১।। সৃষ্টির সূচনা

105 14 1
                                    

© নউসিয়াত জাহান

***

----- হ্যালো মহারাণী ভিক্টোরিয়া! আমার মতো এত বড় জলজ্যান্ত মানুষটাকে কী আপনার চোখে পড়ছে না? আগে তো একটু হলেও চোখে দেখতেন। এখন সেই পাওয়ার টুকুও চলে গেছে নাকি?

শান্তর কথা শুনে সব বন্ধুরা হো হো করে হেসে উঠলো। হৃদি কোলের উপর রাখা বইটা বুকমার্ক দিয়ে বন্ধ করে তার ৮৪০ পাওয়ারের চশমাটা ঠিক করে মাথা উঁচু করে তাকালো শান্তর দিকে। শান্ত তখন দাঁত বের করে একটা হাসি দিয়ে হৃদির গা ঘেঁষে মাঠের উপর বসে পড়লো। শুরু হলো হৃদির অস্বস্তি লাগা। বেস্ট ফ্রেন্ড হলে কী হবে, শান্তর সাথে হাজার বছরের বন্ধুত্ব থাকলেও হৃদির এই অস্বস্তি যাবে না। হৃদি একটু সরে বসলো। শান্ত ভ্রু কুঁচকে ইশারা করলো, "কী?"।
হৃদি মাথা নাড়ালো, "কিছু না"। শান্ত আবার গল্পে মেতে উঠলো বন্ধুদের সাথে।
একটু আগেও যেন আড্ডাটা জমছিলো না। তাই জুনায়েদ ফোন করে শান্তকে নিয়ে আসলো। এইতো, আড্ডাটা এখন জমে উঠেছে। বর্তমানে তাদের ব্রেক পিরিয়ড চলছে। এরপরে একটা ক্লাস আছে। তাই এর আগের সময়টুকু আড্ডা দিয়ে পার করা আর কি।

হৃদি চশমার আড় চোখে শান্তর দিকে তাকালো। ছেলেটা যেমন হাসতে পারে তেমন হাসাতেও পারে।
ও এমনই।
শান্ত নাম হলেও বড্ড অশান্ত সে।
ভার্সিটিতে এবার ফোর্থ সেমিস্টারে। কিন্তু তার আচরণ গুলো ক্লাস নাইনের দুষ্টু ছেলেদের মতোই রয়ে গেছে। দেখতে সিনেমার হিরোদের মতো হলেও স্টাইল পুরোই ভিলেনদের মতো। কালো ঘন চুলগুলো সর্বদাই জেল দিয়ে খাড়া খাড়া করে রাখে। হৃদির মনে হয় ছেলেটা ঘুমানোর আগেও চুলগুলোকে জেল লাগিয়ে ঠিক করে খাড়া করে তারপর ঘুমায়। শান্তর সাথে পরিচয় হওয়ার পর এই পর্যন্ত তার লম্বা চুলগুলোকে ভালো করে নামিয়ে আঁচড়াতে হৃদি কখনো দেখেনি।
গলায় সবসময় থাকে চেইন আর হাতে হাবিজাবি ব্রেসলেট। টি-শার্ট বা শার্টের কলার সর্বদা খাড়া করে রাখা। ছেড়াবেড়া জিন্সের প্যান্ট অথবা থ্রি কোয়ার্টার। পায়ে স্পোর্টস ক্যাড‍্স। পুরাই গুন্ডা লুক।
প্রথম দেখায় কেউই ছেলেটিকে ভালো বা ভদ্র ছেলে বলবে না। আচরণও সিনেমার ভিলেনদের মতোই। এখানে মারামারি করে তো ওখানে ঝামেলা লাগায়! পুরো ভার্সিটির সবাই তাকে 'বিধ্বংসী শান্ত' নামেই চেনে।

হৃদয় দেওয়ার তিথিWhere stories live. Discover now