প্রাথমিক কথা

52 4 0
                                    


নিবিড় রায় এর সাথে আমার বন্ধুত্ব বহুদিনের। একই স্কুলে পড়তাম, একই ক্লাসে। কলেজে উঠার পর আমি চলে গেলাম অন্য কলেজে কিন্তু যোগাযোগটা ঠিকই টিকে থাকল। ওর সাথে যখন আমার পরিচয় হয় তখন আমি অতটা বহির্মুখী ছিলাম না। কিন্তু ও ছিল অতিরিক্ত মাত্রায় বহির্মুখী। সবার সাথেই মেলামেশা করতো, আবার কথাও বলতো অতিরিক্ত। কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের বোধক্ষমতারও অনেক পরিবর্তন হয়। নিবিড়ের সাথেও আমার বন্ধুত্বটা পাকাপাকি হয়ে গেল। পরবর্তীতে ওকে যতই দেখতাম, নতুন করে আবিষ্কার করতে লাগলাম। বেশি বেশি কথা বলার অভ্যাসকে ছাড়িয়ে ওর অনেক আচরণই আমাকে মুগ্ধ করতে শুরু করল।

আমার বেড়ানোর প্রচুর শখ ছিল, নিবিড়েরও তাই। প্রায়ই আমাকে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার জন্যে বলতো, সবগুলো যাওয়া সম্ভব হত না। কিন্তু একবার আমাকে এক বিয়ের দাওয়াত দিয়ে গেল এবং মোটামুটি জোরালোভাবে। ওর চাচাতো বোন বৃষ্টিদিদির বিয়ে। বিয়ে হবে ওর গ্রামে, কয়েকদিন থাকা লাগবে। ব্যাপারটা আমার কাছে চমৎকার মনে হল। বয়স কম, ফ্যামিলি ছাড়া একবারে কয়েকদিনের ট্যুরে যাওয়া মন্দ হবে না। তাছাড়া সনাতন ধর্মের বিয়েও আমি আগে কখনো দেখিনি, এই রকম সুযোগ আর কখনো পাব কি পাব না তারও তো নিশ্চয়তা নেই!

কিন্তু সমস্যা হল দু মাস বাদেই ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা। বিগত দুবছরের ধাক্কা এখন সামলাতে হচ্ছে, এই অবস্থায় বেড়াতে যাওয়া সমীচীন হবে কি না তা নিয়ে নিজের মনেই দ্বন্দ্বে পড়ে গেলাম। কিন্তু অবশেষে ঠিক করলাম যাব, এইরকম সুযোগ হাতছাড়া করা ঠিক হবে না। ফ্যামিলিকে রাজি করাতে খুব একটা কাটখড় পোড়াতে হল না। বৃহস্পতিবার বিকেলেই ঢাকা হতে রওয়ানা হলাম মুন্সীগঞ্জের টংগীবাড়ীর উদ্দেশ্যে। 

বিয়ের আমন্ত্রণে মুন্সীগঞ্জেWhere stories live. Discover now