পর্ব - ০৭

197 2 0
                                    

অরুণ আজকেও পরীকে ঘুম পাড়িয়ে নিজের বালিশে হেলান দিয়ে বই পড়ছিলো। আজকেও সে ঘুমের ওষুধ খাইনি। কারণ এখন অরুণ আর বিশেষ স্ট্রেস নেয় না। তাই সে রোজ ঘুমের ওষুধ খাওয়াটাও ত্যাগ করেছে। বই পড়তে পড়তে সে মনীষার কথা ভাবছিলো। চোখ ছিল বইয়ের পাতায় কিন্তু মন ছিল মনীষার দিকে।

অরুণ ভাবছিলো কি করে মনীষাকে এই মিথ্যে বিয়ে থেকে বের করে আনবে। মনীষা কবে এই মানসিক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবে। অরুণ এবার চাইছিলো জীবনের শেষ কয়েকটা দিন সে মনীষাকে নিয়ে ভালোভাবে স্বামী স্ত্রীর মতো আবার কাটাবে। কিন্তু সেটা যে এতো সহজ ছিলোনা। মনীষা তার বিয়ে করা একমাত্র বউ হতে পারে, কিন্তু সে তার হাতের পুতুল নয়, যে যখন চাইলো ডিভোর্স দিয়ে অন্য কারোর সাথে বিয়ে করতে বাধ্য করলো , আবার যখন চাইলো সেই বিয়ে ভাঙিয়ে পুনরায় তাকে নিজের কাছে ফিরিয়ে আনলো। এইভাবে সবকিছু হয়না। অরুণ ক্যান্সার আক্রান্ত একজন রোগী হতে পারে কিন্তু তাই বলে তার সব আবদার কে শেষ ইচ্ছে বলে মেনে নেওয়া যায়না।

ওদিকে মনীষা ও রবি যথা নিয়মে একে অপরের থেকে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে শুয়ে পড়লো। গতরাতে রবির সোফায় ঠিকমতো ঘুম হয়নি , তার উপর সারাটা দিন তার কেটেছে দ্বন্দ্বে , নিজের মনের সাথে। অরুণের কথা মেনে তার মনীষার কাছে যাওয়া উচিত ছিল কিনা। সে তো মনীষার চোখে সেই জন্য ছোটও হয়েগেছিলো। সারাটা দিন তাই তার চিন্তায় চিন্তায় কেটে ছিল , কিভাবে সে মনীষাকে রাতে ফেস করবে এটা ভেবে।

এইসবের জন্যে রবির শরীর ও মনের উপর দিয়ে অনেক ধকল গ্যাছে। তাই সে বিছানায় শুতেই ঘুমের দেশে পাড়ি দিলো। কিন্তু অরুণের মতো মনীষারও আজকে ঘুম আসছিলো না। পার্থক্য ছিল শুধু এটাই যে অরুণ ভাবছিলো মনীষার কথা আর মনীষা ভাবছিলো রবির কথা। কি কথা ?

রবি কিছুক্ষণ আগে যে কথা গুলো প্রতিশ্রুতির আকারে মনীষা কে বললো, সেই কথা। রবি কখনো মনীষা ও পরীকে ছেড়ে যাবে না। সবসময়ে তাদের পাশে থাকবে , তা মনীষা রবিকে স্বামী হিসেবে গ্রহণ করুক বা না করুক। এইসব কথা শুনলে কোন মেয়েরই না মন গলে , যদি সে দেখে কেউ নিঃস্বার্থ ভাবে তার পাশে রয়েছে , তাও আবার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময়ে। বদলে কি মনীষার সত্যি কিছু দেওয়ার নেই ? মনীষা সেটা নিজেই নিজেকে জিজ্ঞেস করলো মনে মনে।

ক্যান্সার আক্রান্ত স্বামীর স্ত্রীয়ের পরকীয়া - Manali BasuOnde histórias criam vida. Descubra agora