রাফিন তার হোটেলের রুমের বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছে। দূরে সমুদ্র সৈকত দেখা যাচ্ছে। সমুদ্রের লোনা জল এসে বালিময় সৈকতের বুকে আছড়ে পড়ছে। সেইসাথে দক্ষিণা বাতাস গায়ে যেন শীতের শিহরণ জাগিয়ে তুলে। যদিও শীতকাল আসতে আর কিছু দেরি। এইসময় সমুদ্র ঘুরতে আসতে দিবে না কিছুতেই তার বাবা। একবার ঠান্ডা লেগে গেলে রাফিনের খবর হয়ে যায়। সবেমাত্র পড়াশোনা শেষ। এই সময় তার বাবার ইচ্ছে ছেলে ব্যবসার দায়িত্ব বুঝে নিবে। কিন্তু রাফিন এখনই তার স্বাধীন জীবন উৎসর্গ করতে রাজি নয়। একবার ব্যবসার দায়িত্ব নিলেই তখন আবার তার বাবা বলবে বিয়ে করো। তারপর তখন বউ বলবে বাচ্চা নিয়ে নেয়। তারপর তাদের লালনপালন করতে করতে নিজেই বুড়ো হয়ে যাবে। তখন কি আর এসব ঘুরে দেখলে ভালো লাগবে? রাফিন ঠিক করেছে যতদিন পারা যায় সে নিজের মতো কাটাবে। সে কারণেই এখানে ঘুরতে আসা। সাথে অবশ্য তার সকল দুষ্কর্মের সহকারী নিখিল আর অভ্র আছে।
দুজনেই পাশের ঘরে নাক ডেকে ঘুমুচ্ছে। নিখিল এত জোরে নাক ডাকে রাফিন এই ঘর থেকেই তা শুনতে পাচ্ছে। ভাগ্যেস অভ্রের ঘরে ঘুমুতে পাঠিয়েছে। নাহলে তার আর ভ্রমণ উপভোগ করা হতো না। রাফিন ভাবলো কিছুক্ষণ এখানে বসে সময় কাটানো যাক। তাই বারান্দায় আরামকেদারায় হেলান দিয়ে মাথার উপর রূপার থালার মতো চকচকে অথচ মেঘের মধ্যে লুকোচুরি খেলতে থাকা চাঁদের নিচে বসে সময়টা উপভোগ করতে লাগল। এমন সময় না ঘুমিয়ে দিব্যি এখানে বসে বসেই কাটিয়ে দেওয়া যায়। হাতে কাঁচের বোতলের মধ্যে কমলার জুস। নিখিল কিনে এনেছিল। তখন তো নিখিল আর অভ্র মিলে ঢকঢক করে খাচ্ছিল অথচ রাফিন খাবে না বলে বসে বসে তাদের দেখছিল। অথচ এখন দিব্যি একের পর চুমুক দিয়ে চলেছে। তবে স্বাদ আদৌ কমলার জুসের মতো তো মনে হয় না। অনেকটা কড়া আর তেতো। বোধহয় দোকানদার পুরোনো জিনিস ধরিয়ে দিয়েছিল নিখিলের হাতে। আর নিখিল ছেলেটাও এতো বোকা যে জিনিস কেনার আগে এক্সপায়ারি ডেট চেক করে দেখবে তা না!
রাফিন যদিও ভেবেছিল জেগে থাকবে কিন্তু এখন যেন তার চোখ দুটো আপনাআপনি বুজে আসতে চাইছে। তবুও জোর করে চেষ্টা করছে জেগে থাকার। যেইনা শত চেষ্টা সত্ত্বেও চোখ দুটো বন্ধ হতে যাচ্ছিল ওমনি মনে হলো দূরে কিছু একটা তার নজরে এলো। দূরে সমুদ্র সৈকতে কি যেন দেখা যাচ্ছে বোধহয়। প্রথমে মনে হলো চোখের ভুল। ঘুমের ঘোরে আবল তাবল দেখছে হয়তো। কিন্তু মনে হলো কিছু একটা সত্যি সত্যি আছে ওখানে। তবে আবছা আলোয় ঠিকমত কিছু ঠাওর করা যাচ্ছে না। আজকে যে চাঁদের ব্রাইটনেস কেন বারবার আপ ডাউন করছে কে জানে। রাফিনের মনে হলো হয়তো চাঁদের ব্যাটারি লো। তাই ভাবলো নীচে গিয়ে দেখে আসবে। রাতের বেলা অতিথিদের বের হওয়া নিষিদ্ধ। কারণ কিছুই না। কাউকে জিজ্ঞেস করলে বলবে ভূতের উপদ্রব। কিন্তু রাফিন ভালো করেই জানে। অনেকে হোটেল বিনে পয়সায় থাকার মতলবে আসে। দিনের পর দিন থাকে। তারপর টাকা পরিশোধ না করে রাতের বেলায় পালিয়ে যায়।
YOU ARE READING
সমুদ্রতটের মৎস্যকন্যা
Fantasyরবিন তার হোটেলের রুমের বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছে। দূরে সমুদ্র সৈকত দেখা যাচ্ছে। সমুদ্রের লোনা জল এসে বালিময় সৈকতের বুকে আছড়ে পড়ছে। সেইসাথে দক্ষিণা বাতাস গায়ে যেন শীতের শিহরণ জাগিয়ে তুলে। যদিও শীতকাল আসতে আর কিছু দেরি। এইসময় সমুদ্র ঘুরতে আসতে...