Miracle
Writer : Mahabuba Metuআমি রেডি হলাম ঠিকই, বাট মনো মনে যত চিন্তা আমার ভাবনাকে নিয়ে। হুম আমার ভাবনা, আমার পেঁচি...
গত ৩ দিন একটুও ভাবিনি ভাবনার কথা। আজ না খুব ভাবতে মন চাইছে ওর কথা। ইচ্ছে করেই। কারন ওকে ভাববার শেষ দিন আজ। এরপর আমি কখনোই ভাববো না ভাবনার কথা।আমি পান্জাবীর বোতাম লাগাচ্ছি আর এসব ভাবছি। রুপম আমার রুমে এসে বললো জলদি রেডি হতে। আমি বিকেল থেকে রুমেই ছিলাম। কত্ত মানুষ আসছে। সবাই শুধু তাকিয়ে থাকে মুখের দিকে। আমার কাছে এই ব্যাপারটা সবচেয়ে বিব্রতকর ব্যাপার মনে হয়। এজন্যই নিজেকে রুম বন্দি করা।
আমি রুম থেকে বের হলাম, শেষ যখন রুমে ঢুকেছিলাম তখন বাইরে চকচকে রোদ ছিলো। আর এখন রাতের অন্ধকারে ছেয়ে গেছে আশপাশ।
বাড়িটা খুব পছন্দ হয়েছে আমার। বাড়ির সামনের খোলা মাঠ। পুরো বাড়িটা দেয়াল দিয়ে বাউন্ডারী করা। ৩ তলা বিল্ডিং, পিছনে অনেক গাছ। অনেকটা জংঙ্গলের মতাে।
অবশেষে আমি হলুদের মঞ্চে গেলাম। অনুষ্ঠান টা সেখানেই। তাদের এই আয়োজন দেখে আমার চোখ কপালে। এত অল্প সময়ে এত্ত আয়োজন। এগ গাল হেসে মনে মনে বললাম...
সময় পেলে কি জানি করতো এরা.....আমাদের দুজনকে দুপাশে বসানো হলো। একটা ৩ সিটের সোফাতে। আমি আর রয়া দুজন দুপাশে। রয়া আমাকে লুকিয়ে দেখছে। আমিও যে তাকানি তা নয়....
একবার দুজনেই ধরা পরে গেলাম একদম চোখাচোখি...
আমি হেসে দিলাম। হাসলো রয়াও। একটু পরই শুটু হলো হলুদ দেয়া।হলুদ অনুষ্ঠানের মাঝখানে আমার ফোণে কল আসলো। আমার কাছে ২ বন্ধু আর ১ বান্ধবি এসেছে সিরাজগন্জে। একেবার সারপ্রাইজ আগমন। আমি সবাইকে বলে রুপমকে নিয়ে গেলাম ওদের রিসিভ করতে।
হলুদ অনুষ্ঠান শেষ হলো ১২.৩০ টায়। যদিও আমি রয়া দুজনেই এখন আর সোফায় বসা না। মাঠের মধ্যে গোল করে সবাই আড্ডা দিচ্ছে। আমি রুপমকে বললাম
: চলো আমরা ছাদে যাবো। আসলে আমি ওদের সাথে ফ্রিলি কথা বলার একটা স্পেস খুজছিলাম, তাই...রুপম কিসের যেন একটা অাতংক নিয়ে বললো না... না বাবা বকবে...
এরপর আমরা বন্ধুরা ওদের সব কাজিনরা সবাই আলাদা ভাবে কথা বলা শুরু করলাম। রজম রয়াকেও আনলো আমাদের আড্ডাতে। আমরা সবাই কথা বলছি আর সফট্ ড্রিংকস খাচ্ছিলাম। রয়া একদম আমার বরাবর বসা, ও কোন কথা বলছে না। লজ্জা পাচ্ছে হয়তো। এখন আমি সম্পূর্ণভাবে রয়াকে দেখতে পেলাম।
রয়া....
দুধে আলতা গায়ের রং,
লাল একটা ব্লাউজ দিয়ে পড়েছে অফ-হোয়াইট জামদানি। গলায় আর্টিফিসিয়াল হলুদের গহনা। সেই লম্বা চুল, যা একেবারে ছাড়া। ঠোট জোড়ায় রক্ত লাল লিপস্টিক। জাস্ট এটুকুই। একটুও সাজেনি মেয়েটা। তবুও কত সুন্দর লাগছে মেয়েটাকে। রয়ার দিকে কেমন যেন একটা স্নিগ্ধ ভাব আছে।আমার পরিচিতর মধ্যে এমন অনেক মানুষ আছে যাদের কাওকে দেখলে আমার বিরক্ত লাগে, কাওকে দেখলে গরম লাগে, কাওকে স্নিগ্ধ অথবা কাওকে অন্য রকম শান্তি লাগে। একেবারে কারণ ছাড়াই। অন্য কারো এমন হয় কি না তা আমি জানি না। আমি আমার টা বললাম।
আচ্ছা মা তো রয়ার জন্য লাল একটা কাতান শাড়ি কিনেছিলো হলুদে পড়বার জন্য, তবে অফ-হোয়াইট জামদানি পরলো কেন ......
পরে জিজ্ঞেস করবো নি রয়াকে। রয়ার চোখগুলো খুব সুন্দর। কেমন যেন নেশা আছে ঐ চোখ দুটোয়। আমার ড্রিংকসের বোতলটা হঠাৎ হাত ফসকে পরে গিয়ে পান্জাবীটা নষ্ট হয়ে যায়। সবাই ব্যাস্ত হয়ে পরে আমাকে নিয়ে। আমি সবাইকে বলে ২য় তলায় রুমে যই চেন্জ করতে।
সেখানে গিয়ে পান্জাবীটা খুলেই ড্রেসিং টেবিলের আয়নাতে দেখি রয়া আমার পিছনে দাড়ান। আমি ওকে দেখে চমকে উঠি। ওকে দেখে কোনমতে দ্রুত পান্জাবীটা পরলাম।
আমি যখন এসেছি ও তো আসেনি আমার পিছনে। তাহলে.....?
চলবে....