অফিসে পৌঁছে গাড়ি যথা স্থানে পার্ক করে আমি আর প্রিয়া অফিসে পা রাখলাম। একটা কর্মচারী হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এসে প্রিয়াকে বললো, “ma’am, we have a bad news!”
আমি বললাম, “শান্ত হোন মিস্টার বোস, আসুন আমাদের কেবিনে এবং খুলে বলুন কেস টা”
আমি, প্রিয়া আর মিস্টার বোস তিনজন মিলে প্রিয়ার কেবিনে আসলাম।
Hand bag টা টেবিলের ওপর রেখে প্রিয়া বললো, “বলুন বোসবাবু।“
বোসবাবুকে রীতিমত অন্যমনস্ক আর ভীত মনে হলো। বোসবাবু, ডান হাতের নখ দাতে করে কাটতে শুরু করে দিয়েছে এরই মধ্যে। আমতা আমতা করে বললেন, “ma’am আমাদের কোম্পানির কিছু গোপনীয় তথ্য dark web এ leak হয়েছে। বিটকয়েনের দাম একধাক্কায় নিচে নেমে গিয়েছে”।
অবাক চোখে তাকালো প্রিয়া বোসবাবুর দিকে, অস্ফুট স্বরে বললো, “সেকি কিভাবে হলো”
আমি প্রিয়াকে ধরে টেবিলে বসিয়ে বোসকে বললাম, “আপনি এখন আসতে পারেন, প্রয়োজন হলে ডেকে নেবো”
মিস্টার বোস চলে গেলে দরজা বন্ধের আওয়াজ পেলে আমি প্রিয়ার দিকে তাকালাম, ওর চোখ ছলছল করছে, আমি ওর চেয়ারের সামনে হাঁটু গেঁড়ে বসে বললাম, “তুমি কাদঁছো কেনো, এরকম হয়, আমরা police এ কমপ্লেইন করবো, চিন্তা করোনা, সব ঠিক হয়ে যাবে”।
আমি উঠে গিয়ে প্রিয়ার মাথাটা বুকে পিঠে আলতো হাত বুলাতে থাকি কিছুটা শান্ত হলে, আমি ফোন বের করে পুলিসে ডায়াল করতে যাবো এমন সময় প্রিয়ার অস্ফুট স্বর শুনতে পেলাম।
“দীপ্তি…… আমি জানি এ দীপ্তি ও আমাদের সঙ্গে এরকম করছে কেনো বলো প্রিয়”
আমি উত্তর না দিয়ে ফোন করলাম পুলিসে।
Police যথা সময়ে এলো, সাথে সাইবার এক্সপার্ট রাও, কিন্তু কোনো কিছুই উদঘাটন করতে পারলো না।
শেষে বলে গেলো, “দেখুন মিস প্রিয়া আমরা যথা সম্ভব চেষ্টা করছি, কিন্তু আমাদের একটু সময় লাগবে, আমরা উপদেশ দিচ্ছি আপনাকে এরপর থেকে vpn use করে অনলাইনে transaction করবেন এতে রিস্ক অনেক কমে”।
প্রিয়া শুধু ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানালো।
পুলিশ অফিসার চলে যাচ্ছিলো, দরজা পর্যন্ত গিয়ে থমকে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করলো, “মিস প্রিয়া আপনি কাউকে সন্দেহ করেন?”
এর উত্তরে প্রিয়া মুখ খুলতে গেলে আমি ওর হাত চেপে ধরলাম, অফিসার আমার হাতের দিকে লক্ষ্য করে মুচকি হেসে বললো, “মনে হয় আপনি জানেন না চলি, সাবধানে থাকবেন”।
কাচের দরজার ক্যাঁচ শব্দে বুঝলাম পুলিশ চলে গেছে।
প্রিয়া আমার দিকে ঘুরে বললো, “প্রিয়দর্শিনী কি হলো এটা? আমাকে আটকালে কেনো, পুলিশ ঠিক খুঁজে পেতে ওকে”।
“ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করো প্রিয়া, এটা যদি দীপ্তি হয় তাহলে তার নাম সরাসরি পুলিসে দিলে আমাদের আরো বড়ো ক্ষতি করতে পারে, আমার কাছে কোম্পানি থেকে তুমি বড়ো”, বলে আমি প্রিয়াকে জড়িয়ে ধরলাম।
এই মুহূর্তে প্রিয়ার ফোন টা বেজে উঠলো প্রিয়া hand bag থেকে ফোনটা বের করে চোখের সামনে ধরতেই হাত থেকে ফোনটা মাটিতে পড়ে ফোনের ব্যাটারিটা আলাদা হয়ে গেলো।
আমি প্রশ্ন করতে যাব এমন সময় আমার ফোনটা বাজতে আরম্ভ করলো। আমি কৌতূহলের সাথে ফোনটা পকেট থেকে বের করলাম, বের করে দেখলাম calling I’d তে লেখা anonymous chapter, আমি ভয় পেয়ে প্রিয়ার দিকে তাকালাম, সে ভয়ে হাত মুখে টেবিল সেটে দাড়িয়ে আছে।
আমি call টা recived করে কানে নিলাম, “he…..hello” অনুভব করলাম ভয়ে আমার গলা জড়িয়ে গেছে।
সেপাস থেকে মিষ্টি মেয়েলি গলায় শুনতে পেলাম, “তোমাকে যতটা বোকা ভেবেছিলাম ততটাও নও”
“কে তুমি, আমার নম্বর পেলে কিভাবে?” , আমি ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করলাম
“এটা তুমি বোকার প্রশ্ন করলে, এখনো আমার ক্ষমতা সম্পর্কে প্রশ্ন করছো, বাদ দাও সে কথা, প্রিয়াকে এতো ভয় বারন করো, বলো ওর সুপারহিরো ফিরে এসেছে”।
আমি হাসির আওয়াজ শুনতে পেলাম ফোনের ওপাশ থেকে।
আমি প্রিয়ার দিকে তাকাতে দেখলাম প্রিয়ার চোখের কোনা দিয়ে জল গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ে টেবিলে রাখা ফাইলের খোলা পাতার প্রিয়ার sign করা জায়গাটায় পড়ে যেনো কালির আলপনা আঁকছে।
![](https://img.wattpad.com/cover/266264753-288-k526138.jpg)