★সর্প পর্বত★
→
লেখকঃ- MD Mazharul Islam (পথ)।
→
কিছু কথাঃ
অনেক পাঠক বন্ধুদের হয়ত উপন্যাসটি প্রথম দিকে বুঝতে একটু সমস্যা হতে পারে তবেঁ ধৈর্য সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়লে প্রত্যেকটা ঘটনা প্রবাহ বোঝা যাবে, এবং যারা নিয়মিত থ্রিলার গল্প পড়েন তাদের জন্য কোনো সমস্যা হবেনা।
আর আমি বরাবরই ভিন্ন মাত্রার কিছু নতুনত্ব লেখা উপহার দেবার চেষ্টা করি, তাই আশাকরি উপন্যাসটি আমার অন্য সব গল্প উপন্যাসের মত সবার হৃদয়ে অদ্ভুত শিহরণ ও নেশা জাগাবে।
অনেকক্ষণ তো বকবক হলো, এবার উপন্যাসটি পড়া শুরু করা যাক।
→
অধ্যায়-১
→
দৃশ্য-১
→
নাঙ্গা পর্বতের পাদদেশঃ
-
চারিদিক ঘুটঘুটে অন্ধকারময়, হবেইবা না কেনো?
আমার চোখ দুটো যে সস্থা কালো ঝুট দিয়ে শক্ত করে বাঁধা।
বাম চোখটা না বাঁধলেও হত, কারন রাশিয়ান কুস্তিগির গ্রাকোভের প্রচণ্ড ঘুষির একাধিক আঘাতে ওটা অকেজো হয়ে গেছে।
ভবিষ্যতে আর কোনোদিন ওই চোখে দেখতে পাবো কিনা জানিনা।
অবশ্য কার্জ হাসিলের পরে এরা আমাকে জাস্ট মেরে পুঁতে দেবে এই পাহাড়ি অঞ্চলে,
তাই ওই চোখে ভবিষ্যৎ দেখা প্রশ্নাতীত।
হাত পা দুটোই শক্ত দড়ি দিয়ে বাঁধা।
পরে আছি জীপগাড়ির পেছনের বনেটে,
মাঝেমাঝে প্রচণ্ড ঝাকিতে গাড়ির ধাতুময় শক্ত কাঠামোতে বারি খাচ্ছি ক্ষতবিক্ষত বিদ্ধস্ত শরীরে, দাতেঁ দাতঁ চেপে সে ব্যাথা সহ্য করে যাচ্ছি।
মুখের ভেতর এখনো নোনা রক্তের স্বাদ অনুভূত হচ্ছে সেই সাথে ঠান্ডায় জমে যাচ্ছি প্রায়।
সাদাটে রক্তাক্ত সিল্কের শার্টের ওপরে পাতলা একটা সুয়েটারে কিছুতেই শীত মানছেনা শরীরের, মাঘ মাস এখন, শহরেই শীতের যে প্রচণ্ড প্রকোপ আর এটাতো পাহাড়ি বনাঞ্চল।
হঠাৎ জীপটা থেমে গেলো, পেছনের জীপ দুইটাও থেমেছে, একই সাথে তিনটি গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধ হলো।
তারমানে আমার পরিকল্পনা মতে এখান থেকে হাঁটা পথে যেতে হবে।
→
-ওই জংলী কুকুর টারে বের করে পানি খাওয়া। (বলল মূসা খান)
-পানি নষ্ট করার কি দরকার বস..?
ও শালা এমনিতেই আমাদের দক্ষ দুইজন কমরেড কে যমের দুনিয়ায় পাঠাইছে..! (বলল গ্রাকোভ)।
-তুইও ওদের সঙ্গি না হতে চাইলে, যা বলছি তাই কর হারামজাদা,
(৬.৪ ফুট উচ্চতার পেশিবহুল গ্রাকোভের উদ্দেশ্যে খেঁকিয়ে উঠলো ৫.৪ ফুট উচ্চতার লিকলিকে কিলবিলে পেশীবহুল শরীরের কুখ্যাত লোভী চোরাকারবারি মূসা খান)।
-ওকে বস!!।
গ্রাকোভ তার বস মূসা খানের আদেশে পেছনের বনেটে এগিয়ে এলো।
→
দৃশ্য-২
→
নাঙ্গা পর্বতের পাদদেশ হতে ২০০০(দুই হাজার) ফুট ওপরে একটি গোপন গুহায়ঃ-
-
ছোট মস্তিষ্কটি বিশেষ একটি সংকেত পেতে লাগল তার সাথেই স্বক্রিয় হয়েই বড় ও বির্ববিত বুদ্ধিমাত্রায় রুপান্তরিত হতে লাগলো।
হৃদ ক্রিয়া দ্রুত হতে লাগলো আমার।
এতবছর যেখানে আনুপাতিক হারে মাসে একবার হৃদ স্পন্দন হতো সেখানে এখন মিনিটে ২০ বার করে হবে, হ্যাঁ এটাই আমাদের জাতির জন্য স্বাভাবিকতা।
সেই সাথে জাতিগত বিশেষ শক্তিময় এনার্জি ত্বরণ গুলো আমার ২৩ ফুটের কুন্ডুলী পাঁকানো শক্তিশালী শরীর বেয়ে লেজে যেয়ে পৌছাচ্ছে আবার পূনঃরায় মস্তিকে ফেরত আসছে।
