123 7 0
                                    

মুক্তমঞ্চে এসে গেছি। বরাবরের মতো পরিচিত চায়ের দোকানটায় বসলাম। চা ওয়ালা মামা আমাকে দেখে ছোট্ট একটা হাসি উপহার দিলেন। মামার হাসিটা অনেক সুন্দর। ভালো কোন ফটোগ্রাফারের চোখে পড়লে হাসিটা ফ্রেমবন্দী করতে ভুলবে না। প্রতিবারের মতো মামা কড়া পাত্তি দেয়া চা নিয়ে হাজির। আমি মামাকে যেমন পছন্দ করি ঠিক মামাও আমাকে। আর মামার ভালোবাসা প্রকাশ পায় পুরো এককাপ চায়ের মধ্যে। আপন মনে চায়ের কাপে চুমুক দিয়েই চলেছি। হঠাৎ মনে হলো পেছনে কেউ একজন শার্ট ধরে টানছে। আমি পেছন ফিরে দেখলাম সাত আট বছর বয়সী ছোট্ট একটা মেয়ে। ছিপছিপে গড়নের। গায়ের রঙটা হালকা চাপা। তবে তার মুখের দিকে তাকালে যে কারো মায়া লেগে যাবে। মেয়েটার অন্যহাতে অনেকগুলো শিউলি ফুলের মালা। পাশে ছোট্ট একটা ছেলে দাড়িয়ে। বয়স চার কিংবা পাঁচ। মুখে দারিদ্রতার ছাপ। চোখে চোখ পড়তেই মেয়েটা বলল----

"ভাইয়া ফুল নিবেন?"

ফুল কিনে দেওয়ার মতো মানুষ আমার কখনোই ছিল না আর এখনও নেই। তবুও মেয়েটার কাছ থেকে সবগুলো শিউলি ফুলের মালা কিনে নিলাম। সাজি বেঁচে থাকলে হয়তো ফুলগুলো পেয়ে অনেক খুশি  হতো।
আমি ওদের আমার পাশে বসালাম। চা ওয়ালা মামাকে বললাম ওদের কেক এবং বিস্কুট দিতে। ওদের সাথে খানিকটা গল্প হলো। মেয়েটার নাম তুলি আর ছেলেটার নাম মেহেদী। ওদের কথাশুনে বুঝতে পারলাম ওরা শহরের পতিতালয়ে থাকে। মানে ওদের মা একজন পতিতা। ওদের বাবার কথা জিজ্ঞেস করলে ওরা বলে, "ওরা ওদের বাবাকে কোনদিন দেখে নি।" তুলি পড়াশুনা করে না আর মেহেদীও হয়তো করবে না। আর দশটা সাধারণ মেয়ের মতো তুলির স্কুলে যাওয়ার কথা ছিল। মেহেদী হয়তো তার মায়ের কাছে "অ আ " শিখতো। কিন্তু নিয়তি তাদের দাড় করে দিয়েছে এক চরম বাস্তবতায়।

শিউলি ফুল [Completed‌‌]Where stories live. Discover now