বিপদের বন্ধু - সামারসেট মম

311 6 0
                                    

ত্রিশ বছর ধরে আমি আমার সঙ্গীদের লক্ষ্য করছি। আমি তাদের সম্পর্কে খুব ভাল একটা জানি না। মুখাবয়ব যাচাই করে কোন কিছু বলতে আমি দ্বিধান্বিত হয়ে পড়ি। তুবও আমর মনে হয়, লোকজনকে যাচাই করার ক্ষেত্রে মুখটাকে আমরা সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকি। মুখাবয়ব, তাকানোর ভঙ্গি, চোয়ালের গঠন দেখে আমারা সিদ্ধান্তগুলো নিই। অবাক লাগে এতে ঠিকের চেয়ে বেঠিকই বেশি হয় কি-না। কোন উপন্যাস বা নাটক বাস্তবতার বিচারে এত অমিল কারণ লেখকেরা, হয়তো প্রয়োজনেই, তাদের চরিত্রগুলো নিখুঁতভাবে তৈরি করে। তারা এগুলো স্ববিরোধী হিসাবে তৈরি করতে পারে না, এত করে চরিত্রগুলো অবোধগম্য হয়ে পড়ে। কিন্তু আমরা বেশির ভাগই স্ববিরোধীদের মধ্যে পরি। আমরা হলাম সামঞ্জস্যহীন কতগুলো গুণের খিচুরি। অনিচ্ছায় আমি ঘাড় ঝাঁকাতে বাধ্য হই যখন দেখি কেউ যখন বলে যে কোন লোক সম্পর্কে তারা প্রথম যে ধারনাটা করে তাই সঠিক। আমার মনে হয় তাদের অন্তদৃষ্টির পরিসর খুব ছোট অথবা তারা খুবই অহঙ্কারী। আমার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা হল এ রকম যে কাউকে আমি যত দীর্ঘদিন ধরে চিনি ততই সে আমাকে ধাঁধায় ফেলে দেয়। আমার পুরোন বন্ধুদের সম্পর্কে আমি শুধু এটাই বলতে পারি যে তাদের সম্পর্কে প্রধান বিষয়টাই আমি জানি না।

আমার ভেতর এই রকম বোধগুলো উদয় হওয়ার কারণ হল, সকালের খবরের কাগজে পড়েছিলাম যে কোবেত এডওয়ার্ড হাইড বার্টন মারা গিয়েছে। তিনি ছিলেন বণিক এবং ব্যবসার জন্য জাপানে অনেক বছর কাটিয়েছন। আমি তাঁকে খুব কমই জানতাম, কিন্তু তাঁর বিষয়ে আমার আগ্রহ ছিল কারণ-সে একবার আমাকে দারুণ বিস্মিত করেছিল। আমি যদি গল্পটা তার নিজের মুখ থেকে না শুনতাম আমি কখনোই বিশ্বাস করতাম না যে তিনি এ রকম একটা কাজ করতে পারেন। এ্টা আরো চমৎকৃত করেছিল এই কারনে যে তাঁর চেহারা ও আচার-আচরনে বিশিষ্টতা প্রকটভাবে ফুটে উঠতো। তিনি যেন একজন পরিপূর্ণ নিখুঁত মানুষ। তিনি ছিলেন ক্ষুদে-কৃশকায় এবং খুবই হালকা পাতলা। উচ্চতায় মোটেই পাঁচ ফিট চারের চেয়ে বেশি হবেন না। সাদা চুল, ভাঁজ পড়া লাল মুখ ও নীল চোখ। আমার মনে হয় তাঁর বয়স তখন ষাট হবে। পরিবেশ এবং বয়স বিবেচনা করে সব সময় পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি পোশাকআশাক পরতেন।

বিদেশী গল্পসংগ্রহDove le storie prendono vita. Scoprilo ora