এখন দিন।এই শহরের সমস্ত পুরুষমানুষ এখন যে যার কর্মস্থলের দিকে রওণা দিয়েছে।তাদের মধ্যে কেউ কলেজে,কেউবা অফিসে,কেউবা দোকানে,কেউ আবার ব্যবসায়ী মানুষ,কারুর আবার রিক্সা অটো চালিয়ে দিন গুজারণ হয়,কেউবা ভোর বেলায় পাইকারি দরে সবজি কিনে বাজারে বসে বেচতে।এই পুরুষমানুষরা নিজেদেরকে এক একটা বড় সমাজবাদী হিসাবে জাহির করে,জাহির করে তারা সমাজে নারীদের কত সম্মান করেন।অথচ নিজের বাড়িতে কন্যা সন্তানের আগমণ বার্তা পেলে প্রথমে এদের মুখেই হতাশার চিহ্ন প্রকাশ পায়,সেই মেয়ে বড় হয়ে ওঠার পর উচ্চশিক্ষার ইচ্ছা প্রকাশ করলে,তার সেই ইচ্ছাটাকে পিষে মেরে তাকে আরেক পুরুষের হাতে তুলে দেয় তার হয়ে খাটতে জীবনভোর। অবশ্য এই সমাজে ব্যতিক্রমিও কিছু রয়েছে তারা ভগবানের দূত।আর দিনের এই সমাজবাদী ভদ্রলোকের দলের মধ্যে কিছু মুখোশধারী পুরুষ রাত্রে তাদের আদিম হিংস্র প্রবৃত্তি,চাহিদা মেটাতে শহরের এই জায়গায় ভিড় করে।দিনেরবেলায় মুখোশ পরিহিতা এই সমস্ত পুরুষ দেখায় যে তারা নারীকে কত সম্মান করে,অথচ মাঝ রাতে তাঁরার হাঁটের কোনো একটা অন্ধকার ঘরের মধ্যে এরা নারীদের শরীরটাকে নিয়ে খেলে তার সমস্ত রস শুশে নিয়ে,টাকা ছুঁড়ে দিয়ে যখন দুর্ব্যবহার করে তখন এদের কাছে নারীর মর্যাদা কী?তা স্পষ্ট ধরা পরে।এই সমস্ত ভদ্ররূপী পুরুষদের জন্যই দেহ ব্যবসা আজও টিকে আছে।আজও পৃথিবীর বহু জায়গায় বহু নারী কোনো কারণে কিংবা কখনও বিনা কারণে দালালদের চাপের প্রভাবে তারা বাধ্য হচ্ছে এই পথে নামতে।অথচ দোষ কিন্তু এই নারীগুলিরই হয় যারা আর্থিক কারণে,পাচার হওয়ার জন্য এই জীবনটাকে বেছে নেয়।এই নারীগুলি সমাজে অচ্ছুৎ,ঘৃণিত,চরিত্রহীন হয়ে থেকে যায়।কেউ বিচার করে দেখেনা যে মেয়েগুলির হৃদয় কেমন?তারা কী কারণে এই রাস্তা বেছে নিতে বাধ্য হল? ব্যস ঘৃণার পাত্র হয়ে যায়।কিন্তু যারা এই ব্যবসাগুলোয় আজীবন টাকা,মদত জুগিয়ে আসছে,যাদের জন্য এই ব্যবসার এত রমরমা তারা সমাজের কাছে আজও সম্মানীয় হয়ে আছে।
এইরকমই নোংরা জগৎ-এ রুহিকা এসেছে যে ছয়মাস হয়ে গেল।এই জগৎ-এ আসার পর কেউই তাকে আর মানুষের চোখে দেখেনি যৌনবস্তু হিসাবে দেখেছে সবাই।হাজারো পুরুষ এমনকি মাঝে সাঝে মহিলারাও তার এই দেহটি কাঁমড়ে খেয়েছে আর তার দাম মিটিয়ে দিয়ে চলে গেছে পালা শেষ হলেই।সত্যি তার শরীরেরও একটা দাম হয়? সে যে কষ্ট অত্যাচার সহ্য করছে তারও দাম হয়??আর এতটা সস্তা সে??ভাবতে ভাবতে রুহিকার চোখ থেকে জল গড়িয়ে পরে।আজ হঠাৎ কেন তার এমন লাগছে কে জানে?
YOU ARE READING
গণিকা
Short Storyচুমকি ভাগ্যচক্রে একজন দেহব্যবসায়ী হতে বাধ্য হয়েছে।একদিন তাদের কোঠায় চুমকির ছাত্রাবস্থার প্রিয় লেখক নিশান্ত ঘোষ এসে পৌঁছায় তার পরবর্তী লেখার জন্য তথ্য যোগার করতে... এরপর কি হল?তা জানতে হলে পড়তে হবে।