প্রচুর দানবীয় শক্তি অনুভব করছি আমি,
আমার হাত পা বিহীন পাকানো লম্বা শরীরে।
প্রয়োজনে আমি যেকোনো সময়ে আমাদের চিরশত্রু, নিকৃষ্ট প্রানী মানুষের আকৃতী ধারণ করতে পারি।
যাদের জন্য আমরা আজ বিলুপ্ত প্রায়।
লাখো বছর আগে ওদের জন্ম হয়,
গুহায় বা বনে জঙ্গলে জানোয়ার দের মত বাস করত ওরা।
আর আমার পূর্বসুরিরা তখন এ গ্রহের সবচেয়ে প্রভাবশালী বুদ্ধিমান শিকারি জাতি ছিলো,
এই ধরণির সকল প্রাণীজগৎ ভয় পেত আমাদের।
প্রথম দিকে আমার পূর্বসুরিরা এই নিকৃষ্ট মানব জাতি দের দেখলেই কীটপতঙ্গের মত পিষে মেরে ফেলত।
কারণ আদি জীবের মহা ভবিষ্যৎ বানী মতে,
যুগে যুগে এঁদের নির্বোধ ধ্বংসাত্বক কাজের জন্য আমাদের আবাস্থল ধ্বংস হবে,
সেই সাথে নির্মূলে বিলুপ্ত হবে আমাদের প্রভাবশালী জাতি।
এবং পরে কালের বিবর্তনে সে আদি ভবিষ্যৎ বানী সত্য হয়।
তারপর বেঁচে থাকা অল্পসংখ্যক আমরা বাধ্য হয়ে নির্জন গহীন পাহাড় পর্বতের গভীরতম গুহাময়ে আশ্রয় নেই ও ঘুমিয়ে কাটাতে থাকি লাখো বছর ধরে।
অপেক্ষা করতে থাকি এই নির্বোধ মানব জাতির ধ্বংসের অপেক্ষায়।
আমাদের মধ্যে আর কেউ বেঁচে আছে কিনা জানিনা, হয়ত আমিই শেষ প্রজাতি।
তবেঁ আমার একটি পুরুষ সঙ্গি ছিলো,
ভালোই ছিলাম আমরা, অনেক ভালোবাসতাম আমরা একে অপরকে।
তারপর ২১৩ বছর আগে আমাদের শান্ত আবাসে আবারো অশান্ত প্রলয় নেমে এলো আমাদের জীবনে, অমূল্য সব গুপ্তধনের লোভে আবার সেই মানব জাতি হামলা চালালো আমাদের এই গুপ্ত স্থলে, মরণপন লড়াই করলাম আমি আর আমার সঙ্গি ওদের সাথে।
একে একে ৪৯ টা মানবকে হত্যা করলাম আমরা। আর ১টা সাহসী বুদ্ধিমান মানব প্রতিজ্ঞা বদ্ধ হয়ে প্রান নিয়ে পালিয়ে গেলো আমাদের হাত থেকে।
কিন্তু শেষ রক্ষা হলোনা যুদ্ধের সময় মানবদের মারাত্মক ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হয়ে ধুকে ধুকে আমারই চোখের সামনে মারা পরল আমার পুরুষ সঙ্গিটি, মৃত্যুর আগে আরেকটি গোপন ভবিষ্যৎ বানী করে গেলো সে, যা আমি আগে জানতাম না।
তারপর প্রতিশোধের আগুন বুকে নিয়ে এই পরিত্যক্ত গুহা প্রসাদে শীত নিদ্রায় ছিলাম বিগত কয়েক শতক, হ্যাঁ স্মৃতি গুলো সব আস্তে আস্তে মনে পরছে আমার।
কিন্তু এত তাড়াতাড়ি জাগবার কথা ছিলোনা আমার।
তার মানে আমার সঙ্গির সেই মহা বানীর সেই মনোনীত প্রানটি চলে এসেছে।
হ্যাঁ এবার আমার জাতির আবার পুনরুত্থান হবে এই গ্রহে।
আর কিছুক্ষণ মাত্র তারপরই শুরু হবে পূর্ণপ্রস্তুতি।
→
দৃশ্য-৩
→
নাঙ্গা পর্বতের পাদদেশঃ
→
গ্রাকোভ জীপের পিছনের বনেট খুলে তার শক্তিধর হাতে টেনে হেঁছড়ে বের করলো আমাকে।
তাল হারিয়ে মাটিতে পরে গেলাম, শরীরে একটুও জোর পাচ্ছি না, সেই সাথে ঠান্ডায় থরথর করে কাঁপছি।
YOU ARE READING
★সর্প পর্বত★
Mystery / Thrillerপথ সিরিজের ★ত্রিমাত্রা★ ও ★প্রত্যাবর্তন প্রহেলিকা★ উপন্যাসের অবলম্বনে আমার নতুন উপন্যাস, ★সর্প পর্বত★ → অনেকদিন পর লেখা ৪ অধ্যায়ের আমার এই উপন্যাসে থাকছে প্রত্নতাত্ত্বিক রহস্য, পৌরাণিক কাহিনী, গুপ্তধন, থ্রিলার, ভয়, এক্স্যান ও এডভেঞ্চারে ভরপুর সংমি...