চুমকি নিশান্ত দুজনে উদ্দেশ্যহীনভাবে হেঁটে চলেছে রাস্তায়।কিছুক্ষণ আগে পর্যন্ত মানুষের আনাগোনা ছিল রাস্তায়।এখন প্রায় নেই।দু একটা অটো মাঝে সাঝে চলে যাচ্ছে।দেরি অবধি যে দোকানগুলো খোলা থাকে সেগুলো বন্ধ হতে শুরু করেছে।তারাও সব যে যার মতন গোছগাছ করে বাড়ি যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।রাস্তার উপর বাড়িগুলোর গেট বন্ধ হতে শুরু করেছে কিছু কিছু বাড়ির আবার আলোও নিভে গেছে ইতিমধ্যে।একটা বাড়ির পাশ দিয়ে যেতে চুমকি দেখল মা বিছানা পেতে মেয়েকে ডেকে ঘুমানোর আদেশ দিচ্ছেন।চুমকির নিজের মায়ের কথা মনে পরে গেল।তার মাও রোজ এমনভাবে বিছানা করে চুমকি আর তার বোনকে ডাকত।তারপর সে আর বোন মিলে ঘুমাতো আর মা বাকি কাজ সেরে সমস্ত ঘরের লাইটগুলো বন্ধ করে তাদের দুইবোনের শোয়া আরেকবার দেখে তারপর নিজে ঘুমাতে যেত।সেইসব দিন আজ সত্যিই কি হারিয়ে গেল চুমকির জীবন থেকে?শুধু দিন কেন মানুষগুলোও?সেকি আর চাইলেও বুঝি ফেরত পাবেনা তার সেই জীবনটাকে? মাকে বাবাকে বোনকে আর সে কোনোদিনো দেখতে পারবেনা?
"আপনার নামটা কি?"
একটু ভেবে চুমকি উত্তর দিল,
"চুমকি"নিশান্ত একবার ভাবল যে জিজ্ঞেস করবে আসল নামটা কি?তারপর ভাবল সময়দি একটু।নিশান্তোর মেয়েটার প্রতি কৌতুহল বেড়েই চলেছে প্রতি মুহূর্তে।ফরসা ছোট্ট প্রতিমার মত মুখ।টানা টানা চোখে গভীর বেদনা।সারা মুখে নিম্নমানের রঙ মাখানো তবু সে তার নিজের সুন্দরতা দিয়েই সেই মেক-আপের ত্রুটিটা ঢেকে ফেলেছে।গভীর ঘন এলোমেলো চুল তার কমোরটাকে সমানে ছুঁয়ে
চলেছে বারে বারে।অপূর্ব নারীর গঠন যুক্ত তার বাহু দুটো হাফ হাতা নীল ব্লাউজে আরো আকর্ষণীয় লাগছে।আর কোমরের বাঁকটা চুমকির ক্ষণে ক্ষণে নিশান্তোর বৃদ্ধ মনটাকে উতলা করছে।তবে সে মোটেই বৃদ্ধ না কিন্তু চুমকির কাছে সে বৃদ্ধাই।বয়স বড়োজোর ওর কুড়ি কি উনিশ হবে আর নিশান্তো সামনের মাসে বত্রিশ বছর বয়সে পা দিতে চলেছে।একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল নিশান্ত!ঠিক হচ্ছেনা চুমকির প্রতি আকর্ষিত হওয়া।"আপনার কিছু বলার নেই?"নিশান্ত জিজ্ঞেস করল নিস্তব্ধতা সহ্য করতে না পেরে।
YOU ARE READING
গণিকা
Short Storyচুমকি ভাগ্যচক্রে একজন দেহব্যবসায়ী হতে বাধ্য হয়েছে।একদিন তাদের কোঠায় চুমকির ছাত্রাবস্থার প্রিয় লেখক নিশান্ত ঘোষ এসে পৌঁছায় তার পরবর্তী লেখার জন্য তথ্য যোগার করতে... এরপর কি হল?তা জানতে হলে পড়তে হবে।