॥ এক ॥
দস্যু সর্দারের পায়ে বেড়ি লাগিয়ে রাখা হয়েছিল। দিলীপ সিংহের নির্দেশ ছিল, তাকে যেন কোন রকম বিশ্বাস না করা হয়। দু'বেলা তার খাবার পৌঁছিয়ে দেয়ার ভার ছিল আলীর উপর। আলী সর্বদাই ভাবতে হয়ত তার পেট ভরেনি।
যুবায়রের ব্যবহার তার কাছে অপ্রত্যাশিত ঠেকছিল। যুবায়র রােজ দু'একবার তার কাছে যেতেন। প্রথমে তিনি ভাঙ্গা ভাঙ্গা সিন্ধীতে তার সঙ্গে কথা বলতে চেষ্টা করেন; | কিন্তু তিনি শীঘ্রই জানতে পারলেন সে অনায়াসে আরবীতে কথা বলতে পারে।
একদিন সে যুবায়রকে বলল মৃত্যুর অপেক্ষায় বেঁচে থাকা অত্যন্ত কষ্টকর। যদি আমাকে দয়া করতে না চান তবে আমার প্রাপ্য শাস্তি তাড়াতাড়ি দিলেই আমি সুখী হব।
যুবায়র জবাব দিলেন- তােমার বৃদ্ধ বয়সের উপর আমার কৃপা হয়। কিন্তু মুক্ত হয়ে তুমি আবার দস্যুতা আরম্ভ করবে না- সে সম্বন্ধে আমি যতক্ষণ পর্যন্ত স্থির নিশ্চয় না হতে পারি, ততক্ষণ তােমাকে কয়েদ থেকে ছাড়া সম্ভব নয়। সে জবাব দিল- আমার জাহাজ ডুবে গেছে। বাকী জীবন বনে লুকিয়ে কাটানাে ছাড়া এখন আর আমি কি করতে পারি?
দস্যু সর্বত্রই বিপদ সৃষ্টি করতে পারে। তুমি সমুদ্রে জাহাজ লুট করতে। ডাঙ্গায় লােকের বাড়ীতে ডাকাতি করবে। আমি যদি তােমাকে বসরা নিয়ে যাই সেখানে সম্ভবত তােমার হাত কেটে দেয়া হবে। তােমার বিচার জয়রামের হাতে ছেড়ে দিলে বাকী জীবন তােমাকে জেলের কচুরীতে কাটাতে হবে।
দস্যু সর্দার জবাব দিল- আপনার সরকারের কথা কিছু বলতে পারি না। কিন্তু আমি অবশ্যই বলবাে আমাকে শাস্তি দেয়ার কোন অধিকার দেবল সরকারের নেই।
তা কেন?
কারণ এই যে, গত ক'বছর ধরে আমি সমুদ্রে জাহাজে আরােহণ করে যা করছি, | সিন্ধু রাজও সিংহাসনে বসে তাই করছেন। পার্থক্য শুধু এই যে, তাঁর কর্মচারীরা দুর্বল ও দরিদ্রের শােষণ করে এবং আমার সাথীরা ছােট ছােট নৌকার পরিবর্তে কেবল বড় জাহাজ লুট করে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে উভয়ের ব্যবসা একই। তবে আমাদের নাম ভিন্ন। আমি ডাকাত আর তিনি রাজা। তার পিতাও তার মত রাজা ছিলেন, কিন্তু আমার পিতা ডাকাত ছিলেন না। আমি নিজেও ডাকাত হতাম না। কিন্তু রাজার অত্যাচার আমাকে ডাকাত বানিয়েছে। যা হােক এসব কথা বলে কোন ফল নেই। আপনি বিজয়ী এবং আমি পরাজিত। কিন্তু আমি এটুকু প্রার্থনা করব যে সিন্ধু-রাজের কৃপা ও দয়ার উপর না ছেড়ে আপনি আমাকে যে শাস্তি দিতে চান দিন।
যুবায়র বললেন- আমি তােমার পূর্ণ কাহিনী শুনতে চাই। কিছুক্ষণ ভেবে দস্যু সর্দার সংক্ষেপে তার কাহিনী এরূপ বর্ণনা করলঃ
BINABASA MO ANG
মুহাম্মদ বিন কাশিম
Historical Fictionলেখকঃ নসীম হিজাজী সার সংক্ষেপঃ ৭১২ শতাব্দী৷ লংকা রাজ কর্তৃক বাগদাদ খলিফার নিকট প্রেরিত উপঢৌকন লুন্ঠন করল দেবল রাজের জলদস্যু বাহিনী৷ বন্দী হলেন এক আরব তরুণী, ইতিহাসে তার নাম এসেছে নাহিদ নামে৷ বন্দি অবস্থায় লিখলেন এক অবিস্মরণীয় চিঠি যা বদলে দিল ঐ অঞ্চ...