সমাজে, বাড়িতে, কাজে সব ক্ষেত্রেই গায়ের রং নিয়ে কথা শুনতে শুনতে এখন জীবনকে তুচ্ছ মনে হয়। এখন আর তার সাজতে ইচ্ছে হয় না। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখতে ইচ্ছে হয় না।
আজ তাকে দেখতে আসবে পাত্র পক্ষ, মা নিজের টুকটুকে লাল বেনারসী আর সোনার একজোড়া ঝুমকো রেখে গেছেন রুমে। যত যাই হোক পাত্রপক্ষের সামনে একটু না সাজলে কেমন কেমন লাগে, তাই এত সব আয়োজন। মায়ের মন রাখার জন্য আনিয়া আবার সাজলো লাল শাড়ি, গয়নায়, চোখ কাজল আর ঠোঁটে হালকা রঙের মিস্টি লিপস্টিকে। সে জানে হয়তো আজও তাকে শুনতে হবে গায়ের রং নিয়ে কটুক্তি। তবুও সে সাজলো। শেষ বারের মত। শুধু মায়ের জন্য।
আজ আর পাত্র পক্ষ এনিয়েবিনিয়ে কিছু বলল না। আনিয়াকে দেখেই আনিয়ার মাকে বলতে লাগলো ছেলের মা- ' দেখুন আপা, আমি সোজা সাপ্টা মানুষ। তাই যা বলার শুরুতেই বলে দেই। আমাদের কিছু ডিমান্ড আছে। একটা ফ্লাট দিতে হবে, তাতে আপনার মেয়েই সংসার করবে। ঘর সাজানোর জিনিসপত্র, আর আমার ছেলের জন্য একটা মোটরবাইক।'
আনিয়ার মা কিছু বলার আগেই আনিয়া বলল ' আমি যৌতুকের বিয়ে করব না। আমি কি বোঝা হয়ে গেছি মা তোমার ওপর'?
আনি চুপ থাক!
পাত্রপক্ষ: বাহ্ বাহ্! কিসের অহংকারে এত বড় বড় কথা বলছো মেয়ে? আপা বেশ ভালো বেয়াদব বানাইছেন কিন্তু মেয়েকে। যে ঘরে যাবে সেই ঘর একদম ধ্বংস করে ফেলবে। আমরা বলেই নিতে চাচ্ছিলাম ছি কালি ভুতনি কে। এখন এইটাকে সারাজীবন ঘাড়ের ওপর চাপিয়ে রাখেন। আমরা এই ঘরে আমার ছেলে বিয়ে করাব না। বলেই পাত্রপক্ষ চলে গেল।: তু মরিস না কেন আনি? তুই কি শান্তি দিবি না আমায়? কত কষ্টে একটা ভালো সম্বন্ধ আসলো তাও তোর ছেলেমানুষির জন্য গেল। মর তুই মর ! শান্তি দেয় আমায় (কান্না)
আনিয়া স্তবদ্ধ আজ তার মায়ের কথায়। না আর না। খুব কষ্ট হচ্ছে আজ তার, খুব। শ্বাস আটকে আসছে। মায়ের কথায় কিছু না বলে দৌড়ে পালিয়ে এল আনিয়া তার নিজের রুমে। 'সব হচ্ছে শুধু এই গায়ের রং এর জন্য।' কাঁদতে কাঁদতে সে কয়েকপাতা ঘুমের ওষুধ নেয় , তার পরপরই ফ্যানে তার ওড়না পেঁচিয়ে নেয়। ২ মিনিটের কম সময়ে আনিয়ার দুনিয়া অন্ধকারে ছেয়ে যায়। অবশেষে তার ছুটি হলো এই সমাজ, পরিবার, আত্মীয়দের থেকে।
আনিয়া এখন সেই কটেজের ভেতর। চোখ খুলে সে ঐ মানুষটিকে দেখলো, যার চেহারা সে তার স্বপ্নে দেখে নি। তার মনে হলো ঠিক এরকম একজনকেই তার বড্ড প্রয়োজন ছিলো ঐ বর্ণবাদী দুনিয়ায়। মানুষটি হঠাৎ মুচকি হেসে বলল, ' আমার অপেক্ষার শেষ হলো, অবশেষে তুমি এলে, এখানে তুমি শুধুই তুমি, তোমায় আর কেউ এখানে কষ্ট দিতে পারবে না। তুমি এবার পরিপূর্ণ আনিয়া।'
আনিয়া বাচ্চাদের মত কান্নাস্বরে বলল ' আরো আগে কেনো এলে না, আমায় আরো আগে কেনো আনলে না? সত্যি এবার আমার ছুটিতো?'
'হুমম'
KAMU SEDANG MEMBACA
চামড়া (Completed ✔️)
Cerita Pendekফর্সা আর শ্যামলা... কোন চামড়া সুন্দর আর কোন চামড়াই বা কুৎসিত? প্রশ্ন অনেক থাকা স্বত্ত্বেও নেই এর কোনো উত্তর। এ সমাজে সম্মান আর আদরের জন্যে হতে হবেই সাদা চামড়ার অধিকারী। চামড়ার রংটাযদি হয় একটু ময়লা, তবে এ সমাজ তোমায় চিনবে না আর, এটাই কঠিন ব্যস...