চুপকথা

20 2 0
                                    


বাবার পোস্টে মনিরুল স্যারের ট্যাগ করতে দেখে আমার ভীষণ রাগ ধরছিল। মনিরুল স্যার আমাদের  ডিপার্টমেন্টেরই স্যার। আমার এমনিতেই বাবার সাথে কোন স্যারের পরিচয় কিংবা মেলামেশা খুব একটা পছন্দ না। এর ফলে আমার অনেক গোপন কথা শত্রুপক্ষের কাছে পাচার হয়ে যায়।

আমি ফেসবুকের হোমপেজ স্ক্রল করছি আর রাগে ফুলছি। ঠিক তখনই আমার ফোনের স্ক্রিনে অবনীর নামটা ভেসে উঠল। অবনী ফোন দিয়েছে। এই মেয়ে কি নিশাচর প্রাণী নাকি ? এতো রাতে কি কেউ ফোন দেয় ? কোন কান্ড জ্ঞান নাই এই মেয়ের।

এমনিতেই আমার মাথা গরম হয়েছে আছে। হোক সেটা অহেতুক কারণ। তবুও কেন জানি আমার রাগ হচ্ছে। প্রচন্ড রাগ হচ্ছে। বোধহয় কাউকে খুন করতে পারলে এই রাগ কমবে। কিন্তু এই রাতে কাকেই বা খুন করা যায় ?

এইসব আজগুবি চিন্তা ভাবনা করতে করতে ফোনটা কেটে গেল। কিছুক্ষণ পর আবার অবনীর ফোন এলো। আমি এবার কাল বিলম্ব না করে ফোনটা ধরে ফেললাম।

অবনী: ফোন ধরতে এতো টাইম লাগে কেন ?

কি মেয়েরে বাবা !!! আমাকে এতো রাতে ফোন দেওয়ার জন্য আমার ওকে ঝাড়ি দেওয়ার কথা। কিন্তু উল্টো ও আমাকেই ঝাড়ি দিচ্ছে।

অবনী: কিরে কথা বলছিস না কেন ?

আমি চুপ করে আছি। ইচ্ছে করেই। ওর কথা শুনতে ভালো লাগছে কেন জানি। খেয়াল করলাম আমার রাগটাও আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে। এইটা সবসময় হয়। অবনী যখনই আমার সাথে কথা বলে তখনই আমি দুনিয়াদারি থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

আমি জানি এখন ওর ঘুম আসছে না। আর সে জন্য ও সারারাত আমার সাথে কথা বলবে আর আমাকেও ঘুমাতে দিবে না।

অবনী শাহরিয়ার। নাম এবং স্বভাব দুটোই ভিন্ন। একই ডিপার্টমেন্টের হওয়ায় একে অপরকে চিনতাম ঠিকই কিন্তু কখনো আগ বাড়িয়ে কথা বলি নি। আমাকে দেখলে প্রথমে অনেকেই শান্ত এবং ভদ্র মনে করে। কিন্তু আমি যে কি তা একমাত্র আমি আর আমার উপরওয়ালায় ভালো জানেন।

সাধারণত আমি মেয়েদের সাথে খুব একটা কথা বলি না। এর কোন বিশেষ কারণ নেই। এমনিতেই। ভালো লাগে না কথা বলতে। তবে আমার জীবনের প্রথম বন্ধুই ছিল এক মেয়ে। সে অবশ্য আমার থেকে কেবল এক বছরের বড় ছিল।

নিঃসঙ্গ ছায়ার গল্পগুলিWhere stories live. Discover now