একটা নির্জন গলির মধ্যে সাবেকি ধরণের বাড়িটা একাকী ঘাস-লতাপাতার মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে।বাড়ির পিছনে একটা বড় এপার্টমেন্টে, আর সামনে ঘাসে ভরা একটা ছোট্ট গলি।এইখানেই শেষ গলিটা।গলির ওধারে আরো একটা জীর্ণ পুরাতন বাড়ির ধ্বংসাবশেষ পড়ে আছে।রুহিকা মনে মনে ভাবে নিশান্তো ঘোষ এইরকম একটা বাড়িতে থাকে?বাড়িটা রুহিকার কাছে নিশান্তোর থাকার অযোগ্য মনে হলেও এক মুহূর্তে রুহিকার সমস্ত মনটাকে গ্রাস করে ফেলেছে।নিশান্ত গেট খুলে রুহিকা প্রবেশ করতে বলল।দরজার কাছে গিয়ে নিশান্ত যখন চাবি খুলছিল তখন রুহিকার মন চলে যায় বাঁদিকের ছোট্ট জমিতে লাগানো নানা ফুলের চারার দিকে।
"আপনি এই ফুলগুলো লাগিয়েছেন?"
"ওই আরকি.. তবে এখন আমাদের মালিই দেখাশোনা করেন আসুন।"
ঘরে ঢুকে লাইট জ্বলতেই রুহিকার সামনে স্পষ্ট হয়ে ওঠে সাবেকি ধাঁচের বৈঠকখানা।সাবেকি ধাঁচের মাঝে চোখে পরে এইকালের কিছু জিনিসপত্র।দেখেই বোঝা যাচ্ছে বাড়িটা খুব পুরানো তবে বেশ যত্নে রাখা হয়েছে।
"বাহ!"
"হ্যাঁ ? কিছু বললেন?"
"আপনাদের এই বাড়ি কত বছরের পুরানো?"
"আমার ঠাকুরদার ছোটবেলায় তৈরি হয়েছে।"
"ও"
"বসুন এখানে"বলে নিশান্ত বৈঠকখানা থেকে অন্দরমহলে চলে গেল।রুহিকা ঘরের চারিদিকটা দেখছিল এলোমেলোভাবে অনেক বই ছড়ানো।একটা বই তুলে দেখতে লাগল রুহিকা।এই ছয়মাস আগেই রুহিকার বইয়ের সাথে কি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল।যদি তার জয়ের সাথে দেখা না হতো তাহলে হয়তো রুহিকা আজও আর পাঁচটা সাধারণ মেয়ের মতন থাকতে পারত।বাংলা সাহিত্য নিয়ে সে পড়াশুনা করতে চেয়েছিল সুযোগও পেয়েছিল কিন্তু হয়তো অন্যকিছুই ভেবে রেখেছিল ভগবান তার জন্য।এই কদর্য জগৎ-এ না আমাকে না বেচে জয় তাকে মারতে মারতে নয় মেরেই ফেলত বা ফুটপাতে ফেলে দিত কিন্তু এটা কেন করল তার সাথে?অঝোরে চোখের জল পরতে লাগল রুহিকার গাল বেয়ে।কতবার সে পালানোর চেষ্টা করেছে কিন্তু রুমা মার নজর এত কড়া যে কিছুতেই রেহাই পায়নি প্রতিবার রাক্ষসগুলো রুহিকা ধরে এনে বেঁধোরোপ মার মেরেছে।আজও সে ভাবে যদি কোনোভাবে এই নরক থেকে কিছুভাবে বেরোনো যায়।
YOU ARE READING
গণিকা
Short Storyচুমকি ভাগ্যচক্রে একজন দেহব্যবসায়ী হতে বাধ্য হয়েছে।একদিন তাদের কোঠায় চুমকির ছাত্রাবস্থার প্রিয় লেখক নিশান্ত ঘোষ এসে পৌঁছায় তার পরবর্তী লেখার জন্য তথ্য যোগার করতে... এরপর কি হল?তা জানতে হলে পড়তে হবে।