

- স্যার কি বাসায় একা থাকেন ?

হুমম।

- এই নির্জন জনবসতিহীন জায়গায় থাকতে ভয় করে না ?

নাহ্ ।

- স্যার কি বিয়ে করেছেন ?

এইবার রিশান একটু চটে যায় । চোখেমুখে গম্ভীর ভাব ফুটিয়ে তুলে কঠোরভাবে সে বলে , " আপনি কথা কম বলেন, জলদি কাজ শেষ করে এখান থেকে বিদায় হোন" ।

- ছেলেটা এই রকম ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত ছিলো না, কিছুটা থতমত খেয়ে চুপ মেরে যায়, তার পরপরই মুখে হাসি হাসি ভাব ফুটিয়ে তুলে বলে , " স্যার আমার নাম, ভ্লাদিমির, এখন থেকে প্রতি মাসে আমিই আপনার প্রয়োজনীও জিনিস নিয়ে আসবো।"

রিশান বুঝতে পারে শুধু শুধুই একটু উত্তেজিত হয়ে গিয়েছিলো, এবার নরম সূরে বলে, " ঠিক আছে, আমি তো একা মানুষ, তাই প্রতিবার আসার আগে আমাকে একটা ফোন করে আসবেন, এই নিন আমার নাম্বার"

যতক্ষণ পর্যন্তভ্লাসিমিরের ভ্যান চোখের আড়াল হয় ততক্ষণ পর্যন্ত রিশান রাস্তার দিকে তাকিয়ে ছিলো, তারপর বাড়ির চারদিকে একবার আলতো করে চোখ বুলিয়ে দরজালাগিয়ে সে আবার ল্যাবরেটরিতে ঢুকে যায় । 

(কল্প-গল্প) - রোবসেপিয়ান্সের ভালোবাসাWhere stories live. Discover now