: তুমি কি তাহলে আমাকে বিশ্বাস করতে পারছ না ? (আবির)
প্রহা আবিরের দিকে তাকালো। আবির এখনো তার হাতটা শক্ত করে হাত ধরে রেখেছে। তারা দুজনে একটা ১০ তলা ফ্ল্যাট বিল্ডিংয়ের ছাদের একেবারে কোনায় গিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। নিচে ছুটন্ত গাড়ি গুলোকে ক্ষুদ্র পিপিলিকার মতো মনে হচ্ছে। এখান থেকে লাফ দিলে নিশ্চিত সোজা ওপরে। বাঁচার কোন চান্স নেই।
এই ছেলেটা আশ্চর্য রকমের উন্মাদ। এখন একে কে বোঝাবে যে মরতে সে যদি কেউ বলে আমিও মরতে চাই তাহলে চলো আমরা দুজনে এক সাথে লাফ দিয়ে মরে যায়। প্রহা মনে মনে আবিরের চৌদ্দ গুষ্টি উদ্ধার করে দিল। আবির আবার বলল,
: কি হলো ? চলো লাফ দি। তুমি লাফ দিতে যদি ভয় তাহলে চিন্তা করো না আমি তোমার হাত ধরে লাফ দিচ্ছি। কি দিব ? (আবির)
প্রহা এবার একটু অস্বস্তি বোধ হচ্ছে। এ কি পাবনার থেকে পালিয়ে এসেছে নাকি ? বলতেছে লাফ দিতে ভয় ফেলে সে সাহায্য করবে। নাহ। প্রহার এবার আর আত্মহত্যা করা হয়ে উঠল না। সে রেলিং থেকে দূরে গিয়ে একটা সিমেন্টের বেদির উপর এসে বসল। মুখে হাত দিয়ে কান্না জুড়ে দিল। কেন হয় তার সাথে এমন সবসময়। সে তো আর এই জীবনটাই রাখতে চাই নি। তাহলে কেন এই উটকো ঝামেলাটা এসে বাঘরা দিল ?
: যাহ্ বাবা। আমি তো লাফ দিতে সাহায্যের কথা বলেছি। তাতেই এতো কান্না। (মনে মনে) (আবির)
আবির গিয়ে প্রহার পাশে বসল। এমন নয় যে প্রহাকে খুব ভালো করে চিনে। আবিররা থাকে ছয়তলায় আর প্রহারা পাঁচতলায়। একি যায়গায় থাকা সত্ত্বেও আবির কোনদিন প্রহার সাথে কথা বলেনি। প্রহা এমনিতে বেশ হাঁসি খুশি স্বভাবের মেয়ে। তার নিচতলা থেকে প্রায় প্রহার হাঁসির শব্দ শোনা যায়। এমন প্রাণোচ্ছল মেয়েটা আজকে হটাৎ আত্মহত্যা করার জন্য ছাদে এসে লাফ দিতে যাচ্ছিল তাতে সে বেশ অবাক।
আবিরের সাথে প্রহার এই প্রথম কথা বলল। তার মায়ের সাথে যদিও বা প্রহার মায়ের বেশ সক্ষতা আছে তবে প্রহার সাথে সেই ভাবে কোনদিন তার আলাপ হয়নি। প্রতি রাতে ছাদে এসে কানে হেডফোন গুজে জ্ঞান শুনতে আর অহেতুক আকাশের দিকে তাকিয়ে তারা গুনতে তার বেশ ভালোই লাগে। এ পর্যন্ত সে এক হাজার একশত একান্নটা তারা গুনেছে।
STAI LEGGENDO
নিঃসঙ্গ ছায়ার গল্পগুলি
Storie d'amoreকিছু ছোট বড় গল্পের সংগ্রহশালা। কিছু হয়তো সচারচর পরিচিত, কিছু হয়তো অপরিচিত। বিভিন্ন ঘরানার মধ্যে রচিত গল্পগুলোর মধ্যে কিছু হয়তো অর্থবোধক এবং কিছু বিশ্লেষণধর্মী। কিছু গল্প হয়তো কিঞ্চিৎ সমসাময়িক উপযুক্ত নাও হতে পারে।