#2

76 5 0
                                    

"একটি আমূল লৌহশলা বিঁধিয়ে দুচোখ জুড়ে,
আমি নিজের জন্যে রাখি শোয়ার গর্ত খুঁড়ে

জ্বলন্ত তুই চিতার আগুন, কিংবা সাগর, খা--
গোটা জীবন দেখার ইচ্ছে, দেখতে পাব না।"


#


রুদ্র বসু। চেনে কি কাঁকর? অন্টারিওয় প্রবাসী বাঙালি, হাসিমুখ স্ত্রী, দুই উচ্ছল সন্তানের ছবি রয়েছে ফেসবুক প্রোফাইলে। অবশ্য আজকাল তা দিয়ে আর কীই বা বোঝা যায়। ফাউন্ডেশন, আইশ্যাডোর নিচে ঢেকে যায় মারের দাগ। বাচ্ছারা ঠাকুমার ঝুলি পড়ে না, জানে না অবন ঠাকুর, হান্স অ্যান্ডারসেন। রাতের ইনসুলিন নেবার পর অভুক্ত থেকে শুতে চলে যায় অসুস্থ পুরুষ, মনোমালিন্যের তীক্ষ্ণ অসি তাকে ছিঁড়ে কুটিকুটি করতে থাকে তারপরেও। এই সমস্ত পথের শেষে তবু তো থাকেই ঝাঁ-চকচকে সেল্ফি, দামী কেনাকাটা, ফল-এর লাল কমলা উজ্জ্বল সোনালি আলোছায়ায় নতুন গাড়ির পাশে সপ্রতিভ, গর্বিত অবস্থান। রুদ্র বসুকে সে মনে করতে পারে না, কিন্তু ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট অ্যাক্সেপ্ট করে নেয়। 

প্রোফাইলের অন্তরালে যে অস্তিত্ব, সে সাড়া দেয় তৎক্ষণাৎ। মেসেঞ্জারে পপ আপ করে, তাতে লেখা, আপনি আমাকে চিনবেন না। চিনতে পারার কথা না। 

--- চিনি না, ঠিকই। রাত্তির বলল আপনার সম্বন্ধে। শিলিগুড়িতে থাকতেন? 

--- হ্যাঁ। হাকিমপাড়ায় বাড়ি ছিল। আপনারা থাকতেন রবীন্দ্রনগরের দিকটায়। 

--- দু'টো জায়গার দূরত্ব কিন্তু অনেকটাই। 

--- অন্টারিও আর মুম্বইএর চেয়েও বেশি?

--- তখন কি আর ইন্টারনেট ছিল! এই বিবিধের মাঝে মিলন মহান ধরণের ব্যাপারটা এতোটা বেড়েছিল কি! 

--- হা হা! আপনি তখনও খুব পড়তেন। যখনই যেতাম ওপাশে, দেখতাম পড়ছেন। 

--- অতোদূরে পড়তে আসতেন বুঝি?

--- মানে জানতে চাইছেন কেন আসতাম? আসলে আপনাকে দেখতে আসতাম। 

সাইকেল (The Cycle)Where stories live. Discover now