নানা সমস্যাঃ
ভালো যাচ্ছে না সময়টা, এমন কোন বাঙালীকে 'কেমন আছেন ' জিজ্ঞেস করলে, হয়ত তিনি বলবেন, " আর বলবেন না মশাই, নানা সমস্যায় আছি। " এখন নানাকে নিয়ে টানাটানি কেন? নানীকে নিয়ে এমন সমস্যা হয়না।নিশ্চয় বাঙালী জানে, যে-মন,
নানাদের সমস্যা গুলো চোখে বেশি পড়ে ,আর নানির আদরটাও বেশি মনে পরে। তাই এই নানা- সমস্যা কথাটার সৃষ্টি।সিনেমাঃ
সিনেবাবা কখনো হয় না , মা ই হয়।
বাংলা সিনে-মা গুলোতে , মা এর কষ্ট যেভাবে হাইলাইট করা হয়, বাবার ত্যাগটা সেভাবে করা হয়না । এখানে নায়িকার বাবা মানেই ত ভিলেন। তাই ওটা সিনে-মা, সিনে বাবা নয় ।পোলার আইসক্রিমঃ
মেয়েদের জন্য আইসক্রিম প্রকৃতি ই দিয়েছে, তাই পোলা-র আইসক্রিম পোলাদের ই কিনে খেতে হয়।ঢাকাঃ
আগের দিনে রিকশায় ঢেকে ঢাকায় চলতো মেয়েরা, তাই হয়ত ঢাকা নাম হয়ছে। নামটা মনে হয় ভুল হয়ে গেছে, ওয়াসার ম্যানহোলের ঢাকনা হয়ত তখন ছিলোনা। থাকলে ওয়াসার সৌজন্যে ঢাকার নাম ঢাকা না হয়ে " খোলা" য় হতো।চাঁদপুরঃ
চাঁদপুর, চন্দ্রদ্বীপ ইত্যাদি নাম প্রমান করে বাঙালি মুল্যবান সুর্যালোক থেকে চন্দ্র কিরণ বেশি পছন্দ করতো । সুর্যের আলো ত ফ্রী, এটার কোন দাম নাই বাঙালীর কাছে। আর এটা গরমও হয় ভীষণ। তাই প্রিয়তমার মুখ, বাবুর মুখ, নিজেদের জেলা, চাঁদের মতো কল্পনা করে এর নাম দেয়।গাইবান্ধাঃ
গাইবান্ধা যেমন আছে ,ছাগলনাইয়া ও আমাদের আছে। ছাগল বাঁধতে হয় না, ঘুরে বেরায়, গাই বাঁধতে হয়, না বাঁধলে বরং ঝামেলা। ঐ এলাকার লোকের ধ্যান জ্ঞান সবই ছিলো গাই বা গরু নিয়ে। কার কটা গাই আছে, কার গাই কত দুধ দিচ্ছে, তা নিয়ে তাদের মাথাব্যথা।বাংলাবাজারঃ
ইংরেজ রা এদেশে বাণিজ্য করলেও বাজার করতো না সম্ভবত। হট ডগ বা চায়নিজ খেয়ে থাকতো। বাবু শ্রেণির তাদের বাঙালী মিত্ররা বাজার বাসায় দিয়ে আসত। তাছাড়া বাংলাদেশের বাজারগুলোর মতো নোংরা জায়গা তাদের অপছন্দও ছিলো। তাই বাংলা বাজার সব স্থানে পেলেও ইংলিশ বাজার বলে কিছু নাই।ধানমন্ডিঃ
ধানমন্ডি যে ধানক্ষেত ছিলো নামেই প্রমাণ , ওখানকার স্থায়ী বাসিন্দা সব চাষাই ছিলো ,এখন যতই ফুটানি মারুক ওদের উত্তর প্রজন্ম, তাদের চেহারা আমাদের চাষী ভাইদের মতোই আর পিজা, স্যান্ডউইচ যা খাক না কেন ভাত না খেলে এদের ক্ষিধে থাকবেই।নিউমার্কেটঃ
নতুন মার্কেটের প্রতি বাঙালীর নতুন বউয়ের মতোই আকর্ষণ আছে। পুরান ঢাকা, পুরান বাজার, পুরান বউ এর মতোই। তাই দেশের সব জেলায় উপজেলায় নিউমার্কেট নামে মার্কেট থাকলেও পুরান মার্কেট বলে কিছু নেই ।
হাতিরঝিলঃ
ঘোড়া ঘোরাঘুরি পছন্দ করলেও স্নান পছন্দ করেনা , কিন্তু স্নান করতে ঝিল হাতির খুব প্রিয় জায়গা। তাই ওটার নাম হাতির ঝিল। আমাদের রাজা-বাদশারা খেয়েদেয়ে এত মোটা হতো, যে ঘোড়া তাদের ওজন টানতে পারতো না। আর রাণীরা শাড়ী পরে দু পা ফাঁক করে ঘোড়ায় বসবে? তবেই সেরেছে, মোটা উরু দেখে ঘোড়া ও রাজি হতো না । তাই হাতির আমদানি।
স্নানপ্রিয় হাতির জন্য ঝিলের প্রয়োজন ছিলো। তাই নামও হলো হাতিরঝিল।ভুতের গলিঃ
জ্বীন তো আকাশে থাকে , উচ্চ বংশীয়, সে নাকি আগুনের তৈরী, তাদের অনেক সাধনা করে ডাকতে হয় । জ্বীন ডাকাও একটা ভালো ব্যবসা বটে! আমিও টাকা খুইয়েছি জনৈক পারিবারিক হুজুরকে জ্বীন হাজির করাতে।
ব্যাটা ভুত গরীব, বাঙালী। মানুষ মরেই নাকি ভুত হয়। সে থাকে অন্ধ বা কানা গলির শেষমাথায় বা রাস্তার ধারের তেঁতুল গাছে। বৃষ্টিতে কি করে গাছে ঘুমায় কে জানে।
এদেশের যে গলিতে হোমরাচোমরা কেউ থাকে, সেই হোমরাচোমরার নামেই ঐ গলির নামকরন হতো। যেমন কালু সদাগরের গলি, লালমিয়া সদাগর গলি, হাজি অমুক, তমুকের গলি ইত্যাদি। যে গলিতে শুধু গরীবেরা থাকে তাই ই ভুতের গলি। জ্বীনের গলি বলে কিছু নেই বাংলাদেশে।
VOUS LISEZ
বাঙালির অভিলাষ ও নামের মাহাত্ম্য
Comédieআমরা প্রায়ই বলি, ধানমন্ডির নাম কেন এমন হলো বা হাতির ঝিল কেন ই বলি, ঘোড়ার ঝিল বলিনা, ইত্যাদি বিষয় নিয়ে হাস্যরসাত্মক লেখা। আবার বাঙালী ছাগল, গরু পালন করতে পছন্দ করে। কিন্তু কুকুর বা ঘোড়ার মত উপকারী জন্তু পছন্দ করেনা। কেন এসবের উত্তর জানতে কাল্পনিক গ...