৬.
এইবার শুরু সবচেয়ে কঠিন পর্যায়, পিয়েরার কপোট্রনে মানবীয় আবেগগুলোকে একে একে প্রবেশ করাতে হবে। এই বিষয়ের উপর অনেক বছর ধরেই গবেষণা হচ্ছে, তবে প্রয়োগ এখন পর্যন্ত শুরু হয়নি, এই প্রায় অসম্ভব কাজটি রিশানকে করতে হবে। মানুষের সবগুলো ইন্দ্রিয় অগ্রাহ্য অনুভূতিগুলোকে পাঁচটি মৌলিক
অনুভূতিতে ভাগ করা যায় আনন্দ, মহত্ত্ব, ভালোবাসা, বিশ্বাস ও মমতা । সবগুলোকে কোপোট্রনে একসাথে প্রবেশ করানো যাবে না, এতে কোপোট্রন বিকল হয়ে যেতে পারে । আবার প্রতিটি মৌলিক অনুভূতি সমীকরণের সমাধানগুলোর ঋণাত্মক মানগুলো ঐ অনুভূতির বিপরীত অনুভূতি নির্দেশ করে। যেমন আনন্দের ঋণাত্মক মানের জন্য যে অনুভূতির জন্ম হয় সেটা হলো বেদনা । তেমনি মহত্ত্ব-ঈর্ষা, ভালোবাসা-ঘৃণা, বিশ্বাস-অবিশ্বাস ও মমতা-হিংস্রতা সর্বমোট পাঁচ জোড়া মৌলিক অনুভূতি নিয়ে মনুষ্যত্ব। মানুষের আরও অনেক অনুভূতি আছে যেমন সুখ, রাগ, অনুরাগ, বিষাদ, ভয়, বিরক্তি তবে এই অনুভুতিগুলো পাঁচটি মৌলিক অনুভূতির যৌগিক অবস্থা। যেমন, ভালোবাসা-বেদনা-অবিশ্বাস এই তিনটি মৌলিক অনুভূতি বিভিন্ন অনুপাতে ক্রিয়াশীল হয়ে তৈরী হয় নতুন অনুভূতি "অনুরাগ", তেমনি মমতা-অবিশ্বাস-ঘৃণা-ঈর্ষা মিলে হয় "বিষণ্ণতা" । এইসব মানবীয় আবেগ সম্পর্কিত সমীকরণ গুলো রিশানের নখদর্পণে, এখন শুধু দরকার সময় আর একটু ভাগ্য।
আজ পিয়েলাকে প্রথম মৌলিক জোড়া অনুভূতি "আনন্দ-বেদনা" প্রবেশ করাবে রিশান, সে কম্পিউটারে পর্যাপ্ত ডাটা দিয়ে সিমুলেশন করেছে, চমৎকার আউটপুট, এখন বাস্তবে ঠিকঠাক মত কাজ করলেই হয়।
পিয়েলা ধীরে ধীরে চোখ খুলে তাকিয়ে দেখে রিশান হাতে জঘন্য একটা জিনিস নিয়ে মুখটা হাসি হাসি করে দাড়িয়ে আছে । পিয়েলার মুখটা কিঞ্চিৎ বিকৃত হয়ে যায়, সে বলে, "রিশান, তোমার হাতে কুৎসিত এই জিনিসটা কি? "
হঠাৎ একটু দমে যায় রিশান, সে এমন কিছু আশা করেনি। জবাবে বলে, "কেন পিলি, এটাতো ফুল, গোলাপ ফুল? প্রকৃতির অপূর্ব এক সৃষ্টি! এটাকে তুমি কুৎসিত বলছ কেন?"
YOU ARE READING
(কল্প-গল্প) - রোবসেপিয়ান্সের ভালোবাসা
Science Fiction......... "তুই কি পাগল হয়ে গেলি?" উত্তরে রিশান শুধু বলেছিলো পিছনের সবকিছুকে ভুলে যেতে চাই, একেবারে নতুন করে সাজাতে চাই জীবনকে। আসলে রিশান মিথ্যে কথা বলেছিলো বন্ধুদের; শুধু কি বন্ধুদেরই মিথ্যে বলেছিল? না কি নিজের সাথেও?...............