৪র্থ পর্ব

0 0 0
                                    

মিনিট বিশেক পর উত্তরা চৌদ্দ নাম্বারের সেই বিল্ডিং এর সামনে এসে দাঁড়ায় তৌহিদ। তন্নতন্ন করে বিল্ডিং এর সব ফাঁকা অংশ খুজতে থাকে সে। এক পর্যায়ে গ্যারেজের রুমের পাশের ফাঁকা অংশে নজর যায় তৌহিদের। সেখানে ময়লা স্তুপ আকারে জড়ো হয়ে রয়েছে৷ বিল্ডিং এর সকল পুরানো জিনিস এখানে জড়ো হয় তারপর  ফেরিওয়ালার কাছে বিক্রি হয়ে যায়। তৌহিদ কিছু একটা ভেবে সেই জায়গাটা খুঁজতে শুরু করে। মিনিট বিশেক বাদে হঠাৎ করেই একটা পলিথিন তার হাতে বাধে। পলিথিনটি খুলতেই ঠোঁটের কোনায় হাসি ফুটে উঠলো তৌহিদের। তার চোখ চকচক করছে। পলিথিনটি হাতে নিয়ে নিলো তৌহিদ। তারপর জোরালো কন্ঠে বিল্ডিং এর দারোয়ানকে ডাক দিলো সে। তৌহিদের ডাক কর্ণপাত হতেই বিল্ডিং দারোয়ান লালমিয়া ছুটে তার সামনে এসে দাঁড়ালো। লালমিয়া এই বিল্ডিং তৈরি হবার পর থেকেই এখানের দারোয়ান হিসেবে রয়েছে৷ তৌহিদ তীর্যক দৃষ্টিতে লালমিয়ার আপাদমস্তক পর্যবেক্ষণ করে। খুব লিকলিকে শরীরের একজন মানুষ, বয়স চল্লিশের উপর হবে, মাথার একটা চুলও কাঁচা নয়, পান খেয়ে ঠোঁট, দাঁত লাল করে রাখতে ভালোবাসে সে। সে তৌহিদের দিকে ভীত নজরে তাকিয়ে রয়েছে। লালমিয়া পুলিশকে খুব ভয় পায়। পুলিশের নাম শুনলেই তার হাত পা কাঁপতে থাকে। ঢাকা শহরে আসার পূর্বে গ্রামের ছ্যাচড়া চোর হিসেবে বেশ প্রসিদ্ধ ছিলো লালমিয়া৷ বেশ ভালো কামাই ও হয়ে যেতো, কিন্তু একবার পুলিশের হাতে ধরা পরে যে পিটুনীটা খেয়েছিলো সেই দৃশ্য মনে পড়লে এখনো তার গায়ে কাঁটা দেয়। লালমিয়ার ঘাড়ে হাত রাখে তৌহিদ। লালমিয়া একটু কেঁপে উঠে। লালমিয়ার অবস্থা দেখে মিটিমিটি হাসে তৌহিদ। তারপর ধীর কন্ঠে বললো,
- খুনের রাতে কোথায় জানে ছিলে বলেছিলে?
- স্যার একটু বিড়ি কিনতে গেছিলাম

ভীত কন্ঠে উত্তর দেয় লালমিয়া। তৌহিদ তার ঘাড়টা একটু চাপ দিয়ে ধরে। তারপর হিনহিনে কন্ঠে বলে,
- বিল্ডিং এর কাজ ছেড়ে বাইরে বিড়ি কিনতে যাওয়ার জন্য বুঝি টাকা দেওয়া হয় তোমাকে?
- মাফ কইরে দেন স্যার। আমি ক্যামনে জানুম, এই সময়ে এতোকিছু হয়ে যাইবো?
- এই ময়লার স্তুপে শেষ কবে হাত দেওয়া হয়েছিলো?
- বছরখানেক হইবো। আসলে বেশি জিনিসপত্র না জমলে হাত দিয়ে লাভ হয় না। টাকা পাওন যায় না।
- এই কয়দিনে কেউ হাত দিয়েছিলো? ভালো করে মনে করে বলো? নয়তো
- না না স্যার, কেউ হাত দেয় নি। সত্যি কইতাছি।

দৃষ্টির অগোচরে Donde viven las historias. Descúbrelo ahora