#মাতোয়ারা
#পর্ব_১৭ইরিনের বাবা বিয়ে করতে আমার গাড়িতে রওনা হলেন। ইরিন বাবাকে তুলে দিয়ে বললো,
---আমি অন্য গাড়িতে আসছি।ইরিনের ফুফু বেছে বেছে এসে আমার গাড়িতেই বসলেন। আমি দাঁত কিড়মিড় করে ইরিনকে বললাম,
---ইরিন, বরযাত্রী যেতে যেতে আমি যদি তোমার ফুফুর মাথা ফাটিয়ে দিই, তুমি কি খুব রাগ করবে?
ইরিন বিরক্ত চোখে তাঁকালো।
---আপনার সবসময় শুধু ভায়োলেন্ট ভাবনা। ফুফু এতটাও খারাপ নয়।
---তোমার ফুফা আছে?
---না। সাতবছর হয় মারা গেছে। তখন থেকেই তো ফুফু একা। বেচারি বড়ো দু:খী।
---কি করে মারা গেলো?
---ফুফার হার্টে সমস্যা ছিলো। হার্ট ফেইল করে মারা গেছেন।
---তোমরা ভালো করে তদন্ত করোনি তো! করলে জানতে তোমার ফুফু এই মৃত্যুর জন্য দায়ী। হার্টটা উনার জন্যই ফেইল করে গেছে।
ইরিন ফুফুকে কিছুক্ষণ অন্য গাড়িতে বসবার জন্য টানাটানি করলো। উনি কিছুতেই রাজি হলেন না। ইরিন অসহায় কণ্ঠে বললো,
---মারামারির মত কিছু বললে আমাকে ফোন করবেন।
---ফোন করার তো টাইম পাবো না। তারচেয়ে বরং তুমি আমার গাড়িতে এসো।
ইরিন অগত্যা বাধ্য হয়ে আমার পাশে বসলো।
ইরিনের ফুফু গাড়িতে বসেই প্রথম যে কথাটা বললেন তা হলো,
---বাবা, তোমার কি মদ-গাঞ্জার অভ্যাস আছে?
সিগারেট যে খাও সেটা আমি জানি। ঠোঁট দেখলেই বুঝা যায়। যারা রাজনীতি করে তারা শুনেছি বাবা খায়। বাবা বুঝলেনা ওই যে লাল ট্যাবলেট। ইয়াবা। বাবা তোমার কি পারমানেন্ট অভ্যাস? নাকি মাঝে মাঝে?
ইরিন অস্থির কণ্ঠে বললো,
---ফুফু, উনি সিগারেটও খান না।
---তুই চুপ কর। ছাত্র রাজনীতি করা পোলাপান আমাকে চেনাতে আসবি না? আচ্ছা বাবা, তোমরা তো চাঁদাও পাও তাইনা? তা বাবা চাঁদা কি ইউনিভার্সিটির ছেলেদের থেকেই নাও, নাকি তুমি বাইরের এলাকা থেকেও নাও? চাঁদা আদায়ের সিস্টেমটা কি? মাসিক না সাপ্তাহিক?
আমি ইরিনের দিকে তাঁকিয়ে চোখ রাঙালাম।
ইরিন গিয়ারের উপর রাখা আমার হাতটা শক্ত করে ধরলো। অনুনয়ের চোখে তাঁকালো।
ইরিনের হাত ধরায় আমার মনে তখন অন্যরকম আনন্দ!
ইরিনের ফুফু কথা বলতেই থাকলেন।
---বাবা তোমাদের গ্রুপের নাম কি? আমাদের পাড়ায় আছে একদল। কেউ নতুন বাড়ি বানালেই চাঁদা দেওয়া লাগে। ইট বালি আনবার আগেই চাঁদা দেও। পাড়ায় তাঁর নাম কংক্রিট মতিন! ইট কংক্রিট করবার আগেই চাঁদা দিতে হয় কিনা। বাবা তোমার দলের নাম কি?