শেষের কথাটা রুহিকাকে এক ধাক্কা দিয়ে বাস্তবে নিয়ে এল।এই ভোর কোনো ভালো সংকেত নিয়ে আসছেনা বরং রুহিকা যে আবার সেই জায়গায় ফিরে যেতে হবে তারই বার্তা দিচ্ছে এই আসন্ন ভোরের আলো।রুহিকা চেয়েছিল যে এই রাতের যেন কোনোদিন ভোর না হয়,আর তাকেও যেন না ফিরতে হয় তাঁরার হাঁটে কিন্তু সময় বিশেষ করে ভালো সময় কারুর জন্য থামেনা বা অপেক্ষা করেনা এবং বেশি আসেওনা।কি আজব লাগছে রুহিকার হঠাৎ। মানুষ শুভের আরম্ভ বলতে ভোরকে বোঝে আর রাত হল ঘন যন্ত্রণার প্রতীক রুহিকার কাছেও রাতগুলো নিষ্ঠুর ছিল এই টানা ছটা মাস কিন্তু এই রাত সমস্ত সংজ্ঞা ওলোট পালোট করে দিয়েছে।এই একটা রাত নিশান্তোর সাথে কাটানো তার জীবনে মুক্তি,আনন্দ,প্রেম সবকিছু অথচ এর শেষ এসে উপস্থিত।
"কি ভাবছেন?"
"ভোর হলেই আমাকে চলে যেতে হবে।" রুহিকা তার চোখে করুন আবেদন নিয়ে নিশান্তোর দিকে তাকায়।নিশান্তোর বুকের বাঁ দিকটা খচ করে ওঠে রুহিকার কথা শুনে।হঠাৎ কণিকার ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা মনে পরে যায় তার।তার মনে হয় সে কিছুতেই রুহিকা যেতে দেবেনা যাই হয়ে যাক কিন্তু সেটা কি সম্ভব? নিশান্ত কি পারবে সারা সমাজের সাথে লড়ে এই লাঞ্ছিত যুবতীকে বাঁচাতে,তার কাছে রাখতে সারাজীবন? সারা জীবন? সে কি ভাবছে? তাহলে এইটুকু সময় কি সে?এইটুকু সময়ে রুহিকার সাথে এত ঘনিষ্ঠ হল কখন?এই টান তার উপর কখন জন্মালো? ওকি আজ ভোরে চলে গেলে আর কোনোদিনো নিশান্ত দেখা পাবেনা ওর?
"যেতে কি হবেই?মানে যদি কোনো উপায়ে আপনাকে এখানে বা এই সমাজে স্থান দেওয়া যায় ওখান থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে এসে..."রুহিকা নিশান্তোর কাছে এগিয়ে গিয়ে নিশান্তোর মুখটা নিজের হাত দিয়ে চেপে মাথা নেড়ে বাঁধা দিয়ে বলে,
"না তা হতে পারেনা।হলে দুজনেরই বিপদ।রুমা মার লোকেরা আমাকেও শেষ করে দেবে আর আপনাকেও বদনাম করে ছাড়বে।আর আমি কখনই চাইনা যে আপনার বদনাম হোক।আমি চাই আপনি যেরকম আপনার সৃষ্টির মাধ্যমে সকলের মনের উচ্চস্থানে সগৌরবে বিরাজ করছেন সে ভাবেই সারাজীবন বিরাজ করে যান।আমার প্রিয় লেখক বা কবির গায়ে আমার জন্য কলঙ্ক লাগতে দিতে পারিনা তাই আমি যেই জগৎ থেকে এসেছি সেই জগৎ-এ ফিরে যেতে হবে আমাকে।আর তাছাড়াও ওই জগৎ থেকে ফিরে আসলেও আমাকে আর এই সমাজ মেনে নেবেনা পুরোপুরি আর আমিও কি বেশ্যা হওয়ার এই যন্ত্রণা,এই ছয় মাসের স্মৃতি থেকে কোনোদিন মুক্তি পাবো? শেষে ময়ূরের পালক পরিহিতা কাক হয়ে যাবো।"
YOU ARE READING
গণিকা
Short Storyচুমকি ভাগ্যচক্রে একজন দেহব্যবসায়ী হতে বাধ্য হয়েছে।একদিন তাদের কোঠায় চুমকির ছাত্রাবস্থার প্রিয় লেখক নিশান্ত ঘোষ এসে পৌঁছায় তার পরবর্তী লেখার জন্য তথ্য যোগার করতে... এরপর কি হল?তা জানতে হলে পড়তে হবে।