মন টাকে শান্ত করার জন্য মিশু চিঠি লিখতে বসে গেল।প্রথমেই লিখল মৈত্রীর কাছে।
শ্রদ্ধেয় প্রিন্স আব্দুল্লাহ বিন দেলোয়ার হোসাইন কাজী বিড়াল মৈত্রী পরমহংসদেব,
অবাক হচ্ছেন? আসলে আপনি তো অনেক বড় মানুষ, তারউপর বিদেশ ফেরত ডিগ্রীধারী;তাই সম্মান প্রদর্শন করলাম। যাই হোক,কেমন আছেন? আমি কিন্তু খুব কষ্টে আছি।আজ আমার কলেজ যাওয়া হয়নি।খুব মন খারাপ ছিল, তাই যাইনি।আমার কিন্তু কখনো মন খারাপ থাকেনা,আজ খারাপ হয়েছে কারন আপনারা দুই ভাই।এভাবে কেউ চলে যায়? আর যাবার সময় একবার আমাকে জিজ্ঞেস করতে পারতেন, মিশু তুমি কি যাবা আমাদের সাথে? আমরা কোথাও বেড়াতে গেলে বিদায়বেলায় বাড়ির বাচ্চাগুলোকে বলি চলো আমাদের বাসায় যাই।আপনার ভাষায় তো আমি বাচ্চা।তাহলে বললেন না কেন? আমি আপনাদের বাসায় যাবো, তারপর যখন আমার উপর আপনাদের মায়া জন্মাবে তখন বাসায় চলে আসবো। সেদিন বুঝবেন। আর কিছু লিখবো না।কান্না পাচ্ছে আবারো।ও হ্যা,একটা প্রশ্ন;আপনার নামে পরমহংসদেব কেন? আপনি কি হাসের দেবতা? নাকি হংসমামা? উত্তর দিবেন।
ইতি
মিশু মনি
.
চিঠি টা শেষ করে মনে হলো মর্মকেও একটা লেখা উচিৎ। কিন্তু মর্ম'র নামটা মনে হতেই মিশুর মেজাজ গরম হয়ে গেল।কোনো এক অজানা কারনে মর্ম'র উপর খুব অভিমান জমে আছে।তবুও ও লিখতে শুরু করলঃ
মর্ম,
অনেক রাগ নিয়ে লিখছি।কয়েকটা গালি দিবো। তুমি চার বছরের বড় তাতে কি? আমি ভয় পাইনা।শোনো, তুমি একটা এক নাম্বারের ঢপবাজ ছেলে।তুমি বলছিলা আমাকে একটা ফেসবুক আইডি খুলে দিবা।কিন্তু দাওনি।তুমি একটা ময়লা চাদর।সেদিন বললা,আমি নাকি তোমার ভালো বন্ধুর মত হয়ে গেছি।অথচ যাওয়ার সময় নিজের মোবাইল নাম্বার টাও দিয়ে যাওনি।তুমি গিদ্ধড়, তুমি ছাগশিশু, তুমি একটা বা..... তুমি কি জানো তোমার উপর আমার কত্ত রাগ? আমি তোমাদের বাসায় গেলে তোমার বিছানায় হিসু করে দিবো। তোমার দামি মোবাইল এ থুথু ফেলবো। তোমার শার্ট এ নাক ঝেড়ে দিবো।তোমার গায়ে বমি করে দিবো, তবেই আমার শান্তি।তোমার বাবা আর আমার বাবা খুব ভালো বন্ধু।তারা চাইলেই আমাকে তোমাদের বাড়ির বউ করতে পারে।আমার বিয়ে হতে আরো অনেক দেরি।ততদিনে তোমার মৈত্রী ভাইয়ের দাড়ি পেকে যাবে। ওইরকম একটা বুইরা ব্যাটাকে বিয়ে করতে আমার বয়েই যাবে।আমার বিয়ে হলে তোমার সাথেই হবে।আর যদি হয়,তাহলে বাছাধন আর চিন্তার কারন নাই।প্রতিদিন অফিসে বের হবা,আমি তোমার শার্ট এ নাক ঝেড়ে দিবো। আমার নাকে অলটাইম সর্দি লেগেই থাকে।দারুন হবে কিন্তু।
ইতি
মিশু মনি
.
চিঠি দুটা ভাজ করে রাখল মিশু।এখন আর মন খারাপ ভাবটা নেই।খুব হালকা লাগছে।মর্মকে গালি দিয়ে খুব আরাম লাগছে।
চিঠি দুটো নিয়ে পোস্ট করে দিয়ে আসল মিশু।
পোস্ট অফিসে কয়েকজন ছেলে ওর চিঠি পোষ্ট করা দেখে খুব হাসছিল।মিশু এক ধমকে থামিয়ে দিয়েছে সবাইকে।
.
(চলবে......)