শেষ পর্যন্ত - ৩

452 34 115
                                    

“দেখছি তো। কি কঠিন নাম! কি জানি ছিল....হ মনে পড়ছে... নাম লিখা ছিল ‘নীলাদ্রি হক’।”

আজমেরি বেগম সোজা হয়ে বসলেন। তিনি অত্যন্ত আশ্চর্য। তারপরও তিনি মনে মনে অত্যন্ত শান্তি পেলেন। যাক,কিছুই তাহলে শেষ হয়ে যায় নি!!

“তা এ কথা আগে বলিস নি কেন? ”

“চিঠিটা আফামণিরে দিয়াই তো মায়ের লগে বাড়িতে গেলাম”

“থাক থাক, বাদ দে এসব কথা”,হাঁপ ছেড়ে বাঁচলেন তিনি।

*******************************************

বিকেলে আকাশ বেশ পরিস্কার। আরশি ঘরে বসে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে। দাদীমা ঘরে ঢুকে একরকম জোর করেই বাগানে নিয়ে এল।

“সারাদিন ঘরে মুখ ভার করে বসে থাকিস না তো! দেখতে ভালো না। ”

কোনো কথা না বলে আরশি চায়ের কাপে চুমুক দিল। চিনিটা আরেকটু কম হলে ভালো লাগতো।

নাতনির হাবভাব দেখে আজমেরি বেগম নিজেই কথা শুরু করলেন।

“কি লিখেছে নীল? ”

আরশি কোনো কথা বলার আগেই মেইন গেটে গাড়ির হর্ন শুনতে পাওয়া গেল।

“এখন আবার কে এলো, দাদীমা?”

“কি জানি কে এলো। আজকে তো কারো আসার কথা না। তোর মা-বাবা হতে পারে। গিয়েই দেখ না”

“কেন যে বৃথা আশা কর! তোমাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দিয়ে এখনও যে এই বাড়ি দখল করে নেয়নি তা-ই অনেক ”

কথাগুলো বলার পর দাদীমার চোখের মিথ্যে আশা বিষাদে রুপান্তরিত হওয়া আরশির নজর এড়ায় নি।

“তাও আশা করি। একমাত্র ছেলে... ”

“একমাত্র মেয়েও তো আছে। অবশ্য সে সিঙ্গাপুর থাকার অজুহাত দিতে পারে। সন্তানরা কেন মায়েদের ছেড়ে চলে যায় দাদীমা?”

আজমেরি বেগমের চোখে পানি চলে আসছে। তিনি তা নাতনিকে দেখাতে চান না।

“তুই দেখ তো কে এল। আমি উপরে যাই ”

“তুমি তো পালিয়ে বাচঁলে দাদীমা ”, অস্ফুট স্বরে বলে উঠল আরশি। চায়ের কাপ নামিয়ে রেখে দেখতে গেল কে এসেছে। সে বাগান পেরোনোর আগেই আসমানী দৌঁড়ে এল।

কাঙ্ক্ষিত-অনাকাঙ্ক্ষিত Donde viven las historias. Descúbrelo ahora