ধুর! আমাকে কাপড় আনতে বলে উনি আবার কোথায় গেলেন। তখনি কবরটার কথা মনে পড়ল সিদ্রার। নিঃশব্দে এগিয়ে টিলার পাশ দিয়ে উঁকি দিল ও। যা ভেবেছিল তাই, লোকটা বসে আছে কবরের পাশে। চোখে শূন্য দৃষ্টি, মুখটা বিষণ্ণতায় ভরা। কান্নার চিহ্ন ফুটে আছে চোখেমুখে।
প্রথমবারের মত লোকটাকে ভালমতো খেয়াল করার সুযোগ পেল সিদ্রা। মাথায় ঈষৎ কোঁকড়ানো অবিন্যস্ত চুল, মায়াবী দুটো চোখ, খাড়া নাক, ঠোঁট দুটো না পাতলা না পুরু। কয়েকদিনের শেভ না করা খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি-গোঁফ মুখটাকে আরো বিষণ্ণ করে তুলেছে। এত মায়াকাড়া একটা চেহারা, এখন দেখলে কে বলবে, এই লোকই ওর সাথে এত খারাপ আচরণ করে? চুল-টুল কিছুই তো ভিজে নেই, তার মানে গোসল করেনি লোকটা। ইশ! এতক্ষণ ধরে এখানে বসে আছে, নিশ্চয় ভাইকে অনেক মিস করছে।
লোকটার কষ্ট যেন সিদ্রাকেও স্পর্শ করল। নিজের অজান্তেই বসে গেল ওখানেই, চেয়ে রইল লোকটার দিকে। ভাবতে লাগল সিদ্রা, লোকটা ওকে যতই কষ্ট দেক, তার পেছনে তো একটা কারণ আছে। নিজের ভাইয়ের এমন অবাঞ্ছিত মৃত্যু, আসলেই কি মেনে নেয়া যায়, না সহ্য করা যায়! আর সেটা যদি কোন মেয়ের জন্য হয় তাহলে তার প্রতি যে এরকম রাগ হবে, সেটাই তো স্বাভাবিক। আমারওতো বোন আছে, আল্লাহ না করুক ওর যদি এমন কিছু হত, আমি কি পাগল হয়ে যেতামনা? যে এর জন্য দায়ী, আমার কি তাকে খুন করতে ইচ্ছে করতোনা?
ব্যাপারটা অনুভব করে লোকটার জন্য অসম্ভব মায়ায় ভরে গেল সিদ্রার মন। সারাদিনের সব রাগ যেন হাওয়ায় মিলিয়ে গেল। মনে মনে বলল ও, শুধু যদি জানতে পারতাম, সেই মেয়ের জায়গায় আমি কিভাবে ঢুকে গেলাম!
"তুই এখানে বসে বসে কি করছিস?" চমকে তাকাল সিদ্রা, ঢোক গিলল। লোকটা কখন ওর সামনে এসে দাঁড়িয়েছে বুঝতেও পারেনি।
"আ-আমি.... আমি আপনার জামাকাপড় নিয়ে এসেছিলাম" হাত দিয়ে পোষাকগুলো তুলে ধরল উপরে।
"তো, সেগুলো নিয়ে এখানে বসে আছিস কেন?" কাপড়গুলো নিয়ে ভ্রু নাচাল লোকটা।
"আপনি চুপ করে বসে ছিলেন, ডাকব কিনা বুঝতে পারছিলাম না" একটু থেমে আবার বলল, "আর মনে হচ্ছে আপনি গোসলও করেননি, তাই......."
YOU ARE READING
যে গল্পের নাম ছিলনা
General Fictionঅচেনা এক লোক সিদ্রাকে কিডন্যাপ করে নিয়ে এলো জঙ্গলের এক কুঁড়েঘরে। শুরু করলো একের পর এক অত্যাচার। এমন অপরাধের শাস্তি ওকে দেয়া হচ্ছে যা করার কথা ও ভাবতেও পারেনা। কিন্তু তাহলে ও শাস্তি পাচ্ছে কেন? এই অত্যাচারের শেষ কোথায়? লেখিকার কথা: সম্পূর্ণ শখের বশে...