রাফিনের ধীরে ধীরে নিজেকে হালকা মনে হয়। সেই সাথে পুরো শরীর যেন ঠান্ডা হয়ে গেছে। এক শীতল বাতাস তার ত্বক স্পর্শ করে চলে যায়। রাফিন চোখ মেলে তাকায়। অবাক হয়ে যায় তার সামনে বিস্তীর্ণ ফুলের মাঠ দেখে। চারপাশে নানা রং বেরঙের ফুল ফুটে আছে। তারই উপর দিয়ে কতগুলো প্রজাপতি উড়ে খেলে বেরাচ্ছে। দূরে একটি নারী অবয়বকে দেখতে পায়। ধীরে ধীরে এগিয়ে যায় সেদিকে। ফুলের মাঠ যেন সরে গিয়ে তাকে পথ বানিয়ে দিচ্ছে। রাফিন মহিলাটির কাঁধ স্পর্শ করে। মহিলাটি ধীরে ধীরে তার দিকে দৃষ্টি ফিরিয়ে তাকায়। রাফিনের বুক কেঁপে উঠে। এমন স্নিগ্ধ শোভন চেহারা যেন পুরো জীবনে সে দেখেনি। সত্যি দেখেনি। এমন মায়াভরা চোখ, যে চোখে রয়েছে অসীম ভালোবাসা। মাথার লম্বা সুগন্ধি চুলগুলো বাতাসে উড়ছে। রাফিনের মুখ স্পর্শ করছে আলতো করে। এই চেহারার কোমল ত্বক যেন তাকে মনে করিয়ে দিচ্ছে এই গালে মাথা ঠেকিয়ে কাঁদতে। রাফিনের মুখ থেকে বেরিয়ে এলো,
: মা! তুমি!
মহিলাটি স্নিগ্ধ হাসি হেসে জবাব দিল,
: হ্যা রে খোকা। আমি। তুই এতো বড় হলি কি করে? তাও আবার আমাকে ছাড়া?
রাফিনের চোখ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ে। কতদিন খোকা ডাক শোনেনি তা ঠিক মতো মনেও নেই তার। যেই মায়ের হাতে না খেলে তার খাওয়া হতো না, যেই মা স্কুলে না নিয়ে গেলে তার স্কুলে যেতে ইচ্ছে করত না, যেই মা মাথায় না হাত বুলিয়ে দিলে, চুলে বিলি না কেটে দিলে ঘুম আসত না, সেই খোকা এখন সত্যি অনেক বড় হয়ে গেছে। রাফিনের কথা বলতেও কষ্ট হয়। কিন্তু তবুও কান্না আটকে রেখে বলে,
: মা, আমি বড় হয়ে গেছি। তোমাকে ছাড়াই বড় হতে হয়েছে।
: তুই ভালো আছিস, বাবা?
: না মা। তোমাকে ছাড়া ভালো নেই।
: আমিও নেই। কিন্তু চিরকাল তো আর কেউ এই পৃথিবীতে থাকে না রে। শিখে নিতে হয়, মানিয়ে নিতে হয়।
: তুমি চলে গেলে কেন মা ওভাবে?
: তোর বাবার জন্য।
YOU ARE READING
সমুদ্রতটের মৎস্যকন্যা
Fantasyরবিন তার হোটেলের রুমের বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছে। দূরে সমুদ্র সৈকত দেখা যাচ্ছে। সমুদ্রের লোনা জল এসে বালিময় সৈকতের বুকে আছড়ে পড়ছে। সেইসাথে দক্ষিণা বাতাস গায়ে যেন শীতের শিহরণ জাগিয়ে তুলে। যদিও শীতকাল আসতে আর কিছু দেরি। এইসময় সমুদ্র ঘুরতে আসতে...