২০/২১ বছর আগের কথা অবশ্য। আমি তখন খুব ছোটো। একদম ন্যাদা বাচ্চা।
প্রাকৃতিক ডাকে সারা দিতে বসেছি। সাথে গান গাচ্ছি, "আকাশেতে লক্ষ তারা চাঁদ কিন্তু একটারে, হাইয়্যা!!.. হাইয়্যা!!"
'হাইয়্যা' গাইতে গিয়ে যে প্রেশার দিতে হচ্ছে তাতে প্রাকৃতিক কাজেও সুবিধা হচ্ছে বেশ।
টয়লেটের ভ্যান্টিলেটরের উপর থেকে হঠাৎ পাখির ডাক শুনে 'হাই...' পর্যন্ত গেয়েই একদম চুপ হয়ে গেলাম। 'হাইয়্যা'তে প্রেসার দিলে পাখি উড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
আমার বয়স তখন ৪/৫ এর বেশি হওয়ার কথা না। তবে বাথরুম সিংগিং আমার তখন থেকেই শুরু!
টয়লেটের ভ্যান্টিলেটরের কাছে ইয়া মোটা একটা পাইপ আছে, যেটা ভেঙে গেছে অনেক দিন আগেই। মাটি দিয়ে সেটা বন্ধ করে দেওয়ার পর শৈবাল টৈবাল উঠে খুপড়ির মত হয়ে আছে।
পাখির কিচিরমিচির সেখান থেকেই আসছে। ভিতরে ভিতরে আমি কিন্তু ভীষণ উত্তেজিত। খুব কাছ থেকে পাখি দেখার সুযোগ আমি তখন পর্যন্ত পাইনি।
নানা কায়দায় মাথা উঁচিয়েও কিছুই দেখা যাচ্ছেনা। আবার উঠে গিয়ে যে ভালো করে দেখবো তাও পারছিনা। হাতের কাজ এখনো শেষ হয় নাই। জোরেশোরে এক 'হাইয়্যা' দিয়ে যে তাড়াতাড়ি শেষ করবো তাও পারছিনা।
যাই হোক, কাজ শেষ করে কাছে গিয়ে তাকিয়ে আছি, আমার চোখ বিস্ফোরিত, বিমোহিত, বিদগ্ধ, আনন্দ আশ্রুজলে চোখে-নাকে একাকার...
একটা দুইটা না ছয় ছয়টা চড়ুই পাখি পাইপটার উপর বাসা বানিয়েছে খড়কুটো জমিয়ে। দুটো বড় আর বাকিগুলো বাচ্চা। যদিও এতো ছোটো পাখি, সবই আমার কাছে বাচ্চা।
আমার তখনো বিশ্বাস হচ্ছিলনা। আমি তাহলে আজ থেকে প্রতিদিন এদের দেখতে পাবো? এরা আমাদের বাড়িতেই থাকবে? একদম সত্যি সত্যি?
আমি মাকে দৌড়ে গিয়ে টেনে হিঁচড়ে এনে পাখির বাচ্চাগুলা দেখালাম। তারপর টানতে টানতে আবার ফিরায় আনলাম, "এদের কে ডিস্টার্ব দিবানা, বুচ্চ? বাবুগিলা ঘুমাবে এখন।" আমি নাশতা আনতে যাচ্ছি ঘুম থেকে উঠলেই খিদা পাবে।
YOU ARE READING
ক্ষণিকের অতিথি
Short Storyকেনো সে এসে ছিলো আমার ছোট্ট কুটিরে? কেনোই বা ফিরে গেলো এই অবেলায়? (description is in progress)