ঘাসফুল ৫

1 0 0
                                    

ঘাসফুল
লেখাঃ মারুফা সুলতানা
পর্বঃ ৫

“আজ সকালে ঐশি তোর কথা বলছিল।” রাতের খাবার খেতে খেতে তাওহীদের পাশে বসে বললো অভি।

   সামান্য একটু মাছ ভাজা মুখে দিতে গিয়ে কেশে উঠলো তাওহীদ। টেবিলের ওপাশ থেকে দ্রুত এক গ্লাস পানি এগিয়ে দিলো মিষ্টি। সময় নিয়ে পানিটা শেষ করে তাওহীদ অভির দিকে ফিরলো। পানির গ্লাসটা নেওয়ার সময় যদি খেয়াল করতো তাহলে দেখতে পেত মিষ্টির গ্লাস এগিয়ে দেওয়া দেখে শুভ্র আর অভির দৃষ্টি বিনিময়। শান্ত-ভাবান্তরহীন কণ্ঠে তাওহীদ শুধালো অভিকে,
“কি বলছিল?”

“বললো তোর গিফট করা ডায়েরি খুব পছন্দ হয়েছে।” বললো অভি। ভেতরে ভেতরে যেন কিছুটা স্বস্তির ছটা পেল তাওহীদ। অন্তত আপাতত।

“কিসের গিফট?” টেবিলের অপরপ্রান্ত থেকে জিজ্ঞেস করলো শুভ্র, তাওহীদের মুখোমুখি বসেছে সে।

“তোদের অ্যানিভার্সিরির গিফট।” ইচ্ছে করেই একটু জোরে মাকে আর তানিকে শুনিয়ে বললো তাওহীদ।

তাওহীদের বলতে দেরী হয়েছে কিন্তু ওদের শুনতে দেরী হয়নি, সাথে সাথেই মা বলে উঠলেন,
“শুভ্র! তোমরা বিয়ে করে ফেলেছো? একি কথা! আমাদের জানালে পর্যন্ত না। তোমার মা পর্যন্ত কিছুই বললো না আমাকে!”

    ব্যাস! ডিনারের বাকি সময়টুকু শুভ্র আর অভির কাটলো মা আর তানির একের পর এক প্রশ্নবান পেরিয়ে তাদের বিশ্বাস করাতে যে না শুভ্র আর ঐশির বিয়ে হয়নি। মাঝে মধ্যে মায়ের কঠিন জেরায় বাবাও যোগ দিলেন। শেষমেশ শুভ্র লাজ লজ্জার জলাঞ্জলি দিয়ে লাল মুখ করে জানাতে বাধ্য হলো যে বিয়ের অ্যানিভার্সিরি না,রিলেশন অ্যানিভার্সিরির কথা বলেছে তাওহীদ।

মুখ টিপে হাসলো তাওহীদ। বিকালের পর থেকে এই প্রথম কয়েক সেকেন্ডের জন্য হাসলো সে।

    সারাদিন থেকে থেকে ঝুম বৃষ্টির পরও সেদিনের দিনটা তাওহীদের ভালোই যাচ্ছিল। বিগত দুইদিনের ইনসোমনিয়ার পর গত রাতে সে অঘোরে ঘুমিয়েছে। যদিও ঘুম ভাঙার পর মিষ্টির কথামতো রটানোর মতো কোন মেকি গল্প মাথায় আসেনি, তবু ঘুমিয়ে মন আর শরীরটা ঝরঝরে হয়ে গেছে। আর ঝরঝরে মন সবচেয়ে সৃষ্টিশীল মন।

ঘাসফুল Where stories live. Discover now